নাস্তিকের ধর্মকথা: সাজু খাদেমকে নিয়ে ফেসবুকসহ অনলাইন দুনিয়ায় খুব তোলপাড় হচ্ছে। উইমেন চ্যাপ্টারে, জাগরণীয়ায়ও অনেকগুলো লেখা এসেছে। তর্ক-বিতর্কও চলছে। সাজু খাদেমের কৌতুকটি খুব আপত্তিকর- কোন সন্দেহ নেই, অবশ্যই এর প্রতিবাদ হওয়া দরকার; কিন্তু এর প্রতিবাদে যেসমস্ত লেখা চোখে আসছে- সেগুলোতেও কেমন জানি বড়সড় সমস্যা চোখে পড়ছে এবং সে কারণেই দু চারটি কথা বলার তাগিদ বোধ করছি।
“ভারবাল পর্ন সাইট “সাজু খাদেম”” (https://womenchapter.com/views/18013) শিরোনামে উইমেন চ্যাপ্টারে নাহরীন খানের লেখাটি দিয়েই শুরু করা যাক। সাজু খাদেমের ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি দেখে তিনি খুব বিরক্ত ও ক্ষিপ্ত। দ্বিতীয় বাক্য থেকেই তিনি সেই প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করা শুরু করেছেন। সাজু খাদেমের প্রশ্ন করাকে (এবং পুরো জোকটিকেও হয়তো) তিনি নোংরা, কুরুচিপূর্ণ ও আপত্তিকর বলেছেন। আপত্তিকর তো বটেই- কিন্তু আপত্তিকর কোন জায়গায়? এই প্রশ্ন উত্থাপন করাই বা এই প্রসঙ্গে কৌতুক করাটাই কুরুচিপূর্ণ ও নোংরা, সে কারণেই কি এটা আপত্তিকর?
এই নোংরা, কুরুচিপূর্ণ, অশ্লীল, অসাংস্কৃতিক বা অপসাংস্কৃতিক- এরকম শব্দগুলোর ব্যবহার দেখলে আমি আসলে একটু বোঝার চেষ্টা করি, এসবের উৎস কী? যাই হোক, এ ব্যাপারে একটু বিস্তারিত আলাপের প্রয়োজন।
বিশেষ করে- সামাজিক ট্যাবু বা সংস্কার নিয়েও কিছু কথা বলা দরকার, যা এই লেখার পরবর্তী অংশে কিছুটা করার চেষ্টা করবো। আলোচ্য পোস্টের একটি জায়গায় এসে আক্ষরিক অর্থেই থমকে দাঁড়ালাম। লেখক সাজু খাদেমের ব্যক্তিগত সম্পর্ক টেনে এনে মনের রাগ ঝাড়তেও ছাড়েননি। সাজু খাদেম ড এনামুল হক ও লাকী ইনামের মেয়ের স্বামী। এই তথ্যটি এই লেখায় খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়েছে এবং এক পর্যায়ে তার স্ত্রী হৃদি হককে পর্যন্ত সম্বোধন করে প্রশ্ন ছুড়ে দেয়া হয়েছে! সাজু খাদেমের আচরণটি যেরকম সেক্সিস্ট- সেটির জবাব দিতে গিয়ে এই লেখক একই রকম সেক্সিস্ট আচরণই করলেন বলে মনে হলো।
কাকলী তালুকদার উইমেনচ্যাপ্টারে “বিকৃত সাজু খাদেম ও লুঙ্গি উঠানো লোকটি” (https://womenchapter.com/views/18020) শিরোনামের লেখাটিতে বিকৃত কিছু লোক যারা মেয়েদেরকে নিজেদের পুরুষাঙ্গ দেখিয়ে আনন্দলাভ করে- তাদের সাথে সাজু খাদেমের আচরণের মিল দেখিয়েছেন। যদিও এই মিলের জায়গাটি তিনি পরিস্কার করেননি এবং লুঙ্গি উচানো লোকের বিকৃতির ব্যাপারে প্রায় সকলেই একমত হয়েও তাদের একটা বড় অংশই সাজু খাদেমের এরকম আদি রসাত্মক কৌতুকে কোন সমস্যা দেখছে না; আমিও নারীর প্রতি মনোভাব ও নারীকে দেখার দৃষ্টিভঙ্গির জায়গাটিতে সাজু খাদেম ও তাকে সমর্থন করা ব্যক্তিবর্গের সাথে ঐ লুঙ্গি উচানো বিকৃত ব্যক্তির মিল খুজে পাই। এরপরেও এই লেখাটির একটি জায়গায় আপত্তি না করে পারছি না।
সাজু খাদেমকে পায়ের স্যান্ডেল খুলে ছুঁড়ে মারার প্রত্যাশার সাথে সমর্থন রেখেই বলতে পারি- উপস্থিত চার নারীর কেউই সেকাজটি করতে না পারার আলোচনায় রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের প্রসঙ্গ টেনে আনা অপ্রয়োজনীয় মনে হয়েছে। রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের দেশে এরকম কৌতুক বন্ধে নারীদের স্যান্ডেল ছুড়ে মারাই স্বাভাবিক হতো- এমনটা বলার মাধ্যমে লেখক কি বুঝাইতে চাইলেন যে, ইসলাম জনসম্মুখে যৌনতা নিয়ে, যৌনাঙ্গ নিয়ে আলোচনা, রসিকতা অনুমোদন করে না- ফলে এমন উপস্থাপককে জুতাপেটা হওয়ার কথা?
লেখকের এ সংক্রান্ত আলোচনাটি বাস্তবে ধোঁয়াশাপূর্ণ, কেননা পরের বাক্যেই তিনি বলেছেন- “নাকি রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বলেই নারীদেরকে যেকোন প্রশ্ন করা যায়- সেটা খুব কুরুচিপূর্ণ হলেও?” ধারণা করছি- লেখক রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের ব্যাপারে বিরক্ত, কিন্তু ওনার এমন উপস্থাপন বাস্তবে- রাষ্ট্রধর্ম ইসলামকে চ্যালেঞ্জ করার চাইতেও- রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের যথাযথ কার্যকর না হওয়ার কুফল হিসেবে সাজু খাদেম এর এমন “কুরুচিপূর্ণ” (এখানেও কুরুচিপূর্ণ) প্রশ্ন/ কৌতুক করা সম্ভবপর হচ্ছে- এরকম ইমপ্রেশনও পাওয়া যায়। সবিশেষ ব্যাখ্যার প্রয়োজন নেই নিশ্চয় যে, সাজু খাদেমদের মত ক্ষত’র হাত থেকে রেহাই পেতে রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের দ্বারস্থ হতে হলে- সেটার চাইতে ভয়ানক আর কিছু হতে পারে না।
তৃতীয় লেখাটি ব্লগার Arifur Rahman এর “ভাড়ামির প্রতিবাদ ও মিডিয়াগোষ্ঠীর গাত্রদাহ” (https://womenchapter.com/views/18025)। এই লেখাটির তিনটি বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইঃ
এক/ লেখক পুরুষবাদী তথা নারীবাদীদের প্রতি ঘৃণাপোষণকারী নাস্তিকদেরকে নাস্তিক সমাজের কলংক বলেছেন, নিজে নাস্তিক হিসেবে ঐ সমস্ত নাস্তিকদের আচরণে লজ্জিত হয়েছেন। আমার মনে হয়েছে, এই লজ্জা অকারণেই। কেননা, নাস্তিকতা মানে কেবল ইশ্বরে অবিশ্বাস। বাস, এতটুকুই। এটি আর কোন কিছুর নিশ্চয়তা দেয় না। একজন নাস্তিক মানেই তার পুরুষবাদী বা পুরুষতান্ত্রিক না হওয়া না, নারীবাদী তো হওয়া না-ইইই … ফলে, কোন নাস্তিক যদি পুরুষতান্ত্রিক হয়- সে নাস্তিকগোষ্ঠীর কলংক নয়। ফ্রয়েড, রিচার্ড ডকিন্স, স্যাম হ্যারিস থেকে মেলা রথী মহারথীদের পাবেন- তারা প্রচন্ড পুরুষতান্ত্রিক। ফলে, পুরুষবাদী নাস্তিকদের কাজকারবারে আরেকজন নাস্তিকের লজ্জিত হওয়ার কিছু নেই।
দুই/ লেখক তীব্র পুরুষতান্ত্রিকতার পেছনে ইসলামকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করেছেন। কিন্তু আমি মনে করি, কেবল ইসলাম নয়- ধর্ম মাত্রই পুরুষতান্ত্রিক। সমস্ত ধর্মই পুরুষতান্ত্রিকতার ধারক বাহক। বাংলাদেশে বা যেকোন মুসলিম প্রধান দেশে পুরুষতান্ত্রিকতার কদর্যতম রূপ দেখতে পারছেন- তার কারণ এইসব দেশ ধর্মকে বেশি আকড়ে ধরে আছে। ভারতের যেসব অঞ্চল হিন্দু ধর্মকে আকড়ে আছে- সেসবেও ভয়ানক পুরুষতান্ত্রিকতা পাবেন। ইউরোপে কিছুটা (তুলনামূলক অর্থে) নারী স্বাধীনতা দেখতে পান- সেটি ইহুদী বা খৃস্টধর্মের অবদান বা বিশেষত্ব নয়- সেটা সেখানকার মানুষের ধর্মকে কম আকড়ে ধরা, ধর্ম থেকে দূরে সরা, রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক জীবনে ধর্মকে অস্বীকার করে ব্যক্তিগত বিশ্বাসের জায়গায় নিয়ে যাওয়া- প্রভৃতির প্রভাব। এককালে তুরস্কে- আফগানিস্তানে এভাবেই নারীকে বাইরে আনা সম্ভব হয়েছিল- তুলনামূলক অর্থে পোশাক- শিক্ষা- কাজ এসবের স্বাধীনতা পেয়েছিল। আজও কাজাখাস্তান- তাজিকিস্তান- কিরগিস্তান প্রভৃতি মুসলিম প্রধান দেশে আপেক্ষিক অর্থে নারীদের স্বাধীনতার পেছনেও রাষ্ট্রীয়- সামাজিক জীবন থেকে ধর্মকে দূরে রাখার প্রভাবটাই মূল …
তিন/ লেখকের কনক্লুশন নিয়ে আপত্তি করি, যেখানে তিনি যৌনতা নিয়ে সাজু খাদেমের স্থূল রস বিষয়ে আপত্তি করেছেন। লেখকের লেখা থেকে কপি করছি: //যৌনতা নিয়ে রস করতে হলে তা অত্যন্ত সুক্ষ হতে হয়। যৌনতা এখানে প্রচ্ছন্ন কনটেক্স, বাকিটা উইট এবং স্থাপন। নারীদের সামনে, নারীদের উদ্দেশ্য করে এই ধরনের গাধামি আর যাই হৌক, রসিকতা নয়।//– অর্থাৎ সাজু খাদেমের রসে সূক্ষ্মতা নেই, উইট নেই, ফলে এটি গাধামি – মোটেও রসিকতা নয়। যেনবা, নারীদের সামনে – নারীদের উদ্দেশ্য করে রসিকতা করা যাবে, গাধামি করা যাবে না! এহেন বক্তব্যের সাথে একমত হওয়ার যুক্তিসঙ্গত কারণ পাচ্ছি না।
এই প্রসঙ্গে শেষ লেখাটি Farzana Kabir Khan স্নিগ্ধার। জাগরণীয়াতে প্রকাশিত “স্তন আর মায়ের দুধের পার্থক্যটা বুঝুন” (http://bangla.jagoroniya.com/mass-media/5203/)। লেখাটির ভিতরের বক্তব্যের সাথে দ্বিমত নেই, কিন্তু শিরোনামটি এবং স্নিগ্ধার আগের ফেসবুক স্ট্যাটাস নিয়ে আমার কিছু বলার আছে।
স্ট্যাটাসটি কপি করি: // এই “বাপচোদ”, “ভাইচোদ”, “চাচাচোদ” বলদটা জীবনে মায়ের দুধ তো খায়ই নাই, স্তন কাকে বলে তাও জানে না।// কেবল স্নিগ্ধাই নয়, আরো অনেককেই- স্তনকে ‘দুধ’ বলা নিয়ে আপত্তি করতে দেখছি এবং অনেকের কাছেই সাজু খাদেমকে নিয়ে আপত্তির মূল জায়গাও স্তনের বদলে এই ‘দুধ’ বলা! স্বাভাবিকভাবেই এমন সমালোচনাকেও সঠিক মনে করতে পারছি না।
আমাদের মিডলক্লাসের শুনতে যেমনই লাগুক- স্তন শব্দটি কেতাবি শব্দ, এবং প্রাত্যহিক জীবনে কম ব্যবহৃত শব্দ। নারীদের এই অঙ্গটিকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দুদু বলা হয়- গ্রামে গঞ্জে একে দুধ, মাই বলার চলও আছে। বন্ধু বান্ধবদের মাঝে, কিংবা প্রেমিক- প্রেমিকারা বা স্বামিস্ত্রী নিজেদের আলাপে একে দুদু বা যে নামেই অভিহিত করুক- সাধারণত মিডল ক্লাস জনসম্মুখে সেটি বলতে লজ্জা পায় বলেই- কঠিন শব্দ স্তন, কিংবা ইংরেজিতে ব্রেস্ট কিংবা অনেক সময় বুক বলে থাকে।
স্তন শব্দটা যেহেতু প্রাত্যহিক ব্যবহৃত দুদু, মাই – এরকম শব্দের থেকে রেহাই দেয়ার্থে ব্যবহৃত- সেহেতু বুঝতে হবে যে- দুদু, দুধ, মাই শব্দের প্রতি এলার্জীও আছে আমাদের এই মিডল ক্লাসের। একটু ভালো করে চিন্তা করলে বুঝতে পারবো, এই এলার্জী বা অস্বস্তি বাস্তবে কেবল শব্দের প্রতি নয়- ঐ অঙ্গের প্রতিই। এখানে বুঝতে হবে, এই দুদু বা দুধ- তথা নারীর স্তন ও স্তন্য, এটা কেবল মায়ের থাকে না, এ কেবল সন্তানের খাদ্যের যোগানদাতাই নয়, নারীর স্তন একটি যৌন অঙ্গও এবং গ্লাসে ঢেলে গরু-ছাগলের দুধ খাওয়ার মত করে মাতৃদুগ্ধ পান করার চল নেই, এটি পানের ক্ষেত্রে স্তন বা দুদু মুখে দেয়ার আবশ্যকয়ীতা রয়েছে।
সরাসরি এভাবে বলছি, কেননা স্তনকে দুদু বা দুধ কেন বলা হয়- সেটা বোঝা যাবে হয়তো। বাচ্চাকালে- বাচ্চাকে যখন স্তন্য পান করানো হয়- তখন তাকে ‘দুদু’ খাওয়ানোর কথাই বলা হয়। পানীয়- তরলটি তার পেটে যায় ঠিকই- কিন্তু অঙ্গটিও তার খাবারের অংশ, ফলে বাচ্চা যখন দুদু খেতে চায়- সে একই সাথে পানীয় তথা দুধ যেমন খায়, অঙ্গ- স্তনও তাকে মুখে পুরতে হয়। সে জায়গা থেকে তার সামনে পানীয় ও অঙ্গ একাকার হয়েই থাকে। ধীরে ধীরে যখন বড় হয়- তখন দুদু কেবলই হয়ে যায়- অঙ্গ বিশেষ।
গ্রামে গঞ্জে- সেটি দুদু না, দুধ। ফলে, সেখানে এই দুধ শব্দটি দুটি অর্থই ধারণ করে। আমাদের মিডল ক্লাসের যেমনই লাগুক, আমাদের মিডল ক্লাস সেটা নিয়ে যত ঠাট্টা মশকরাই করুক- বাংলাদেশের একটি বড় অংশের মানুষের কাছে- এই অঙ্গটির নাম দুধ। আবার, পানীয়ের নামও দুধ। গ্রামে গঞ্জে, মা যেমন বাচ্চাকে দুধ খাওয়ায়, লোকজন যেমন গরুর দুধ খায়- তেমনি ভালোবাসায় যৌনতায় অংশ নেয়া অঙ্গটিও তাদের কাছে দুধ, এমনকি- নারীজনিত সমস্যার ক্ষেত্রেও ডাক্তারকে গিয়ে বলে – দুধে অনেক ব্যাথা, দুধে একটা শক্ত মতন কি জানি হইছে … ইত্যাদি (এইসব নিয়ে আমাদের মিডলক্লাস ডাক্তারদের মশকরাসূচক লেখাও চোখে এসেছে) …
সাজু খাদেমের উপস্থাপনের সমস্যাটি তাই মোটেও স্তনকে দুধ বলা নয়, বরং এই যৌনাঙ্গ ও যৌনাঙ্গের সাথে সম্পর্কিত বস্ত্রকে কেন্দ্র করে পুরুষদের ফান্টাসি, সমাজে উপস্থিত ট্যাবুর কারণে যৌনাঙ্গ- যৌনক্রিয়া নিয়ে যে অস্বস্তি, এবং নারীকে যৌন অবজেক্ট হিসেবে দেখার পুরুষতান্ত্রিক আয়োজনে- নারীর সামনে এ সমস্ত যৌন কেন্দ্রিক কথা, প্রশ্ন বা কৌতুকের মাধ্যমে নারীকে অস্বস্তিতে ফেলে আনন্দলাভ করা – এসবে। এগুলোকে বলা হচ্ছে sexist আচরণ। কেউ কেউ স্তনের বদলে দুধ বলায় আপত্তি দেখাতে গিয়ে বলছেন- অন্যসব ডার্টি জোকেও তাদের আপত্তি নেই। আর, সে কারণেই এমন প্রতিবাদ দেখে একটু আঁতকে উঠি।
কিভাবে তারা অস্বীকার করেন যে, যাবতীয় বা অধিকাংশ ডার্টি জোক বা আদি রসাত্মক কৌতুকই আচরণের দিক দিয়ে সেক্সিস্ট, সবই নারীর প্রতি অবমাননাকর। তা যতই সূক্ষ্ম হোক, আর স্থূল হোক- যতই উইট থাকুক বা না থাকুক।
এ প্রসঙ্গে আরেকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা খুব জরুরি। যৌনতাকে কেন্দ্র করে ট্যাবু বা সংস্কার যতদিন আছে, ততদিন নারীর প্রতি এরকম সেক্সিস্ট আচরণ চলবে। সে জায়গা থেকেই, কেবল ‘অশ্লীল’, ‘কুরুচিপূর্ণ’, ‘অপসংস্কৃতি’ এসব শব্দ ব্যবহারের উৎস জানতে চাচ্ছিলাম। যৌনাঙ্গ বা যৌনতাকেন্দ্রিক শব্দ বা আলোচনামাত্রই অশ্লীল, কুরুচিপূর্ণ- এরকম ট্যাবু ও অস্বস্তি যতদিন থাকবে- পুরুষরা সেই সুযোগ নিবেই। যৌনাঙ্গ মানব শরীরের স্রেফ অঙ্গ মাত্র, যৌনতা যেকোন যৌনপ্রাণীর খুব স্বাভাবিক ও প্রাকৃতিক প্রবণতা। এগুলো নিষিদ্ধ, অপবিত্র কোন জিনিস নয়, ক্রিয়া নয়। এটা আমাদের সবার আগে বুঝতে হবে। এখানে বিস্তারিত আলাপের সুযোগ নেই, আগ্রহী পাঠকেরা আমার পুরাতন একটি লেখা পড়ে দেখতে পারেন (http://www.somewhereinblog.net/…/nastikerdharmakat…/28780534),
সবশেষে একটি কথাই বলবো- ট্যাবু, সংস্কার এবং এ থেকে উদ্ভুত অস্বস্তি দূরে সরিয়ে রাখলেই কেবল পুরুষের সেই সেক্সিস্ট আচরণের স্বরূপ পরিস্কার হতে পারে এবং তাৎক্ষণিক প্রতিবাদের রসদ হাতে আসা সম্ভবপর হতে পারে।