মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আর্তনাদটুকু অকারণে লিখে রেখে গেলাম!

শারমিন শামস্: মাননীয়া প্রিয় প্রধানমন্ত্রী, আমি ধরেই নিচ্ছি, আমার মত নগণ্য একজনের লেখা চিঠি আপনার কাছে কোনদিনই পৌঁছুবে না। আর যাদের চিঠি পৌঁছোয়, তারা কখনও আমাদের হয়ে আপনাকে লিখবে না।

তবু, মৃতপ্রায় ডুবন্ত মানুষ যেমন আঁকড়ে ধরে খড়কুটো, আমিও ধরলাম। আপনাকে একখানা চিঠি লিখতে বসেছি। বুকের ভিতরে যে ভীষণ বেদনা আর যন্ত্রণা, তা কোথায় রাখি! জানা নাই। কী এক প্রবল অস্থিরতায় আমি আর আমরা শুধু ছুটেছি এঘর-ওঘর। নিজেদের ভিতরে কথা বলেছি। আর প্রশ্ন করেছি একে অপরকে, ‘এর কি কোন শেষ নাই?’

Rape victদুঃখজনক হলেও সত্য, এ প্রশ্নের কোন উত্তরও নাই। কোন উত্তর আসে না। কেউ উত্তর দেয় না। ধর্ষণ হয়, শিশু ধর্ষণও হয়। তারপর কয়েকটা দিন আমরা অস্থির হয়ে, যন্ত্রণায় বিদ্ধ হয়ে, কষ্ট পেয়ে ব্যর্থ হাত পা ছুঁড়তে থাকি। তারপর? তারপর নটে গাছটি মুড়োয়, আর আমরা সুখি তালপাখা হাতে বাতাস খাই। কিন্তু বুকের ভিতরে যে বোধ, সেই বোধ নারীত্বের অপমানের, হতাশার, তীব্র বেদনার, গভীর অবদমনের। আমরা সেই বোধ নিয়েই ঘুরি, ফিরি, পথ চলি আর প্রতি মুহূর্তে নিজেকে নিয়ে শংকিত থাকি।

যে বাচ্চাটা ধর্ষিত হয়ে দুমড়ে মুচড়ে একটা দলিত মথিত মৃতপ্রায় জড়বস্তুতে পরিণত হয়েছে, সে বাড়ি ফিরে যাবে। আহত, রক্তাক্ত যোনি, ক্ষতবিক্ষত জরায়ু আর ক্ষুদ্রান্ত্রকে কোনমতে সেলাই করে আটকে দিয়েছেন চিকিৎসক। কামড়ের ক্ষতগুলো ঢেকে দিতে চেয়েছেন কোনো এক মলমে। ওই বাচ্চাটার মা সারারাত জেগে বসে আছে হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে বাচ্চার পাশে।

আমি তার মুখটা দেখতে চেয়েছিলাম। ওই মায়ের মুখ কি আমার মুখের মতোই? ওই বাচ্চাটা- ওই ছোট্ট তুলতুলে বাচ্চাটা- ওর ছোট ছোট হাত- সে তো হুবহু আমার মেয়ের হাতের মত- গোলগাল- ছোট্ট। আমি ওর মাকে দেখতে চেয়েছিলাম। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, পাঁচ বছরের ছোট্ট বাচ্চাটা, যে দুটি পঁয়তাল্লিশ বছর বয়সী লোকের দ্বারা আঠারো ঘণ্টা ধরে ধর্ষণের শিকার হয়েছে, নির্যাতিত হয়েছে, সেই বাচ্চাটার মাকে দেখতে চেয়েছিলাম। আমার তো আর কিছু করার ক্ষমতা নাই। আমি শুধু ওঁর হাতটা ধরে দেখতে চেয়েছিলাম। সন্তান ধর্ষিত হলে মায়ের শরীরে যে নারকীয় যন্ত্রণার, আতঙ্কের, তীব্র বেদনার কাঁপুনি ভর করে, সেই কাঁপুনি কি আর কোনদিন থামে?

pm-hasinaমাননীয়া, এই সমাজে প্রকাশ্য দিবালোকে ধর্ষকেরা ঘুরে বেড়ায়, মিশে থাকে ভিড়ে, প্রতিবেশি হয়ে কুশল বিনিময় করে, পাহারাদার হয়ে নিরাপত্তা দেবার ভান করে, আপনজন হয়ে কাছে আসে, শত্রু হয়ে তক্কে তক্কে থাকে- নানা চেহারায়, নানা রূপে, নানা কায়দায় তারা মিশে থাকে, লকলকে লালসার জিহ্বাটা লুকিয়ে রাখে, তারপর কোনো একদিন সুযোগ বুঝে নিয়ে যায় বাচ্চাটাকে- ছোট কোমল দুটো হাত, পা, মুখ, আধো আধো বুলি, কোমল নরম শিশু, ছোট্ট সোনামণি ধর্ষকের মনে কাম ছাড়া আর কিছুই জাগ্রত করে না।

বিকৃত সেই ধর্ষণের পর শিশু হয়তো মরে যায়, আর যদি বেঁচে থাকে, তবে সেই বাঁচা কেমন বেঁচে থাকা, আমি শুধু সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজি। এই প্রশ্নের পিছনে ক্লান্ত ছুটে চলা আমার, আমাদের- এর কোন শেষ নেই। এ লড়াই আমাদের একার। তবু কেন লিখতে বসেছি আপনাকে? তবু কেন লিখছি? আমি জানি না।

ধর্ষণ নিয়ে এটা আমার কততম লেখা? আমি জানি না। গুনি নাই। শুধু জানি, সংখ্যাটি অসংখ্য।

যতবারই কলম ধরেছি ধর্ষণের বিরুদ্ধে, বারবার মনে হয়েছে, এইবার হয়তো থেমে যাবে এই অন্ধকার উৎসব। যতবার লিখেছি, বুকের ভিতরে দগদগে ক্ষত আর চোখভরা কান্না চেপে লিখেছি। যত যতবার এই দেশে শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, আমি বুকচাপা হাহাকার আর দম বন্ধ করা যন্ত্রণা নিয়ে সময়গুলো পার করেছি। আমার হাতে কোন ক্ষমতা নাই। আমি নিতান্ত নগণ্য একটি মানুষ। আস্ফালন ছাড়া আর কিছু করার নাই আমার। এমনকি লিখতে গিয়েও ঘেন্না ধরে যায় নিজের ওপরে।

শিশু ধর্ষণের চেয়ে বড় কোন অপরাধ আছে, হতে পারে, আমার বোধে তা আসে না। এই সমাজে বারবার শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। দেড়মাসের শিশুও ধর্ষিত হয়, আড়াই বছর, তিন বছর, পাঁচ বছর- কেউ বাদ পড়ে না। তারপর ধর্ষক ধরাও পড়ে। আমরা তাদের চেহারা দেখি। আমরা চিৎকার করি। কিন্তু অন্ধকারের সেই উৎসব তো থামে না!

প্রিয় প্রধানমন্ত্রী,

moonmoon-4
শারমিন শামস্

আমি জানি এই চিঠি কোনদিন পৌঁছুবে না আপনার কাছে। আমি এও জানি আমার যন্ত্রণার এই প্রকাশ, তার ছিঁটেফোঁটাও কোন কাজে লাগবে না। তবু বুকের ভিতরে যে তুমুল আর্তনাদ, তাকে ঠেকিয়ে রাখতে পারলাম না। আমার আর কোনো জায়গা নেই, যেখানে গিয়ে আমি চিৎকার করতে পারি। যেখানে গিয়ে আমি মাথা কুটে বিচার চাইতে পারি, যেখানে গিয়ে আমি আমার সন্তানের জন্য একটা সুস্থ পরিবেশ, সুস্থ দেশ দাবি করতে পারি।

শিশুকে যারা ধর্ষণ করে তাদের ঠিক কতটা কঠোর শাস্তি হতে পারে, আপনি কি জানেন? আপনি কি এই নিয়ে ভাবেন? আপনি কি বুঝতে পারছেন? আমি এখন চিৎকার করে আপনাকেই শুধু বলছি, আর কাউকে নয়। আমাদের আর কোথাও যাবার নাই।

একটা চরম এবং চরমতম দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, দ্রুততম বিচার- আর কিচ্ছু নয়। আর কিছু নয়- শুধু বিচার করুন বিচার করুন, বিচার করুন। কঠোর কঠিন জঘন্যতম সাজা দিন ওই ধর্ষকদের, যারা শিশুকে ধর্ষণ করে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমি জানি এই চিঠি কোনদিন পড়বেন না আপনি। তবু আমাদের আর্তনাদটুকু লিখে রেখে গেলাম। কারণ আমাদের আর্তনাদ বলে দেবার কেউ কোথাও নেই।    

শেয়ার করুন:

দেশে একজন ভালোমানুষ আছে ””
গীতা রানি নির্বাচন কমিশনে চাকুরি করতেন মাস্টার রোলে ৫/৬ বছর তার বস্কে অনুরোধ করতে করতে বয়স এক বছর বেশি হল সরকারি পোস্টে আসতে তখন ৩১ বছর চলে । যাক বাবা তাওত একটা সরকারি চাকুরি হল বেশ আরামেই চাকুরীটা করলেন । এখন তার রিটাড় করার বয়স শেষ হল একবছর কিন্তু তার পেনসন ? এখন কাগজ পাতি টানা টানি বয়স নিয়ে দিদি আবার চিরকুমারী বেজায় মুশকিল । একজন স্যার বললেন আপনার চিন্তা করতে হবে না আমিই সব করে দিব । দিদি তো মহা খুশিতে নিজেই ১০ হাজার টাকা নিয়ে সাধলেন বললেন রাখেন টাকা লাগবে না এবার দিদি মনে মনে ভাবলেন দেশে একজন ভাল মানুষ আছে । ঘরে এসে তার জন্য দুয়া পরতে পরতে যাক মহা খুশিতে বাসায় আসলো । কাগজ আর তৈরি হয় না ছয় মাস পরে বললেন এক লাখ লাগবে দিদি আবারো ভাবল অনেকের তুলনায় বেশ ভাল আছে । দিদি টাকাও নিয়ে গেলেন কিন্তু এবার স্যার এর মজুরি ৫ লাখ দারায় এক বছর চলে গেল এখন বলেন চেক দিতে হবে দিদি বললেন আচ্ছা চেক দিব কিন্তু আমার ১৫ লাখের চেক্টাও হাতে দিবেন । স্যার এবার হাত খরচ কিছু নগদ দিতে হবে তাও ৫০ হাজার তো দিবেন । স্যার তো বেজায় ভাল মানুষ ” দিদি এবার আরও বেশি বেশি দুয়া পরতেছেন ।
” দিদির দুয়া

যে দিন খবরটি প্রকাশিত হয়েছে, সেদিন থেকে একটিই প্রশ্ন আমার মনে উকি দিচ্ছে পাচ বছর বয়সী একটি মেয়ে যতই স্বাস্থ ভাল হোক, তার শরীর কোনো ভাবেই কি কাউকে আকৃষ্ট কারার মত হয়ে উঠে। ছি ছি ছি লজ্জা কোথায় রাখি বুঝতে পারছি না। জানি না এছাড়া আমার আর কোনো কিছু প্রকাশ করার মত ভাষা আছে কিনা আমি এই দোষী ব্যাক্তিদের প্রকাশে দিবালোকে হাজার হাজার মানুষের সামনে কঠোর থেকে কঠোর শাস্তি চাই।

ভাল হয়েছে ধর্ষন হয়েছে ,, এতে আর্তনাদের কি আছে ????? এ সমাজে কে ধর্ষণ না হচ্ছে (প্রতিটা মানুষ এ নোংরা সমাজের কাছে প্রতিনিয়ত ধর্ষিত), প্রতিটা ধর্ষিত প্রান চলে যাক কষ্টে শিষ্টে একবার মরে এতে পারলে জীবনের তরে বেচে যাওয়া যায়। 

are aisob incident e prime minister er kisu ase jay na…karon amra shadharon jonogon..abong aisob bangladesher manush jon ke mene niyei life lead korte hobe…!! r btw ja ghotse se sob kara kortese shetao akta mukkho bepar..personally ami awami league support kortam but ekhon dekhtesi awami league er darai beshir vag crime ekhon rasta ghate hosse ar police prosashon era to hukumer golam…ar prime minister uni esober dhar dhari na…so amar mone hoy aisob artonad kore lav nai…bertho chesta.. 🙂

হে দেশনেত্রী ,আপনি কখনো এই হায়েনাদের স্কমা করবেন না ,আপনি স্কমা করলে ভবিষৎতে ওর আকাশ ফাটানো আতনাদ আমাদের স্কমা করবেন না, আপনি তো দেশে মা, তাই মা হিসাবে একজন সন্তানক হিসাব  ন্যায় বিচার আপনার কাজে আশা করতেই পারে, হে পূজা ! যদি তুমি ন্যায বিচার না পাও তাহলে তুমি আমাদের স্কমা করো না

প্রাণছোঁয়া, প্রয়োজনীয় লেখা। ধন্যবাদ। তবে একটি অনুরোধ সম্পাদক বরাবর- লেখার সাথে সংগতি রেখে লেখকের ছবি দিলে ভালো হয়। যেমন এই লেখটির সাথে হাস্যোজ্জ্বল ছবি মানাচ্ছে না।

আপু, আপনার কান্না-ভেজা কথাগুলো কত যে মায়ের না-বলা ক্ষোভ-বেদনার বহিঃপ্রকাশ! সবাই তো লিখতে পারেনা। আপনাকে ধন্যবাদ। আমিও মেয়ের মা। আমার ক্লাশ টু-এ পড়া মেয়েকে এ অবস্থায় কল্পনা করার সাহস পর্যন্ত আমার নেই। একটি করে ঘটনা ঘটে, আর শুধু ভাবি আমার মেয়েটি আর কতদিন নিরাপদ? আমি আশা করি আপনার এই আর্তনাদ শুধু অরণ্যে রোদন হয়েই থেকে যাবেনা। যাকে বলতে চেয়েছেন তিনি শুনবেন আর দ্রুততম সময়ে কঠিন বিচারের ব্যবস্থা করবেন।    

এই বিচার না চেয়ে নিজের কাংখিত রায় চাওয়াটা মেনে নিতে পারি না। কেন আমরা আইনের শাসন চাই না? কেন বিচার ও রায়কে প্রভাবিত কোরতে চাই? প্রত্যেক অপরাধেরই তো আইন ও বিচার আছে। যদি তা না থাকে তবে সংশোধন চাব, যুগোপযোগী করে আইন বানাব নিয়মের মধ্যে থেকে। কিন্তু আমরা এটা না করে বাড়বার প্রত্যেকেই তার বা তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্র থেকে কেন চাই যে আইন আমার মতো চলুক? আমার কথা শুনুক? এই জন্যই তো আইন হয়ে গেছে শুধুই ক্ষমতাবানদের জন্য। এই কারনেই একের পর এক জঘন্য জঘন্য সব অপরাধ হয়ে যাবার পরেও অপরাধের মাত্রা না কমে দিন দিন বেরেই চলেছে। যার ক্যু বুদ্ধি আছে ও ক্ষমতা আছে সে বিচার প্রক্রিয়াকে ম্যানুপুলেট কড়ছে! অন্যায় ছড়িয়ে যাচ্ছে উকিল থেকে কোর্ট এবং ঘটনাস্থল থেকে ময়নাতদন্ত ও পুলিশ থেকে সাক্ষী পর্যন্ত। কিন্তু দেশে যদি আইনের শাসন থাকতো তাহলে তো এভাবে ছড়াত না এবং অপরাধ অর্থাৎ সব ধরণের অপরাধ কমতে বাধ্য হতো। এই রায় চাওয়ার কাড়নে আমরা আসলে অন্যান্য আরও অনেকগুলো অপরাধকে উপেক্ষা করছি, প্রশ্রয় দিচ্ছি এবং উৎসাহী করছি। যে কাড়নে আমাদেরকে বাড়বার অপরাধির শাস্তির দাবী তুলতে হয়! আশ্চর্যঃ এটা কেন হবে? কেন জনগন দাবী তুলবে আর কেনইবা দাবী তুলেলে পরেই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের নজরে আসবে? কেন এটা স্বয়ংক্রিয় ভাবে রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমের মধ্যে পরবে না? তা হলে কেন আমরা সরকার বানাই, টেক্স দেই? সরকারের কাজ কি? জনগন বলে দিবে তারপর সরকার সেটায় নজর দিবে? তাহলে তো আমি ডান পছন্দ করি আর আপনি বাম আর কেউ উপর তো কেউ নীচে। প্রত্যেকের জন্য আলাদা আলাদা আইন, ব্যবস্থা ইত্যাদি হবে? আমরা এটাই চাই? নিশ্চয়ই তা চাই না কিন্তু এটাই চলছে দেশে। এই অসহনীয় দুরব্যাবস্থার জন্য কি আমরা দায়ী না? আসেন আমরা আইনের শাসন চাই। এটা প্রতিষ্ঠিত হলে এই জঘন্য অপরাধের রায় মৃত্যুদণ্ডই হবে কাড়ন এটা আইনেই আছে। আমাদের চাইতে হবে না…… it will be ultimate consequence. একটু চিন্তা করি, একটু গভীর ভাবে ভাবি। খুব প্রয়োজন আমাদের আত্ম সমালচনার এবং আত্ম শুদ্ধির।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে শুনতেই হবে এ আর্তনাদ কারণ তিনি প্রথমতঃ একজন নারী এবং দ্বিতীয়তঃ তিনি একজন কন্যা সন্তানের জননী। আপনি পারলে এ সব ক্ষেত্রে দ্রুত আইনের মীমাংসা করতে পারেন। দ্রুত ফাঁসি কার্যকর করতে পারেন।