পুরুষতন্ত্রের ঘেরাটোপে নারীবাদ

মৌসুমী কাদের: আমার সারাজীবনের কাজের ইতিহাসে আলাদাভাবে ‘নারী’ যতোটা গুরুত্ব পেয়েছিল, ‘পুরুষ’ ততোটা কখনই পায়নি। কেন পায়নি সেই রাজনীতিটা অনেকেরই জানা।

আশির দশকের বাংলাদেশের কথা। তখন দাতা সংস্থাগুলো  নারী স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে চেয়ে ‘নারীর অধিকার এবং স্বার্থ রক্ষার’ উপর গুরুত্বারোপ করে নানারকম কর্মসূচি চাপিয়ে দিয়েছিল। ‘পিপলস পার্টিসিপেটরি প্রসেস’ এর ডিব্বা নিয়ে এনজিও কর্মীরা তখন গ্রামে গ্রামে ঘুরে ঘুরে নারীদের শেখাচ্ছে, ‘বেরিয়ে এসো ঘর থেকে’, ‘পুরুষের পাশাপাশি অর্থ উপার্জন করো’।

মৌসুমী কাদের

কিন্তু এটা আলাদা করে পুরুষদের শেখাতে হয়নি, ‘ঘরের কাজগুলো ভাগ করে নাও, রান্না করো, বাসন মাজো, ছেলেপুলে পালো, নইলে তোমাদের স্ত্রীদের বাইরে গিয়ে আয়-উপার্জনের সময় হবে কী করে ?’ তৃণমূল পুরুষেরা কেন এই কাজগুলো করবে না, সে নিয়ে জোর দেয়া হতো না। হালকা কথাবার্তা বলে ছেড়ে দেয়া হতো। পিতৃতন্ত্রকে চ্যালেঞ্জ করে ‘নারী-পুরুষের অসমতা’কে বোঝার চেষ্টা করা বা এ সম্পর্কিত ‘সকল রাজনীতি’,’ক্ষমতার সম্পর্ক’, ‘যৌন আবেদন’ ইত্যাদি বিষয়ের উপর গুরুত্ব দিয়ে পুরুষতন্ত্রের নিপীড়ন বিষয়ে ‘অল্প শিক্ষিত বা অশিক্ষিত’ পুরুষদের বোধগোম্য করে প্রশিক্ষণ দেয়ার চেষ্টা ছিল না।

‘জেন্ডার এনালিস্ট’ হিসেবে যখন নোরাডের সাথে কাজ করি, আমার জব ডেস্ক্রিপশনে লেখা ছিল সকল নারীভিত্তিক কর্মকাণ্ডের লিস্ট। পুরুষ উপযোগী বা তাদের শিক্ষিত করে তোলার চেষ্টায় করণীয় কিছু ছিল না। যদিও ‘জেন্ডার এর সংজ্ঞাটি’ যে নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য প্রযোজ্য সেটি তাদের জানা ছিল। বেশিরভাগ পুরুষই পারতপক্ষে এই আলোচনা এড়িয়ে চলতো, বা না বোঝার ভান করতো। তা সে নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত যে স্তরেরই হোক না কেন। সরকার, দাতা সংস্থা, উন্নয়ন সংস্থা, কোন প্রতিষ্ঠানই পিতৃতন্ত্রকে চ্যালেঞ্জ করে প্রোগ্রাম ডিজাইন করতো না। সেই থেকেই পুরুষ কেন নারীবাদী হতে চায় না সেই প্রশ্ন, সেই রাজনৈতিক চ্যলেঞ্জ নিয়ে জীবন পার করেছি, যা থেকে মূলত এই লেখা।    

একটা উদাহরণ দিয়ে শুরু করি। ত্বিষে’র বয়েস যখন ৮ মাস তখন ‘কেয়ার বাংলাদেশে’ খুব ভাল বেতনে একটা চাকরি পেয়েছিলাম। একমাসের ট্রেনিং করার জন্য যশোরে পাঠানো হলো। ট্রেনিং সেন্টারে বাচ্চা রাখার আলাদা কোনো ব্যবস্থা নেই। বাচ্চাটা তখন বুকের দুধ খায়। ১০/১১ বছর বয়েসী একটা মেয়ে যে নিজেই সাবালিকা নয় সে কিনা আমার ছেলের দেখাশুনা করে।  এক বাচ্চার কাছে আরেক বাচ্চা রেখে মনের ভেতর ভয়াবহ টেনশন নিয়ে সারাদিন ট্রেনিং করি। যখনই সময় পাই দৌড়ে ছুটে যাই ছেলেকে দুধ খাওয়াতে।

একদিন সকালে অনেক বমি করছে বাচ্চাটা। তারপরও আমাকে যেতে হবে। কোন রকমে মেয়েটার কাছে ডাম্প করে দিয়ে ছুটলাম। একদম কাঁটায় কাঁটায় ন’টায় পৌঁছুলাম। কিন্তু পুরুষ ম্যানেজারটি বললেন, ‘আপনি ৫ মিনিট লেট’। আমি বললাম, ‘বাচ্চাটা বমি করছিলো, তারপরও তো ঠিক ন’টায় এসেছি, লেট হয়নি তো’। উনি ভীষণ রেগে গিয়ে এমনভাবে তাকালেন যেন গিলে খেয়ে ফেলবেন। মূহুর্তেই মনে হলো, আমি চাকর, পুরুষের খেদমত করছি, ওর ইচ্ছেয় এবং নির্দেশে  চলছি। নারী হিসেবে আমার আলাদা কোনই আইডেন্টিটি নেই, এমনকি কথা বলার ক্ষমতাটাও নেই।

‘বাচ্চা বমি করছে এ দায় আমার’। এ ঘটনার পর থেকেই  এই পুরুষটি আমার উপর ভয়াবহ বিল্লা…যাই করি তাতেই ভুল। আর বাচ্চা তো না যেন একটা শত্রু এনেছি সংগে। এভাবে বেশীদিন যায়নি। লোকটি কিছুদিনের মধ্যেই চাকরি খেয়ে ফেললো। আর একদিনের মাথায় জরুরি টিকেট কেটে অসুস্থ বাচ্চাটাকে নিয়ে প্লেনে করে বাড়ি ফিরেছিলাম। সেই ট্রমা বিশ বছর পর এখনও তাড়া করে বেড়ায়; মামলা না করার জন্য, পত্রিকা বা অন্য কোথাও কোনরকম অভিযোগ না তোলার জন্য। 

শুনেছি কেয়ারে নাকি এখন জেন্ডার বিষয়ে ‘জিরো টলারেন্স’ জারি করা হয়েছে। খুব জানতে ইচ্ছে করে, যে সমস্ত পুরুষ ওই প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন, তারা নারীবাদ আসলেই বোঝেন কিনা। পুরষতন্ত্রের ঘেরাটোপে নারীবাদের সস মাখানো প্রকল্প অনেক তো হলো। একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে কিছু কি বদলেছে? নারীর শরীর বেয়ে দুধ গড়িয়ে পড়ার যে ব্যথা, সেটা কি পুরুষেরা টের পায়? পুরুষদের প্রতি কতগুলো মূল প্রশ্ন আমি সারাজীবন করে এসেছি:

১. পিতৃতন্ত্রের সকল সুযোগ-সুবিধা, ক্ষমতা-লোভ এসব থেকে ঊর্ধ্বে উঠে কোন পুরুষের পক্ষে সত্যিকার অর্থেই কি নারীবাদী হয়ে উঠা সম্ভব? আর কেনই বা তারা সেটি করতে চাইবে?

২. একটি অপেক্ষাকৃত দুর্বল গোষ্ঠির পক্ষে লড়াইয়ের জন্য নিজেদের ক্ষমতা কেন তারা বিসর্জন দেবে? এর জন্য যে রাজনৈতিক চেতনা, মানসিক সচেতনতা ও সক্রিয়তার প্রয়োজন, সেটি তারা কতটুকু বহন করতে চাইবে বা পারবে?

