আমার #MeToo’র একমাস

আলফা আরজু:

গত মাসের ১৪ তারিখে আমি আমার #MeToo শেয়ার করেছিলাম ফেইসবুকে। তারপর তা ৯০০ জন মানুষ পড়েছেন। আর দেড়শ’র মতো মানুষ তাদের নিজেদের timeline’এ শেয়ার করেছেন।

কারণ, সবাই ‘যৌন নিপীড়ক’ নন অথবা ‘যৌন নিপীড়ক’কে মদদ দেন না, আস্কারা দেন না, পালেন না।

এর পরবর্তী ঘটনা স্বরূপ, যৌন নিপীড়কের স্ত্রী আমার লেখা #Metoo’র বেশ কিছুদিন পর – খুব গুছিয়ে ও বেশ কিছু স্ক্রিনশট দিয়ে – একটা পোস্ট শেয়ার করে আমার শেয়ার করা #MeToo কে প্রশ্নবিদ্ধ করেন।

তার সেই পোষ্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের একজন শিক্ষক ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একজন উচপদস্থ কর্মকর্তা শেয়ার দিয়েছিলেন। এই দুটোই আমার নজরে এসেছিলো। এবং তাতে আমি খুব মুগ্ধ হয়েছিলাম। তাঁদের মতো গুরুত্বপূর্ণ ও দায়িত্ববান পদের মানুষরা প্রকাশ্যে একজন যৌন নিপীড়কের পক্ষ নিতে পারে – দেখে।

পরে আমি PMO’র সেই কর্মকর্তার timeline এ ওই শেয়ার করা পোস্টের নিচে একটা কমেন্ট করেছিলাম – তার মিনিট পাঁচেক পরে – ওই কর্মকর্তা তাঁর timeline থেকে পোস্ট সরিয়ে ফেলেছিলেন (যদি ভুল না দেখে থাকি)।

যা হউক, তারপর ‘যৌন নিপীড়কে’র স্ত্রী’র পোস্টের জবাব আমি পাবলিকলি দিয়েছিলাম।

#মিটু অভিযুক্ত রেজাউল করিম লোটাস, ডেইলি স্টার এর সিনিয়র সাংবাদিক

“যৌন নিপীড়ক’ আমার একাউন্ট হ্যাক করার চেষ্টা সহ বিভিন্নভাবে হয়রানি অব্যাহত রেখেছেন। ভালো, খুব ভালো। তিনি ও তারা জানেন না – আমি ঐসব ভয় পাই না। এই বিষয়ে আমি অস্ট্রেলিয়ান ফেডারেল পুলিশের (AFP) কাছে একটা “incidence” নম্বর খুলেছি ও তা আপডেট রাখছি। নোট: ইন্সিডেন্স নম্বর মানে, বাংলাদেশের সাধারণ ডায়েরি করা। After sharing my #MeToo story, I was overwhelmed by the offender’s actions. As a result, my emotional and mental state have been suffering, and has lead me to continue counseling with a professional psychologist. While this past month has been harsh on my body and mind, I know that I am strong enough to get through these events.

এর মধ্যে আমার সেই সাবেক পত্রিকা অফিস একটা পাবলিক নোটিশ দিয়েছিলেন, পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি করেন ও তদন্ত এখনো চলছে।

তাই এই নিপীড়ক দ্বারা অন্য যারা নিপীড়িত হয়েছেন ও যারা কর্মক্ষেত্রসহ সর্বত্র ‘যৌন নিপীড়ন’ বন্ধ চান তাঁরা আমাকে বিভিন্ন সময় – ফোনে, Inbox ও ইমেইলে যোগাযোগ করে – আমার #মি টু’র প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছেন, আমাকে উৎসাহ ও সাহস দিয়েছেন। আমাকে অবিচল থাকার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন – তাদের সকলের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা।

আর যারা আমার #মি টু নিয়ে হাসি-তামশা-fusur-fusur করেছেন, আমার #মি টু’র পিছনে ষড়যন্ত্র খুঁজেছেন ও এখনও খুঁজে বেড়াচ্ছেন – তাদের প্রতিও আমার কৃতজ্ঞতা। যারা অবিরত আমার বন্ধুবান্ধবদের ও পরিজনদের – আমার #মি টু নিয়ে বিব্রত ও বিরক্ত করছেন – তাদের জন্য – এক বুক ভালোবাসা। আপনারা অজান্তেই – আমাকে আরোও সাহসী করেছেন ও উপকার করে চলেছেন।

পাদটীকাঃ সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা। বাংলাদেশের আমরা ৯/১০ জন ‘খারাপ নারী’ ছাড়া আর কেও ‘যৌন নিপীড়ণের’ শিকার হননি।

বাংলাদেশের সকল #মি টু Fighters প্রতি আমার অভিনন্দন, কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা। আপনারা যেই – সাহস করেছেন। অন্যরাও সেই সাহস দেখাক। দুই একটা “যৌন নিপীড়কের’ বিচার হোক।

#MeTooBangladesh

শেয়ার করুন: