দেশে দেশে রজঃস্রাব এবং নিষিদ্ধ নারী

ফাহমি ইলা:

মেন্সট্রুয়েশন বা নারীর রজঃস্রাব শব্দটির সাথে আমরা সবাই কমবেশি পরিচিত। মেন্সট্রুয়েশনের সাথে মাতৃত্ব, সন্তান ধারণ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এই মেন্সট্রুয়েশন নিয়েই আবার সারা পৃথিবীতে নানা মতবাদ, ভীতি, কুসংস্কার চালু আছে। মেন্সট্রুয়েশন ট্যাবু নিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সমাজে নৃবিজ্ঞানীরা গবেষণা করেছেন। এ নিয়ে বিভিন্ন সমাজে যেসকল ট্যাবু চালু আছে সেগুলো সম্পর্কে জানাবার তাগিদে এ লেখা।

ট্যাবু পৃথিবীব্যাপী একটি পরিচিত এবং প্রচলিত শব্দ। ট্যাবু (Taboo) শব্দের আভিধানিক অর্থ অলঙ্ঘনীয় বা নিষিদ্ধ, পবিত্র বা অপবিত্র বিবেচনা করে কোনো বস্তু বা ব্যক্তিকে আলাদা করে রাখা। ট্যাবু পলিনেশীয় শব্দ। ‘ট্যাবু’ বলতে বোঝায়:
ক. বস্তুত বা ব্যক্তির পবিত্র বা অপবিত্র ভাব
খ. এ পবিত্র বা অপবিত্র ভাব থেকে উদ্ভূত নিষেধাজ্ঞা এবং
গ. নিষেধাজ্ঞা অমান্য করার ফলে যেসব পবিত্রতার বা অপবিত্রতার সৃষ্টি হয়।

এটি একটি ইউনিভার্সাল বিষয়। একেক সাংস্কৃতিক বলয়ে এটি একেক রূপে বিদ্যমান। নারীর মেন্সট্রুয়েশন বা রজঃস্রাব যাই বলি এ নিয়ে যে ট্যাবু আছে তাও বৈশ্বিক। জেন্ডার, জাতিগত কিংবা ধর্মীয় সকল পরিচয়ের উর্ধ্বে নারীকে এই ট্যাবুর ভেতর দিয়ে যেতে হয়।

পাওলা ওয়েজগার তার Menstruation and Menopause বইতে বলেন- ‘মেন্সট্রুয়েশন নিয়ে বৈশ্বিকভাবে ট্যাবু বিদ্যমান আছে, যেখানে এটাকে পাপ কিংবা দূষণের চিহ্ন হিসেবে দেখা হয়।‘ কোথাও একে পুরুষের জন্য দূষণ/বিপদজনক মনে করা হয়, আবার কোথাও প্রকৃতির জন্য। ট্যাবু বিষয়টা অনেকটা প্রতীকী বা ঐশ্বরিক কিংবা আধ্যাত্বিক ভয় থেকে তৈরি, যার কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দেয়া যায় না।

মূলত ‘ইংরেজি ‘মেন্সট্রুয়েশন’ কথাটি ‘মুন’ বা চন্দ্র কথাটির সঙ্গে যুক্ত৷ কিন্তু লাতিনে ‘মেনসিস’ মানে মাস, যে কথাটি আবার গ্রিক ‘মেনে’ বা মুন বা চন্দ্র শব্দ থেকে এসেছে৷ নারীদের যে গড়পড়তা ২৯ দিনের মাথায় রজঃস্রাব হয়, তার সঙ্গে চন্দ্রের বৃদ্ধি-ক্ষয় ও বর্ষপঞ্জীর ৩০ দিনের মাসের সম্পর্ক কোনোকালেই মানুষের চোখ এড়ায়নি৷ রক্ত মাত্রেই দূষিত, সেক্ষেত্রে নারীর শরীর থেকে যে রক্ত নিয়মিত বের হয়ে যায়, তাকে দূষিত বলে ঘোষণা করতে পিতৃতান্ত্রিক সভ্যতার সমাজ ও ধর্মগুরুদের কোনো অসুবিধাই হয়নি৷’

বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আবিষ্কারের বহু আগে মানুষ মেন্সট্রুয়েশনাল ব্লাড বা রজঃস্রাবের রক্তকে প্রাকৃতিকের চেয়ে অতিপ্রাকৃতিক কিছু বলে ধারণা করে নিয়েছিলো। একদম প্রচলিত যে মত আছে মেন্সট্রুয়েশন বা মেন্সট্রুয়েশন সময়কালীন নারীকে নিয়ে, তা হলো, সে এবং এই রক্ত অপবিত্র। ব্রিটিশ নৃবিজ্ঞানী মেরী ডগলাস বলছেন-‘দূষিতের ভাবনা মানে হচ্ছে এই পৃথিবীর নির্ধারণ করা প্রেক্ষিতে কোনকিছু মানানসই নয়।‘ বিজ্ঞানের উন্নতির সাথে সাথে আমাদের সামনে জ্ঞানের ভাণ্ডার খুলে গেলেও এখনো মেন্সট্রুয়েশনের সময় নারী এবং মেন্সট্রুয়েশনের রক্তকে নিষিদ্ধ/অপবিত্র/দূষিত ভাবা হয় এবং এ সময়টায় নারীকে বিভিন্ন স্বাভাবিক পরিস্থিতি থেকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে হয়েছে। সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের প্রেক্ষাপটে এই নিষিদ্ধ নারীর প্রতি বৈচিত্র্যপূর্ণ আচরণ করা হয়েছে। বিভিন্ন সংস্কৃতিতে মেন্সট্রুয়েশনকে ট্যাবুতে রুপান্তরিত করে মেন্সট্রুয়েশন সময়কালীন নারীকে কিভাবে নিষিদ্ধ মানবীতে পরিণত করা হয়, একটু দেখি:

১। পাপুয়া নিউগিনির ওগেয়ো জনগোষ্ঠী মনে করে স্বাভাবিক রক্তক্ষরণ (যা জখম থেকে নিঃসৃত হয়) নোংরা বা অপবিত্র নয়, কিন্তু রজঃস্রাবের রক্ত অপবিত্র, কেননা এটি কোনো জখমের কারণে হয় না। এমনকি এটি মারাত্মক ক্ষতিকর।

২। তাইওয়ানে শত শত বছর ধরে মেন্সট্রুয়েশনাল ট্যাবু মানা হয় এবং এখানকার অধিবাসীরা জানে না কেনো তারা এটি মানে। বংশপরম্পরায় এটি তারা মেনে আসছে। তারা মেন্সট্রুয়েশনকালীন নারীকে ভয় পায়, কেননা তারা মনে করে এ রক্ত হচ্ছে বিষ এবং এর মাধ্যমে সমাজে পুরুষের কাছ থেকে ক্ষমতা কেড়ে নেয়া সম্ভব। এছাড়া তাইওয়ানিজরা রজঃস্বাবকালীন নারীকে মন্দিরে ঢুকতে দেয় না, কারণ মনে করা হয় এই নারীর সংস্পর্শে আসলে গড/সৃষ্টিকর্তার সাথে যোগাযোগ স্থাপন সম্ভব না। মেন্সট্রুয়েশনের সময় একজন নারী বিয়ের অনুষ্ঠানে যেতে পারে না, কেননা একে অমঙ্গল ধরা হয়। এমনকি বিবাহিত নারী তার এবং তার স্বামীর কাপড় একসাথে ধুতে পারে না, কারণ মনে করা হয় এতে তার স্বামীর অমঙ্গল হবে এবং তার ব্যবসায়িক ক্ষতি হবে। এ সময় নারীরা চাইনিজ হার্বাল মেডিসিন ব্যবহার করে নিজেদের পুনরায় পরিশুদ্ধ করবার জন্য।

৩। চীনের ট্যাবু তাইওয়ানের ট্যাবুর সাথে মিলে যায়। নারীর মেন্সট্রুয়েশনের রক্তকে ক্ষতিকর, ব্যথাকর এমনকি মৃত্যুর কারণ হিসেবে দেখা হয় এখানে। এ সময় একজন নারী পাবলিক পরিসরে প্রার্থনা করতে পারে না, নিভৃতে একাকী করতে পারে। যে চেয়ারে পুরুষ বসবে নিষিদ্ধ নারী সেখানে বসতে পারে না, বিয়ের অনুষ্ঠান, শেষকৃত্য এমনকি জন্মদিনের অনুষ্ঠানেও যেতে পারে না। এ সময়ে একজন নারী একজন পুরুষের সাথে যৌন সম্পর্কে মিলিত হতে পারে না। মনে করা হয় এ সময় পুরুষ যদি নারীটির সাথে সঙ্গম করে, তবে নারীটির দূষিত নির্যাস পুরুষটির ভেতর চলে যাবে এবং তার যৌনাঙ্গে ঘা হবে এবং সে মারা যাবে।