৩. তাদের অতি পুরুষালী ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ মূলত অত্যাচার দিয়ে মাখা, যা পূর্ণ মানুষ হিসেবে তাদের মানবিক শক্তি এবং মানসিক অভিব্যক্তিকে সীমিত করে। সেই সীমিত মূল্যবোধে দাঁড়িয়ে নারীবাদী হবার ইচ্ছায় তারা কতটা উদারতা প্রকাশ করতে পারবে?

৪. পুরুষ হিসেবে শারীরিক এবং মানসিক নিপীড়ন হজম করার অভিজ্ঞতাও তাদের নেই। নারীবাদী আন্দোলনকে সমর্থন করার জন্য একজন পুরুষ সামাজিক বা রাজনৈতিক সকল সুযোগ-সুবিধা, বরাদ্দ বা সহিংসতাগুলোকে চ্যালেঞ্জ করবার মানসিকতা কতটুকু রাখে? তাদের বোধ এবং কাজ যদি এর প্রতিফলন ঘটাতো, তাহলে নারীদের প্রতিনিয়ত বলতে হতো না যে ‘তারা যৌন ইচ্ছা পূরণের খেলনা নয়’।

শুধুমাত্র এই একটি চিন্তায়ই যদি পুরুষ বিপ্লব ঘটাতে পারতো, তাহলে আমার ধারণা পৃথিবীতে নারীবাদী আন্দোলন সফল হতোই। নারীবাদ প্রতিষ্ঠা মূলত একটি রাজনৈতিক আন্দোলন, যা নারীর সাথে সাথে পুরুষের অংশগ্রহণ সমানভাবে নিশ্চিত করতে চায়। নারীবাদ বোঝার জন্যে অনেক তাত্বিক জ্ঞান থাকতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। কিন্তু এটুকু বুঝতে হবে যে, যে সমস্ত পুরুষ মনে করেন যে নারীকে পণ্য হিসেবে ব্যবহার করা, রাস্তাঘাটে অশালীন আচরণ করা একটি স্বাভাবিক বিষয়, সে সমস্ত পুরুষ কোনভাবেই নারীবাদী হতে পারবেন না।

অন্যদিকে নারীবাদ প্রেক্ষাপটে সামাজিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন ছাড়া শ্রেণী হিসেবে ‘নারী’ কখনো পুরুষের পাশাপাশি সমান যোগ্যতা পেতে পারবে না। একারণে শ্রেণী বৈষম্য (‘শ্রেণী বিভেদ’/‘শ্রেণী বিভাজন’ যার ইংরেজি অর্থ Social Stratification) না বুঝলে নারীবাদ বোঝা সম্ভব নয়। শিক্ষা এবং সচেতনতা গড়ে তোলার জন্য প্রাথমিক-মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক প্রতিটি পর্যায়েই পাঠ্য বইয়ে নারী-পুরুষ সমতা বিষয়ক লেখা থাকা যেখানে বাধ্যতামূলক হওয়া উচিত, সেখানে কিনা আমাদের দেশে শিশুকাল থেকেই ‘অ তে অজু’  অথবা ‘ও তে ওড়না চাই’ এসব ধর্মীয় পক্ষপাতদুষ্ট ‘কু-শিক্ষা’ শেখানোর ব্যবস্থা জারি হচ্ছে।

তাহলে ‘পুরুষ’ কিভাবে ‘নারীবাদ’ শিখবে? সম্প্রতি গাইবান্ধার কুন্দের পাড়ায় গণ উন্নয়ন একাডেমী হাইস্কুল নামে মেয়েদের একটি স্কুল পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে, যেখানে প্রান্তিক পরিবারের মেয়েরা পড়াশোনা করতো। এই যদি নারীর অগ্রগতির পেছনে পুরুষের রাজনৈতিক অবস্থান ও অবদান হয়, তাহলে এই সমাজ দিন দিন কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? শিক্ষাব্যবস্থা ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় বিকল্প হিসেবে ইদানীং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো আগের চেয়ে অনেক বেশী প্রতিক্রিয়াশীল এবং শক্তিশালী হয়ে উঠতে দেখছি।  জনসচেতনতা গড়ে তোলার  জন্য মেয়েরা আজকাল খোলামেলাভাবে লিখছে। শত বাধা পেরিয়ে, ঝুঁকি নিয়েই পিতৃতন্ত্রের দিকে আঙ্গুল তুলে  কথা বলছে, যা কয়েক বছর আগেও এতোটা দেখা যায়নি।

কিন্তু আবারও বলি, এই আন্দোলন তো শুধু নারীর নয়। পুরুষদের সমপরিমাণ দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে আসা ছাড়া যে  আর কোন বিকল্প নেই, সেটি আপামর সমাজের বুঝতে হবে। নারীবাদ নিয়ে পুরুষদের যে এলার্জি, তার বেশীটাই ক্ষমতা ভাগাভাগির ভয় থেকে হয়। তারা চারপাশের বিশ্বকে সূক্ষ্ম সমালোচনার দৃষ্টিতে দেখতে এবং ক্ষমতা, অবস্থা ও অবস্থানকে প্রশ্ন করতে ভয় পায়।  তারা পিতৃতন্ত্রকে ছেড়ে দিতে ভয় পায়। এসবই হারানোর ভয়।

রাজনৈতিক প্রভাবশালী মতাদর্শ নিয়ে প্রশ্ন করলে পুরুষ অস্বস্তি বোধ করে।  জামাত-বা ইসলামিক আদর্শ নিয়ে যারা রাজনীতি করছেন তাদেরকে নারীবাদ নিয়ে প্রশ্ন করলে এমন সব উত্তর পাওয়া যায় যাতে স্বয়ং প্রশ্নকারীর লজ্জা হয়। এখন, পুরুষ যদি নারীবাদী আদর্শে আদর্শায়িত না হতে চায় বা পিতৃতন্ত্রে ছাড় না দেয়, তবে নারীদের কি পূর্ণ অধিকার আছে না ‘পুরুষদের ঘৃণা করার’? বা ‘যৌনসম্পর্কে লিপ্ত না হবার’ ইচ্ছা প্রকাশ করার?

পুরষদের একচেটিয়া দখলদারিত্ব এবং নারীদের ‘সেক্স অবজেক্ট’ হিসেবে ব্যবহারের বিষয়টি শত শত বছর ধরে অগণিত নারীদের ট্রমার একটি উৎস বা কারণ হয়ে ছিল এবং এখনও আছে। কাজেই কোন নারী যদি এধরণের ট্রমার শিকার হয় এবং পুরুষের সঙ্গ ত্যাগ করে, বা পুরুষ সহিংসতাকে ও সমাজ ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করে, সেসব নারীদের নিয়ে হাসি-তামাশা, সামাজিক অবহেলা বা আক্রমণ করার কিছু নেই।

অনেক পুরুষকেই বলতে শোনা যায় যে, ‘যেসব মেয়েদের রাগ বেশি তাদের বেশিরভাগই যৌন-সম্পর্কে যথেষ্ট তৃপ্ত নয়।‘ এসব মন্তব্য আসলে পুরুষদের একধরনের ধর্ষণ-সংস্কৃতি ছাড়া আর কিছু নয়। ‘ধর্ষণযোগ্য নারীরাই কেবল বাস্তব অর্থে নারী’ অথবা ‘পুরষদের সংগে সম্পর্কের সূত্র ধরেই কেবল নারীরা টিকে আছে’, এসমস্ত ধারণাগুলো সবই নারীবাদ বিরোধী পিতৃতন্ত্রের ষড়যন্ত্র।  মানুষ হিসেবে নারীর নিজস্ব মূল্য রয়েছে। ‘যৌনসঙ্গম বা নিপীড়নের’ শিকার না হয়েও নূন্যতম চাহিদা মিটানোর অধিকার তাদের আছে।

নারীবাদ নারী-পুরুষের সেই সম-অধিকারের কথাই বলে। নারীবাদীরা নারীদের নগ্ন শরীর ঘৃণা করে না, বা পণ্য হিসেবে দেখে না, কারণ তারা জানে এটি মেয়েদের শরীরের স্বাভাবিক অংশ। প্রতিদিন হাঁটাচলা করার মতোই তারা এই শরীর বহন করে। নারীবাদ পুরুষের মনোরঞ্জন বা কামনার ক্ষুদা নিবারণের উদ্দেশ্যে নারীর এই শরীরের ব্যবহারকে প্রশ্রয় দেয় না। আমাদের সমাজ এবং সংস্কৃতি ‘সেক্স বা  লিঙ্গ’ এবং ‘সেক্সুয়েলিটি বা যৌন আবেদন’ এই দুটি শব্দকে এক করে গুলিয়ে ফেলে। কিন্তু এদুটো এক শব্দ নয়।

নারীর শরীরকে যখন পণ্য হিসেবে উপস্থাপন করা হয়, তখন আমরা ‘যৌন আবেদন’ কী, তা শিখি। কিন্তু এর পেছনে নারীর বেদনাটি দেখি না। ‘নারীবাদকে’ জনপ্রিয় করার জন্য আরো একটি প্রবণতা দেখা যায় নারীর কিছু বাহ্যিক আচরণে। যেমন পুরুষের মতন চুল কাটা, পোশাক পরা, সিগারেট খাওয়া ইত্যাদি। এই প্রতিবাদটির পেছনে যেহেতু পিতৃতন্ত্রকে চ্যালেঞ্জ করার একটা দাবি আছে সঙ্গত কারণেই এটি সাহসী পদক্ষেপ। প্রতিবাদ যত বেশি হবে পুরুষ তত ধাতস্থ হবে। কিন্তু একই সংগে মনে রাখতে হবে যে, ‘জনপ্রিয়তার’ চেয়ে ‘গ্রহণযোগ্যতা’ অনেক বেশি জরুরি, যা মূল ভিত তৈরিতে অবদান রাখে।

‘পুরষের’ অনুকরণের চেয়ে নারীর নিজস্ব আরাম (ছোট চুল), শারীরিক কাঠামো অনুযায়ী পোশাক পরা (শার্ট-প্যান্ট) ইত্যাদি জরুরি। পাশ্চাত্যে নারীরা শার্ট-প্যান্ট পরে যার কাটিং তাদের দেহপযোগী করে তৈরি করা হয়। এ নিয়ে কালচারাল কোন বিভেদ নেই। আবার  নারীবাদী হওয়ার অর্থ এই নয় যে কাউকে বিশেষ ব্যক্তিত্বের অধিকারী হতে হবে, বিশেষ পোশাক, বিশেষ সাজ এগুলো কোনটাই জরুরি নয়। তবে নারী বা পুরুষ কেউ কাউকে ‘ভোগের পণ্য’ হিসেবে ব্যবহার করবে না সে বিষয়টি নিশ্চিত করা অনেক বেশি জরুরি।   

প্রকৃতি কখনও একথা বলেনি যে ‘পুরুষ নারীর চেয়ে উন্নত’ বা ‘নারী পুরুষের চেয়ে উন্নত’। তাহলে এতোকাল ধরে পুরুষের এই অন্ধত্ব মেনে নেয়া চলবে কেন? নারীবাদ ‘নারীর একক বা একচ্ছত্র বিষয়’ হবার কথা নয়; এটি একটি সুষম সমাজ পাবার জন্যে সামাজিক আদর্শের অংশ হবার কথা বলে যা নারী পুরুষ উভয়ের দাবির অংশ হতে হবে। তাই পুরুষের উচিত জগতের সকল লৈঙ্গিক বৈষম্যের অবসান ঘটিয়ে নারীর হাত ধরা এবং নারীবাদী হওয়া।    

৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭ / টরন্টো, কানাডা

শেয়ার করুন:
Copy Protected by Chetan's WP-Copyprotect.