তানিয়া মোর্শেদ:
ব্রেকিং নিউজ দেখাচ্ছে বাংলাদেশের টিভি চ্যানেলে, সুপ্রীম কোর্টের সামনে থেকে গ্রীক দেবী থেমিসের মূর্তি অপসারণ করা হচ্ছে।
প্রথমেই প্রশ্ন জেগেছে, রাতের আঁধারে কেন? অবশ্য এটা তুচ্ছ ব্যাপার, রাত না দিন। যাদেরকে খুশী করতে এই উদ্যোগ, তাদের কি শুধু মূর্তিতেই আপত্তি? কেবল থেমিসের মূর্তিতেই? কোনো বিশেষ মসজিদের কাছাকাছি বলেই কি শুধু?
ইতিহাস বলে তাদের যে কোনো মূর্তিতেই আপত্তি, কেবল নারী মূর্তিতেই নয়। হাজার মসজিদের দেশে, আবার প্রায় হাজার খানেক ইসলামিক সেন্টার-মসজিদ বানানোর পর কি কোনো না কোনো মসজিদের চিপা দিয়েও কোনো না কোনো মূর্তি (ভাস্কর্য্য) দেখা যাবে না কি!
মুক্তিযুদ্ধের সব ভাস্কর্য ভেঙ্গে বা সরিয়ে নেয়ার দাবি উঠলে কী করবেন? বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য সরাতে বললে কী করবেন? থেমিসকে শাড়ী পরানোতে যাদের আপত্তি, তারা জানেন কি, ভাস্কর্য সরানোর দাবি তোলা মানুষদের শাড়ীতেই আপত্তি? এরপরে আপনাদের শাড়ী পরাতে আপত্তি জানালে কী করবেন? আরব দেশের নারীদের মতো পোশাক পরবেন? অবশ্য অনেকেই ইতিমধ্যে আরব দেশের পোশাক পরা শুরু করেছেন।
এদিকে প্রচণ্ড গরমে বিদ্যুৎ-পানি বন্ধ রাখার জন্য অনেকেই আরব দেশের মতো অবস্থায় আছেন মনে হচ্ছে। ইদানিং আমিও কিছুটা ষড়যন্ত্র তত্ত্বে বিশ্বাসী হওয়া শুরু করেছি মনে হচ্ছে! কী করবো বলেন, প্রায় সবাই যখন সব কিছুতেই ষড়যন্ত্র খুঁজে পান, শিক্ষা দেন বিশ্বাসী হতে, তখন আমি আর বাদ থাকি কেন!
প্রচণ্ড গরমে বিদ্যুৎ-পানি বন্ধ থাকায় ঢাকা শহরের মানুষকে ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে কি আরব দেশ হলে কেমন লাগবে তার? আপনারা যারা মদিনা সনদের পথিক, এসির শীতল বাতাসে ঘুমানোর আগে একবার হলেও নিজেকে প্রশ্ন করুন, তিরিশ লক্ষ শহীদ আর চার লক্ষ ধর্ষিতার বিনিময়ে কি মূর্তি/ভাস্কর্য ভাঙ্গা, শাড়ীকে প্রশ্নবিদ্ধ করা, বাংগালী সংস্কৃতিকে ধ্বংস করা এরকম সাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ চেয়েছিলেন?!