ওয়েস্ট ইন্ডিজ বনাম পাকিস্তান: ম্যাচ টাই!

WIউইমেন চ্যাপ্টার ডেস্ক: এগার নাম্বার ব্যাটসম্যানের ব্যাট হতে শেষ ওভারে ১৩ রান। ম্যাচ টাই! ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাকিস্তানের মধ্যকার তৃতীয় একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে এমনটিই দেখেছে সেন্ট লুসিয়ায় দর্শকরা।

ব্যাটসম্যানদের জন্য চরম প্রতিকুল উইকেটে পাকিস্তান অধিনায়ক মেসবাহ উল হকের ধৈর্যশীল ৭৫ (১১২ বলে) এবং উমর আকমলের মারকুটে ৪০(৩১ বলে) রানের সুবাদে পাকিস্তান নিজেদের ৫০ ওভারে ছয় উইকেটে ২২৯ রান করতে সমর্থ হয়।

মেসবাহ ও উমর আকমল ছাড়া পাকিস্তানের পক্ষে উল্লেখযোগ্য রান করেছেন নাসির জামশেদ ২০ ও হারিস সোহেল ২৬ রান। এছাড়াও ইনিংসের শেষের দিকে ওয়াহাব রিয়াজের ১০ বলে ১৯ রান পাকিস্তানের ২২৯ রান করার পথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে ডোয়াইন ব্রাভো ও জেসন হোল্ডার দুটি করে উইকেট তুলে নেন।

২৩০ রানের টার্গেটে খেলতে নেমেই খেই হারিয়ে ফেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৫০ রান তুলতেই হারিয়ে বসে টপ অর্ডারের চার্লস, গেইল ও ড্যারেন ব্রাভোর মূল্যবান তিনটি উইকেট। পরে স্যামুয়েলস ও সিমন্সের ৯১ রানের জুটিতে শুরুর বিপর্যয় কিছুটা কাটিয়ে উঠতে সমর্থ হয় তারা। কিন্তু স্যামুয়েলসের আউটের পর ৫০ রান যোগ হতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ হারিয়ে ফেলে ইনিংসের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী (৭৫ রান) সিমন্স সহ আরো নির্ভরযোগ্য তিন ব্যাটসম্যানকে। ডোয়াইন ব্রাভো, পোলার্ড ও ড্যারেন স্যামির উইকেট হারিয়ে পরাজয়ের একেবারেই দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায় ওয়াস্ট ইন্ডিজ।

কিন্তু সুনিল নারায়ন ও জ্যাসন হোল্ডারের আক্রমনাত্মক ব্যাটিংএ সেন্ট লুসিয়ার দর্শকরা কিছুটা আলোর দেখা পাচ্ছিলো। ব্যাক্তিগত ১৪(৫ বলে) এবং দলীয় ২০৫ রানের মাথায় সুনিল নারায়নের আউটের পর জয় কিছুটা অধরাই মনে হতে থাকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সমর্থকদের। কারণ তখনো জয়ের জন্য দরকার ১৩ বলে ২৪ রান। হাতে আছে মাত্র একটি উইকেট। ৪৯ তম ওভারে ৯ রান এলে শেষ ওভারে জয়ের জন্য বাকী থাকে আরো ১৫ রান। বোলিং করতে এলেন ওয়াহাব রিয়াজ। প্রথম দুই বলে দুটি সিঙ্গেল নিলে সমীকরণ আরো কঠিন হয়ে পড়ে ক্যারিবীয়দের জন্য। জিততে হলে করতে হবে চার বলে ১৩ রান। স্ট্রাইকে আছে জ্যাসন হোল্ডার। তৃতীয় বল করেন রিয়াজ, কভার দিয়ে সজোরে খেলে হোল্ডার আদায় করে নেন চার রান। পরের বল থেকে কোন রান না এলে দুই বলে দরকার থাকে ৯ রান। ওভারের পঞ্চম বল করতেই ক্যারিবীয়দের ড্রেসিং রুমের চেহারা বদলে যায়। কারণ হোল্ডার এবার এক্সট্রা কভারের উপর দিয়ে বলকে সীমানা পার করে আদায় করেন ছয় রান। ততক্ষণে বিমর্ষ হয়ে পড়েন পাকিস্তানের কোচ ডেভ হোয়াটমোর। যাহোক শেষ বলে তখনো জয়ের জন্য দরকার তিন রান। শেষ বলেও হোল্ডার সজোরে ব্যাট চালালেন। কিন্তু ব্যাটের কানায় লেগে বল চলে যায় থার্ডম্যান অঞ্চলে। সেখান থেকে বল ফেরত পাঠানোর আগেই হোল্ডার ঝুঁকিপূর্ণ ২ টি রান নিতে সমর্থ হন। দলকে জয়ী করতে না পারলেও হোল্ডার হারতে দেয়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। এতেই যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ জয়ের সমান আনন্দ পেয়েছে সেটি উইন্ডিজ খেলোয়াড়দের টাই করার আনন্দেই স্পষ্টভাবে প্রকাশ পেয়েছে।

ম্যাচ শেষে উইন্ডিজ অধিনায়ক ডোয়াইন ব্রাভো বলেন, ‘জেসন(জেসন হোল্ডার) ও সুনিল(সুনিল নারায়ন) এর ব্যাট চালানো ছাড়া কোন উপায় ছিলোনা। তারা হার এড়াতে সক্ষম হয়েছে যদিও এটা আমাদের জেতার মত টার্গেট ছিলো।

এই জয়ে পাঁচ ম্যাচের এই সিরিজে তিন ম্যাচ পরে ১-১ এ সমতা বিরাজ করছে।

শেয়ার করুন: