সীমান্তিকা হিরণ্য:
লেট মি ক্লিয়ার ওয়ান থিং দ্যাট , “ডিপ্রেশন” অ্যান্ড “স্যাডনেস” আর নট দ্য সেইম! আমরা ডিপ্রেশন আর মন খারাপ এই দুই- এক করে ফেলি। সমস্যাটা এখানেই।
মন খারাপ একটি স্বাভাবিক মানব-আবেগজনিত অবস্থা। আমাদের সবার মন খারাপ হয়। কারণে হয়, অকারণে হয়। ক্লাসে লেট করে গেল বলে সবার সামনে টিচার কান ধরে দাঁড় করিয়ে রেখেছে, অমনি বাচ্চাটার মন খারাপ হয়ে যেতে পারে। এইচএসসির রেজাল্ট পাবলিশ হওয়ার পর দেখা গেল আইসিটিতে এক মার্কের জন্য গোল্ডেন আসে নাই, সারা বছর হার্ট অ্যান্ড সোল ট্রাই করে পড়াশোনা করা মেয়েটার মন খারাপ হয়ে যেতে পারে। বার কাউন্সিল এক্সামিনেশনে আপনার সমস্ত বন্ধু পাশ করে লাইসেন্স পেয়েছে, শুধুমাত্র আপনিই পাননি, আপনার মন খারাপ হতে পারে।
সুস্থ বাবাটা অসুস্থ হয়ে আইসিউতে ঘুমিয়ে আছে, বাবার ন্যাওটা মেয়েটার বাবার সাথে অসংখ্য প্রমিজ আর প্ল্যানের কথা মনে করে মন খারাপ হতে পারে। খুবই স্বাভাবিক।
বাট ডিপ্রেশন ইজ সামথিং ডিফ্রেন্ট। ডিপ্রেশন একটা অ্যাবনরমাল স্টেট। একটা অসুখ। আপনার কিডনি ড্যামেজড, এটা যেমন একটা অসুখ, ডিপ্রেশনও তেমনই একটা অসুখ। এই অসুখ ইগনোর করলে আপনার নাম সুইসাইড স্কোয়াডে নথিভুক্ত হয়ে যাওয়া অস্বাভাবিক কিছু না।
“আরেহ ধুর কিচ্ছু হবে না” বললেই এই অসুখ সারে না। ইউ নিড ট্রিটমেন্ট, ইউ নিড প্রপার মেডিকেশন। মন খারাপ সাধারণত দীর্ঘস্থায়ী হয় না, মন খারাপ হলে ট্রিটমেন্ট লাগে না। সময় মন খারাপ সারিয়ে দিতে পারে। বাট ডিপ্রেশনে ট্রিটমেন্টের প্রয়োজন। অল উই নিড টু ডু ইজ টু আন্ডারস্ট্যান্ড দ্যাট উই আর ডিপ্রেসড অর স্যাড!
ডিপ্রেশন আমাদের চিন্তার ওপর অ্যাফেক্ট ফেলে, আবেগ-দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রভাবিত করে, আচরণকে নিয়ন্ত্রণ করে। আমরা যখন ডিপ্রেসড থাকি আমাদের সবকিছু নিয়ে মন খারাপ হয়।
তার মানে এই না যে মন খারাপ হওয়া মানেই আমি ডিপ্রেসড। কখনও কখনও ডিপ্রেশনের জন্য কোনো জটিল পরিস্থিতি, ব্যর্থতা বা সমস্যার প্রয়োজন পড়ে না।
ইন ফ্যাক্ট এই জিনিসগুলোর অভাবেও কখনও কখনও ডিপ্রেশন দেখা দিতে পারে।
আমার কোনো কিছুর অভাব নাই, আমার টাকা আছে, সুন্দরী গার্লফ্রেন্ড আছে, গাড়ি আছে, বাড়ি আছে, খ্যাতি আছে, বাট স্টিল আই ক্যান ফিল ডিপ্রেসড! ডিপ্রেশনের নির্দিষ্ট কোনো কারণ নাই।
কীভাবে বুঝবেন আপনি ডিপ্রেসড নাকি আপনার জাস্ট মন খারাপ? সাধারণত আমরা একটু মন খারাপ হলেই বলি, “ওফফ ! দোস্ত আই অ্যাম ফাকিং ডিপ্রেসড!”
আসলে ডিপ্রেশন এত সহজ সোজা না। অনেকগুলি সিম্পটমস আছে যেগুলি ডিপ্রেশন নামক মেন্টাল ইলনেসের আওতায় পড়ে।
কোনো কিছুর অভাব নাই, কিন্তু আপনার সব কিছু হরিবল লাগছে এবং এই অনুভূতি যাচ্ছে না, দীর্ঘস্থায়ী হয়ে গেঁড়ে বসে আছে, আপনার মাথায় সারাক্ষণ সুইসাইডাল চিন্তা-ভাবনা ঘুরপাক খাচ্ছে, অকারণে রেগে যাচ্ছেন, খিদে নেই, রুচি নেই , ঘুম নেই, ওয়েট কমে যাচ্ছে, কাউকে সহ্য করতে পারছেন না, হ্যাঁ, মেইবি, আপনি ডিপ্রেসড।
আই রিপিট “মেইবি”!
অর্থাৎ এতোকিছু ঘটেও হতে পারে আপনি ডিপ্রেসড না। নিজেকে সময় দিন, বুঝুন আপনার মন খারাপ কি না! যখন নিজেকে দেয়া অটোসাজেশান, লজিক কিংবা কোয়ালিটি টাইম অথবা পছন্দের কাজও আপনার মন খারাপ সারাতে পারছে না, বি অ্যাওয়ার!
ইউ নিড আ কনসাল্টেন্ট নাউ।
মেন্টাল সিকনেস লুকোনোর একটা প্রবণতা আমাদের দেশে দেখা যায়। আমরা সাইকিয়াট্রিস্টের কাছে যাওয়াটাকে খুবই ন্যাক্কারজনক কাজ মনে করি।
মানসিকভাবে অসুস্থদের আমরা পাগল বলি। সাইকিয়াট্রিস্টদের বলি পাগলের ডাক্তার!
আদরের বাচ্চাটার শরীরের তাপমাত্রা ৯৮.৪ থেকে ৯৯ ডিগ্রিতে গেলেই ডাক্তারের কাছে ছুটবেন, অথচ বাচ্চাটা যখন ক্রমাগত “ভাল্লাগে না” জাতীয় মেন্টাল ইলনেসের শিকার হলেও একবার উপলব্ধি করবেন না যে তার চিকিৎসা প্রয়োজন! তার একটু সাপোর্ট দরকার!
মন জিনিসটার গুরুত্ব দেয়া বিরাট দুর্বলতা আমাদের সমাজে। আত্মীয় স্বজন ফিসফাস করে বলবে – অমুকের ছেলে তো পাগল, এই ভয়েও অনেকে এড়িয়ে যায় তার অসুস্থতা।
অথচ অসুস্থতা কোনো লজ্জার বিষয় না! শরীরের অসুখ ফলাও করে প্রচার করি, আর মনের অসুখের বেলায় শত রাখঢাক আর লুকোছাপা !
আপনার সুস্থ ছেলেটা কেন সুইসাইড করলো এখনও বুঝতে পারছেন না?
সাইকোলজি ক্লাসে একবার মিস বলেছিলেন, যারা সুইসাইডের কথা বলে তারা একসময় ঠিকই সুইসাইড করে।
হ্যাঁ, এটাই। আপনার বন্ধু বিকালের আড্ডায় হুট করে বললো, “মামাহ, সুইসাইড করমু। ভাল্লাগে না আর!” আর আপনি বললেন, “ওয়াও! চল্লিশায় দাওয়াত দিস। কাচ্চি হবে কাচ্চি!”
তারপর বন্ধুর আইডিটা যেদিন সত্যি সত্যি রিমেম্বারিং লেখা ঝুলিয়ে দেবে, তখন আপনি স্ট্যাটাস দিবেন “রেস্ট ইন পিস , দোস্ত। ইউ উইল বি মিসড”।
দিজ আর নট ফেয়ার।
সময় গেলে সাধন হবে না …. হবে না।..