৪। পূর্ব ইন্দোনেশিয়ায় সিরাম গ্রামে হুয়াউলু আদিবাসীর বাস। সেই গ্রামে নারীর মেন্সট্রুয়েশনকালীন কুঁড়েঘর (হাট) তৈরি করা হয়, যা একজন নারীকেই তৈরি করতে হয়। এই নিচ্ছিদ্র ঘরটিতে রজ:স্রাবের সময় নারীরা বাস করে। এ ঘরটিকে স্পর্শ করা দূরে থাক, এর দিকে পুরুষের তাকানো পাপ বা অশুভ বলে মনে করা হয়। যদিও ছোট ছেলে/মেয়েশিশুরা তাদের মায়েদের সাথে এ ঘরে সময় কাটাতে পারে, যতদিন না তারা সাবালক হয়। নারীরা তাদের স্বামীদের জন্য এ সময় খাবার রান্না করে না দূষিতের ভয়ে এবং তারা জঙ্গলে যাতায়াত করতে পারে অন্য নারীদের সাথে। কিন্তু পারতপক্ষে তারা পুরুষের যাতায়াতের রাস্তা ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকে।

৫। অর্থোডক্স তালমুদি ইহুদীবাদে রজঃস্রাবের রক্তকে নোংরা এবং দূষিত হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এখানে আইন করা আছে যে, রজঃস্রাবের সময় নারী-পুরুষ আলাদা থাকতে হবে। পরবর্তীতে হিব্রু বাইবেলে নিদ্দাহ নামে আইনের কথা বলা হয়েছে, যেখানে নারীদের এই আইন মান্য করতে হয়ে এবং যদি কোনো নারী পুরুষ এটা মান্য না করে একসাথে থাকে, তাহলে তাদেরকে পরিবার থেকে পর্যন্ত বিচ্যুত করা হয়। এসময় কোনো নারী পুরুষের কাপ, বিছানা স্পর্শ করতে পারে না, একসাথে এক টেবিলে বসে খেতে পারে না।

৬। ক্রিশ্চিয়ানিটিতেও মেন্সট্রুয়াল ট্যাবু বিদ্যমান, যদিও তারা সেগুলো খুব বেশি মানে না। গির্জায় একজন রজঃস্রাবকালীন নারী এসে দাঁড়াতে পারে না প্রার্থনায়। প্রার্থনায়, সঙ্গমে এমনকি শারীরিক/কায়িক কাজ থেকে নারীকে এ সময় সরিয়ে রাখা হয়।

৭। হিন্দুধর্মে রজঃস্রাবের সময়ে একজন নারী মন্দিরে কিংবা গুরুর ঘরে প্রবেশ করতে পারে না, এমনকি মন্দিরে দেবতাকে যে খাবার উৎসর্গ করা হবে, তার দিকে তাকানোও নিষেধ। এ সময় সঙ্গম নিষিদ্ধ, ধর্মীয় গ্রন্থ পড়া নিষিদ্ধ, এমনকি তাকে কোন পুরুষ দেখতে আসাও নিষিদ্ধ। Vashishta Dharmashastra এ উল্লেখ আছে যে, এ সময় নারী তার শরীর ধৌত করতে পারবে না, চোখের প্রসাধনী ব্যবহার করতে পারবে না, মাটিতে ঘুমাতে হবে এবং দিনে ঘুমাতে পারবে না, আগুন স্পর্শ করতে পারবে না, দড়ি বানাতে পারবে না, দাঁত পরিষ্কার করতে পারবে না, মাংস খেতে পারবে না, গ্রহ উপগ্রহের দিকে তাকাতে পারবে না, তামার পাত্রে পানি পান করতে পারবে না।

৮। ইসলাম ধর্মে রঃজস্রাবকালীন নারীর ধর্মীয় গ্রন্থ পড়া নিষিদ্ধ, এমনকি ধর্মগ্রন্থ স্পর্শও নিষিদ্ধ, সঙ্গম নিষিদ্ধ, আনুষ্ঠানিক প্রার্থনা নিষিদ্ধ, এ সময় অযু হয় না। রজঃস্রাবরত নারীদের নামাজ না পড়লেও চলে, রোজা রাখা যায় না, কাবা প্রদক্ষিণ না করলেও তাদের হজ কার্যকরি হয়৷

৯। শিখ ধর্মে মেয়েদের রজঃস্রাবকে ঈশ্বরপ্রদত্ত একটি জীববিজ্ঞান সংক্রান্ত প্রক্রিয়া বলে গণ্য করা হয়।

১০। নেপালে রজঃস্রাবকালীন সময়ে নারীকে পাঠিয়ে দেয়া হয় পুরোপুরি অন্ধকার একটি ঘরে৷ এই সময়ে নারীটি বাড়ির কোনো পুরুষদের সামনে আসতে পারবে না, কথা বলতে পারবে না, দুগ্ধজাত খাবার খেতে পারবে না, স্পর্শও করতে পারবে না৷ অন্তত আট দিন কঠিন এক সময় পার করতে হয় মেয়েটিকে৷

