একজন সাজু খাদেম ও বিকৃত রুচির আমরা

ইমরান হোসেন: বন্ধু মহলে দেখেছি যে ছেলেটি সবচেয়ে বেশি লোফার সেই সবচেয়ে জনপ্রিয়। মেয়েদের অঙ্গ প্রতঙ্গ নিয়ে যে সবচেয়ে বাজে কথা বলতে পারে, সেই বড় হিরো।

ওদের আবার বোনে ঠাসা পরিবার। অথচ আমি ক্যাবলা কারন মেয়েদের ব্যাপারে তেমন আগ্রহ দেখাইনি কোনোদিন। মা পেটে বোন ধরেন নি। বোনের আশায় যে তৃতীয় সন্তান নিয়েছেন, সে আমি।

ইমরান হোসেন

মা বলেছেন, ‘পথে যদি আমার সমবয়সী বা আমার চেয়ে বয়সে বড় কোনো মহিলা দেখ, ভাববে তোমার মা। যদি আমার চেয়ে ছোট দেখ তবে ভাববে তোমার বড় বোন। আর তোমার বয়সী বা ছোট কোনো মেয়ে দেখলে ছোট বোন মনে করবে।’ মা আরো বলেছেন, ‘তোমার চোখের পাতা অনেকটা দরজার মত। খারাপ কিছু দেখলে, সেটা লাগিয়ে দিবে। তবে অন্যায় দেখলে প্রতিবাদ করবে।’

অথচ আমার মা নিরক্ষর একজন মানুষ। জানি সাজু খাদেম কারো ছেলে, ভাই বা স্বামী। ব্রা মেয়েদের পোষাক এটা তো প্রাইমারী স্কুলের ছেলেটিও জানে। সাজু খাদেমও জানেন, তবে বিকৃত অভিরুচি থেকেই বলেছেন, ‘বরিশালে দুধের উপর কি পরে?’ কিভাবে সম্ভব, এমন প্রশ্ন?

দোষটা শুধু সাজু খাদেমের নয়, আমাদের। আমরাই জেনেশুনে চরিত্র নামক ব্যাপারটিকে ধুয়ে খেয়ে ফেলেছি। একজন মেয়েকে শুধু একটি সেক্সডল হিসেবে ট্রিট করেছি।

আমার জানামতে শুধু তাসলিমা নাসরিনই প্রকাশ করেছেন ইনচেস্টের শিকার হয়ে। হয়তো প্রতিদিন, অনেক মেয়েই তার মামা, চাচার দ্বারা নিগ্রহের শিকার হয়। কিন্তু এমন সমাজ সেটা প্রকাশ করলে সবার আগে মেয়েটিই দোষী সাব্যস্ত হয়। সাজু খাদেমরা তাই সেলিব্রিটির তকমা নিয়ে বেঁচে যান।

সোচ্চার হোন প্রতিটি নারী। ঝেঁটিয়ে বিদায় করুন এমন সাজু খাদেমরূপী মানুষকে, পুরুষকে। কথায় কথায় যারা মেয়েদের স্পর্শকাতর অঙ্গ নিয়ে উপমা দেন, তার হাতে কোনো নারীই নিরাপদ নন। এমনকি তার নিজের মেয়েও হয়তো নয়।

নারী আপনার জন্য আপনি জাগুন, আপনার জন্য আপনি প্রতিবাদী হোন। কিছু সত্যিকারের মানুষ আজো আছেন যারা আপনাকে মানুষই মনে করেন, নারী নয়।

আপনার নিরাপত্তার নায়ক হোন আপনি। জয়তু কন্যা, প্রেমিকা, অর্ধাঙ্গিনী, মা।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ।

শেয়ার করুন: