ফুলেশ্বরী প্রিয়নন্দিনী: তাড়াহুড়ো করে ফ্ল্যাটের দরজা লক করতে গিয়ে চাবি, মোবাইল ছিটকে পড়ে গেলো। প্রায় পৌনে ৮ টা বেজে গেছে। ৯টার মধ্যে অফিসে না পৌঁছালে শারমীন আপার কঠোর জেরার মুখোমুখি হতে হবে। রেগে গেলে মুখে যা আসে তাই বলেন তিনি। এই যেমন সেদিন মিটিঙে বলে বসলেন, “কাজের বুয়া আর তোমাদের মধ্যে তো কোনো পার্থক্য দেখছি না! হাইলি পেইড, অথচ কোনো আউটপুট নেই! ভেরী ডিসঅ্যাপয়েন্টিং!”

জরুরি মিটিং আছে আজ। সারা বছরের পারফরমেন্স রেটিং জানানো হবে। অনেক বাধা সত্ত্বেও বিভা দায়িত্বে অবহেলা করেনি। তবু সে ভালো কিছু আশা করতে সাহস পায় না। রাগে গনগন করছে বিভার চোখ-মুখ। সকাল থেকে যত তাড়াহুড়ো করছে,ততোই যেন দেরি হয়ে যাচ্ছে। মোবাইল, চাবি, কোনোমতে মেঝে থেকে কুড়িয়ে ঠিকঠাক না দেখেই ব্যাগে পুরে নেয় সে। দাঁতে দাঁত চেপে বিড়বিড় করে, “এমন মরার ঘুম যে দরজাটা বন্ধ করার জন্যও উঠতে পারে না!”
রাস্তায় নেমেও আরেক যুদ্ধ। মিনিট বিশেক সিএনজিওয়ালাদের ভাড়া-মিটার নিয়ে নিত্যকার টালবাহানার পর অবশেষে এক নবাব রাজী হলেন। তাও শ্যামলী থেকে গুলশান -২, তিনশ পঞ্চাশ টাকায়! উপায় নেই দেখে অগত্যা উঠে বসে বিভা।
সাত সকালবেলাতেই মুখে ক্লান্তি, দু:শ্চিন্তা আর বিরক্তির ছাপ স্পষ্ট। অন্যদিন প্রতিবেশী মলি আপার সাথে শেয়ারে চলে যায়।
মলি আপা একটা আন্তর্জাতিক সংস্থায় কাজ করেন। মাতৃত্বকালীন ছুটিতে গেলেন সবে। গত সপ্তাহে ধানমণ্ডির এক ক্লিনিকে দ্বিতীয় সন্তানের মা হয়েছেন। এখনো দেখতেই যাওয়া হলো না। গিফটও তো কিনতে হবে। চাকরি -সংসার-বাচ্চা সামলে আর সামাজিকতা হয়ে ওঠে না আজকাল। নাহ্, তবু একবার যাওয়া উচিৎ। রোজই ভাবে আজ না কাল…
ব্যাগ থেকে টিস্যু বের করে নিয়ে চেপে চেপে ঘাম মোছে বিভা। সিএনজি ড্রাইভারটাকে মোটেও সুবিধার লাগছে না। সাইড মিররে একটু পরপরই বিভার দিকে তাকিয়ে থাকে। অস্বস্তি হতে থাকে বিভার। কিন্তু লোফারটার কোনো লজ্জাই নেই! জ্যামে থেমে থেমে চলছে সিএনজি। এবার খেয়াল করে ড্রাইভার সিগারেট টানছে। মেজাজ আরো বিগড়ে যায় বিভার। তবু শান্ত আর ঠাণ্ডাভাবে বলে,” সিগারেটটা ফেলেন না! এগুলো তো বিপদজনক ভাই!” দুইবার বলার পর অনিচ্ছা সত্ত্বেও সিগারেটটা ফেলে দেয়।
বাংলা সিনেমার কুখ্যাত ভিলেনের চাহনিও হার মানবে ওই বজ্জাতটার তাকানোর কাছে। টেনে এক চড় দিতে ইচ্ছে হলো বিভার।
হঠাৎ খেয়াল হয়, ফোনটা তো ঠিকঠাক জোড়া দিয়ে ওপেন করা হয়নি! ফোন বের করে ঠিক করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে সে। ওপেন করা মাত্রই মিস্ড কল এ্যালার্টে চারটে কল। সব অফিস থেকে। কেলেঙ্কারি হয়ে গেল আজকে। এভাবে চাকরিটা চালিয়ে যাওয়া মুশকিল হয়ে পড়ছে। বাড়ি থেকে ন্যূনতম সহযোগিতা তো থাকা দরকার! শুভ’র কাছ থেকে তেমন কোনো সাপোর্টই পায় না সে আজকাল। সংসারে নিজেকে কেমন “টেইকেন ফর গ্র্যান্টেড” মনে হয় ইদানীং।
ক্যারিয়ারের প্রতি বরাবরই উদাসীন বিভা। চাকরিটা সে নিতান্তই সংসারের প্রয়োজনে করে। শুভ এখনো গা ছাড়াভাবেই চলে। পারিবারিক ব্যবসায় ইচ্ছেমতো সময় দেয়। তার চেয়ে বেশি সময় দেয় বন্ধুদের আড্ডায়। প্রায়শই রাত করে বাড়ি ফেরে। তাদের একমাত্র মেয়ে দ্যুতির বয়স এখন ৭ পেরিয়েছে। বাসার কাছেই একটা বাংলা মাধ্যম স্কুলে পড়ে। ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ানোর সাধ্য বিভার নেই, তা নিয়ে আক্ষেপও নেই।
আসলে সংসারের শুরু থেকেই শুভ’র কাছে বিভা অনেক বেশি কিছু কখনো চায়নি। ভালোবেসে বিয়ে করেছিলো ওরা। বিয়েতে শুভ তাকে একটা নতুন শাড়ি পর্যন্ত দেয়নি, দিতে যে হয় তাও ভাবেনি। বিভাও চায়নি। শুভ’র পরিবারে সে মানিয়ে নিতে চেষ্টা করেছে সাধ্যমতো। ওনারা সবাই দূরে থাকলেও আসা-যাওয়া করে নিয়মিত। ছোট ভাই-বোনদেরকেও খুব সহজেই আপন করে নিয়েছিলো। কিন্তু তার শাশুড়ি একজন অদ্ভুত ধরনের জটিল মানুষ।
মুখে মিষ্টি মিষ্টি কথা বললেও বিগত দশটা বছরে বিভা আর শুভ’র ব্যক্তিগত জীবনটা তিক্ত হয়ে গেছে ওনার কূটকচালে। যখনই শুভ’র সাথে বিভার সম্পর্কটা একটু ঠিকঠাক চলে, কোথা থেকে যে কী কানপড়া দেন উনি! মুখ ভার করে ঘুরে বেড়ান।
একবার তো দ্যুতির দুষ্টুমি নিয়ে নালিশ করে মধ্যরাতে শুভকে তাতিয়ে তুলেছিলেন। যে শুভ কোনোদিন বিভার বাচ্চা মানুষ করা নিয়ে একটা প্রশ্নও তুলতে পারেনি, সে কিনা দুম করে বলে বসলো, ” কীরকম বাচ্চা মানুষ করো যে বাচ্চা সারাদিন কথা শোনে না?” আহত কন্ঠে বিভা বলে,”আমি তো সারাদিন অফিসে থাকি শুভ! মা না থাকলে বাচ্চারা তো ওরকম একটু-আধটু বিরক্ত করেই বলো?”
– “যারা অফিস করে তারা তো আর বাচ্চা মানুষ করে না তাই না? অফিস তো তুমি একাই কর!”
-“তুমি তো এভাবে আগে কখনো বলতে না! আজ হঠাৎ কী ব্যাপার শুভ?” – তার এই কথায় শাশুড়ি রাহেলা খাতুন কান্নাকাটি জুড়ে দেন- ” কী বলতে চায় আমি বুঝি না?” না পেরে বিভা বিরক্ত মুখে বলে,”আপনি কেন আমাদের মধ্যে কথা বলছেন মা?”
-আর এক মুহূর্তও থাকবো না আমি বাবা। তুই এখনই টিকিট কাট, আমি বাড়ি যাব। এই অপমানের পর থাকা যায় না।”
এবার শুরু করে শুভ- “আমিও তোমার সাথে যাবো, মা, তার আগে দেখো কী করি – মেয়েমানুষ আর ঢোল দুটোই পিটানোর উপর রাখতে হয়, নাইলে ভালো থাকে না- মায়ের অপমানের শোধ তুলতে হিংস্র জানোয়ারের মতো অতর্কিতে বিভার ওপর চড়াও হয় সে! ঘটনার আকস্মিকতায় অপমানিত, বিধ্বস্ত বিভা রাগে- দুঃখে-ক্ষোভে বোবা হয়ে যায়। রাহেলা খাতুন চোখ মুছে ফজরের নামাজ পড়ে উঠে বলেন, “দুটো পরোটা বেলে দেবো, বাপ?”
শুভ আর তার মা খুব ভোরে দেশের বাড়িতে রওনা দেয়। পনেরো দিনেও হদিস নেই শুভ’র।
ব্যথায় নীল হয়ে বিভা কোনোরকমে শারমীন আপার সামনে গিয়ে বসে। স্থির দৃষ্টিতে বলে, “আপা, ছুটিটা আমার লাগবে।”
শারমীন আপা সেই প্রথম কোনো প্রশ্ন না করে ছুটিটা এ্যাপ্রুভ করেছিলেন। ডাক্তার দেখিয়ে সাত দিনের অসুস্থতাজনিত ছুটি নিতে হয় বিভাকে।
মায়ের চোখের মণি শুভ ষোলো দিনের মাথায় বাড়ি ফিরে ভাবটা দেখায় যেন কিছুই হয়নি! এরপর প্রায় ছয়টি মাস বিভা শুভ’র কাছাকাছি আসতে পারেনি- মন এবং শরীর কোনোটাই সাড়া দেয়নি। একরাতে শুভ জোর করতে শুরু করলে কান্নায় বালিশ ভিজে যায় বিভার, শুভ’র অবশ্য সেদিকে খেয়াল করার সময় ছিলো না..
বিভা কেবলই ভাবে, এমন ব্যক্তিত্বহীন, বিবেকবর্জিত ছেলেরা বিয়েই করে কেন তবে?
সেই ভোর সাড়ে ৫টায় ঘুম ভাঙে বিভার। ছুটা খালাটা আসে সাতটায়। তার আগে স্নান সেরে বিভাকে কিচেনে ঢুকতে হয়। দ্যুতির জন্য নাশতা, টিফিন গোছায়। খালা এসে রুটি বানালেও ভাজি, তরকারি, ডিমের অমলেট, সুজির হালুয়া বিভাকেই করতে হয়। কারণ শুভ তার হাতের রান্না ছাড়া খায় না। মেয়েকে স্কুলের জন্য তৈরি করে সোয়া ৭টার মধ্যে হাঁপাতে হাঁপাতে ফেরে। তারপর অফিসের জন্য তৈরি হওয়া, রোজকার যুদ্ধ।
শুভর যেদিন ‘মুড’ থাকে সেদিন পৌঁছে দেয় মেয়েকে। যেমন- আজকে বিভার মিটিং আছে, শুভ দ্যুতিকে দিয়ে এলে খুব হেল্প হতো তার। কিন্তু গতরাতে বন্ধুদের আড্ডা থেকে ড্রাংক হয়ে ফিরেছে শুভ। মাঝ রাত্তিরে বমি করে ঘর ভাসিয়েছে। মেয়েকে নিয়ে পাশের ঘরে ঘুমিয়েছে বিভা। উৎকট গন্ধে দম বন্ধ হবার উপক্রম।
সকালে খালা আসেনি। ফোন করে বন্ধ পাওয়া গেল। দুইদিন পরপর ফাঁকিবাজি। চাকরি এরাই করে বটে!
এতোসব ম্যানেজ করে মেয়েকে স্কুলে রেখে ঊর্ধ্বশ্বাসে ছোটে বিভা, যেন মানুষ নয়, রোবট একটা। ঘুমন্ত শুভকে বারবার শুধু বলে এসেছে যেন মেয়েকে সময়মতো আনতে যায়। এই দরকারটুকু না থাকলে হয়তো কথাই বলতো না বিভা। মেয়ের জন্য কত কী যে মেনে নিতে হচ্ছে তাকে!
মধ্যরাতে শুভ’র অসভ্য আচরণে অতিষ্ঠ হয়ে সে শুধু বলেছে, “কাল সকালে আমার অফিস শুভ! মেয়েটা স্কুলে যাবে। তুমি কী মানুষ?”
বেসামাল শুভ অবজ্ঞা ভরে বলে, “করো তো একটা বা*র কেরানির চাকরি, তার আবার এতো কথা।”
বিভা খুব ভালো করেই জানে সে যথেষ্ট মর্যাদাসম্পন্ন একটি চাকরি করে, এসবই তাকে হেয় করার উদ্দেশ্যে বলা। ঘৃণায় গা গুলিয়ে ওঠে তার- “ছিঃ! তোমাকে আমি ভালোবেসে বিয়ে করেছিলাম! এই কেরানির চাকরিটা তো সংসারের প্রয়োজনেই লাগে, বলো?”
বিদঘুটে হাসিতে ফেটে পড়ে শুভ- “তোর ওই দুই পয়সার বেতন কী কাজে আসে রে? সব তো মাসের দশ তারিখেই শেষ- বাকী বিশটা দিন কী তোর বাপের টাকায় চলে??”.. ঠা ঠা ঠা করে হাসে – মাতালের হাসি। মেয়েকে জড়িয়ে বাকি রাতটুকু থেকে থেকে ডুকরে কাঁদে বিভা। রাতের গভীরে এই শহরের ইট-কাঠ পাথরের নিচে চাপা পড়ে যায় সেই কান্না। শুভ’র সাথে এভাবে কতদিন এক ছাদের নিচে থাকতে পারবে সে জানে না।
– ” ও আপা নামবেন কই?” সিএনজি ড্রাইভারের কথায় সম্বিত ফেরে বিভার। চোখে কী জল এসে পড়েছিলো নাকি?- ভাবার সময় পায় না।- “এই তো গোল চক্করের বামে রাখেন, রাখেন ভাই।”…
লিফটে উঠে ইলেভেনে চাপ দেয় বিভা। ৯টা ২৩ বাজে। সাড়ে নয়টায় মিটিং শুরু। প্রস্তুতি নেবার বিন্দুমাত্র সময় নেই। ইস্! লিফটটাও বুঝি স্লো উঠছে আজকে!!
ডেস্কে ব্যাগ রেখে আশেপাশে চোখ বোলায় বিভা। ডাস্টার হাতে পিয়ন ইউসুফ দন্ত বিকশিত হাসি দিয়ে বলে,” গুড মর্নিং আপু, সবাই তো কনপ্রেন্স রোমে (কনফারেন্স রুমে)। শুধু মিতালী আপু আসেনি, ওনার ছেলের বলে জ্বর। জহির স্যারকেও দেখি নাই। চা দিব নাকি আপু?”
বিভা তার ডেস্ক থেকে দ্রুত হাতে নোটবুক, পেন আর দরকারি কয়েকটা কাগজ নিতে নিতে বলে, “মিতালী আসেনি? চা মিটিঙে দিয়ে দিও।”
কনফারেন্স রুমের দিকে যেতে যেতে কামিজ, ওড়না টেনেটুনে ঠিকঠাক করে নেয়। সকাল থেকে যা যুদ্ধ, সুতির জামায় ভাঁজ পড়ে গেছে।
যাক বাবা! শারমীন আপা তখনো ঢোকেননি। আজকাল একটু আগে আগে এসে নিজের রুমে বসে পাউডার পাফ, লাইনার, লিপস্টিক লাগাতে আধঘণ্টা সময় নেন প্রায়ই। বোধহয় বাসায় কোনো ঝামেলা হয়েছে আবার।
মাকসুদ ভাই, রুবানা, শোয়েব, ফারহানা, তাসনিম, সুমনা, পরাগ,নায়লা আপা – সবাই একসাথে হৈহৈ করে উঠলো “গুড মর্নিং, কী ব্যাপার? ম্যাডামের দেরি কেন?”.. শোয়েব নিচু গলায় এক লাইন গেয়ে দেয়-“জাগরণে যায় বিভাবরী “… ” নিশ্চয় পি আর এর টেনশনে ঘুম হয়নি?”
বাড়ি-ঘর-অশান্তি ভুলে এতোক্ষণে হেসে ফেলে বিভা। কাজের চাপ থাকলেও সন্ধ্যাবধি এখানেই সব দুঃখ খানিকটা ভুলে থাকা যায়। মাঝে শুধু বাচ্চাটার একটু খবর নিতে হবে ফোনে, আল্লাহ্! খালা যেন দেরিতে হলেও আসে। শুভ যেন সময়মতো আনতে যায় দ্যুতিকে।
শারমীন আপা ঢুকলেন, সাথে তার দাপুটে হাইহিল আর দামী পারফিউমের অভিজাত সৌরভ।
– ” গুড মর্নিং! সবাই এসেছে? বিভা,তোমার ফোন সুইচড অফ্ – ভেরি ননপ্রফেশনাল”।
হন্তদন্ত হয়ে জহির ভেতরে আসার অনুমতি চায়। শারমীন আপা ঘড়ির দিকে তাকিয়ে কিছু বলার আগেই জহির আমতা আমতা করে – “সরি, মানে রাস্তায় কঠিন জ্যাম, পৌঁছাতে পারবো ভাবি নাই..”
শারমীন আপা যথারীতি তাকে অপদস্থ করে বলেন, “পৌঁছাতে পেরেছো – শুড আই বি গ্রেইটফুল ফর দ্যাট?”..
“এনি ওয়ে, বিভা, মিতালী আজকে আসবে না বলেছে, মিটিং শেষে ওকে কল দাও। পি আর এর মিটিং এর দিন আসবে না, এটা কেমন কথা!”..
বিভার দিকে তাকিয়ে স্মিত হেসে, “আই হোপ, ইউ আর গোয়িং টু গেট আ গুড নিউজ! লেটস সি”..
বিভার চোখে আনন্দে জল আসতে চায়। কানে অবিরাম বাজতে থাকে, “করো তো একটা কেরানির চাকরি”… কেন যেন আর কষ্ট হয় না, মনে হয়, থামলে চলবে না। কেরানির চাকরিই তার মুক্তির পথ। কানে তুলো আর পিঠে কুলো দিয়ে এই চাকরি তাকে করতে হবে – দ্যুতির জন্যে, তার নিজের জন্যে।
ভীষন সুন্দর লিখেছেন। সেই তো! থেমে গেলেন তো হেরে গেলেন!