পিতৃতন্ত্রের ছোঁয়া লাগবার আগে নারীকে এই মেন্সট্রুয়েশনের জন্য একসময় শক্তিশালী হিসেবে দেখা হয়েছে। অতীতে এমন অনেক সমাজ ছিল, যেখানে রজঃস্রাবরত নারীদের পবিত্র ও শক্তিশালী বলে গণ্য করা হতো; বলা হতো, তাদের বিশেষ মানসিক ক্ষমতা আছে, তারা রোগ সারাতে পারেন৷

চেরোকি ইন্ডিয়ানদের কাছে রজঃস্রাবের রক্ত ছিল নারীর শক্তির উৎস৷ সেই রক্ত শত্রুদের বিনষ্ট করতে পারে বলে মনে করতো চেরোকিরা৷ প্রাচীন রোমে মনে করা হতো, এক রজঃস্রাবরত নারী তার শরীর উন্মুক্ত করলে শিলাবৃষ্টি, ঘূর্ণিঝড় আর বজ্রপাত ভয়ে পালিয়ে যায়৷
প্লিনি দ্য এল্ডার বলেন- ‘প্রাচীনকালে বিশ্বাস করা হতো, এমন এক নারী যদি নগ্নদেহে শস্যক্ষেতে হেঁটে বেড়ান, তাহলে পাকা ফসল থেকে পোকা ঝরে যায়’৷ আফ্রিকায় রজঃস্রাবের রক্ত ছিল একটি অতীব শক্তিশালী জাদুকরি পদার্থ, যা দিয়ে যেমন শুদ্ধ করা যায়, তেমন ধ্বংসও করা যায়৷

ঘটনা হচ্ছে, বিজ্ঞানের আবিষ্কারের সাথে সাথে আমরা জানতে পেরেছি এটি নারীর একটি স্বাভাবিক ও প্রাকৃতিক শারীরিক ক্রিয়া, যা মাতৃত্ব এবং সন্তান ধারণের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। মানবজন্ম নির্ভর করছে এর ওপর। এই প্রকাশিত প্রাকৃতিক ও স্বাভাবিক সত্যটিকে লুকিয়ে রাখবার, নিষিদ্ধ করবার তাড়না এবং কৌশল প্রয়োগ যে আদিকাল থেকে চর্চিত হয়ে আসছে তা প্রমাণিত। এ সময়টায় নারীকে যেভাবে দেখা হয় এবং যেভাবে সে নিষিদ্ধ মানবীতে পরিণত হয়, সেটা কিন্তু মোটেও প্রাকৃতিক না, এটা হাজার বছরের কুসংস্কার বা ট্যাবু।

যুগে যুগে নারীর শরীর, রজঃস্রাব, সঙ্গম, উর্বরতা, গর্ভধারন, জন্মদানসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সমাজ, ধর্ম নানাভাবে ব্যাখ্যা দেবার চেষ্টা করেছে। যেমন একসময় ভাবা হতো ‘সূর্যই পৃথিবীর চারপাশে ঘুরছে’, বিজ্ঞান সে অযৌক্তিক ব্যাখ্যাকে খারিজ করে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দাঁড় করিয়েছে, মানুষ বিশ্বাস করেছে। কিন্তু এই যে নারীকে নিয়ে যুগে যুগে এতো এতো কুসংস্কার আর কুসংস্কারের ফলে নারীকে নিষিদ্ধ রাখবার প্রক্রিয়া, এ থেকে এই একবিংশ শতকেও কি আমরা বেরিয়ে আসতে পেরেছি? এখনো কি আমরা এ বিষয়টিকে লজ্জাকর পারতপক্ষে ক্ষতিকর/দূষিত ভাবি না?

নারীকে নিষিদ্ধ করে রাখলে স্পষ্ট তার এজেন্সি তৈরিতে বাঁধা দেয়া সম্ভব হয়। তাকে একতাবদ্ধ হতে বাঁধা দিলে পিতৃতন্ত্র টিকিয়ে রাখতে সুবিধা হয়, শোষণ করতে সুবিধা হয়। আর এ সুবিধা ভোগ করে এ গোঁড়া পিতৃতান্ত্রিক সমাজ। যে সমাজ যে সভ্যতা টিকে থাকা সম্ভব নয় নারী-পুরুষ উভয়কে ছাড়া, সে সমাজই নারীকে দমিয়ে রেখেছে নিষেধাজ্ঞার শেকলে! আর দমে থাকতে থাকতে নারী হয়তো ভুলে গেছে সে একজন পরিপূর্ণ মানুষ, সে নিষিদ্ধ নয়, তাকে নিষিদ্ধ করে রাখা হয়েছে!

শেয়ার করুন: