মেয়েটি কালো, তিনি মৃদুভাষী

সাবিনা শারমিন: আমাদের সমাজে গায়ের রং নারীকে মূল্যায়নের ক্ষেত্রে এখনও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দাদী-নানী বা শ্বশুর বাড়ীর লোকজনের কাছে বর্ণভিত্তিক মূল্যায়ন শুনলে অতোটা আক্ষেপ লাগে না,যতোটা লাগে একজন উচ্চশিক্ষিত মানুষের কাছ থেকে শুনলে। অনেক শিক্ষিত, রুচিশীল মানুষের কাছে এখনো নারীর যোগ্যতা যাই হোক না কেন, আসল যোগ্যতা হয়ে যায় গায়ের রং।

jolley
আকতার জাহান

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আত্মাহুতি দেয়া শিক্ষক আকতার জাহানের স্মৃতিচারণের ক্ষেত্রেও তাঁর গায়ের রং উল্লেখযোগ্য বিষয় হিসেবে স্থান পেয়েছে সহকর্মী, কাছের মানুষের লেখায়। অথচ গায়ের রং কোন অর্জিত বিষয় নয়। একজন শিক্ষক গায়ের রঙ দিয়ে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান না। নারীর প্রতি এই অসম্মানে হাহাকার লাগছে।

গত ১২ সেপ্টেম্বর উইমেন চ্যাপ্টারে প্রকাশিত কাবেরী গায়েন এর ‘আকতারর জাহানের সুইসাইড নোট’ লেখাটি তাঁর অন্যান্য লেখার মতোই গুরুত্ব নিয়ে পড়েছি। নারী নিপীড়নের প্রতিবাদে যে ক’জন অগ্রগামী লেখক আছেন, তাঁদের মধ্যে তিনি একজন। এ কারণে অন্যান্যদের তুলনায় তাঁর কাছে আমাদের প্রত্যাশাও অনেক বেশী। সে পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর প্রতি সম্মান রেখেই কয়েকটি বিষয়ে যৌক্তিক আলোচনায় যেতে চাই।

লেখাটিতে তিনি আকতার জাহানের বিবরণ দিয়েছেন ‘গভীর বাদামী চোখের এই ‘কালো’ মেয়েটি …’ বলে, আর তানভীর আহমেদকে বলেছেন, ‘তিনি মৃদুভাষী’। যদিও কালো শব্দটিকে তিনি কমার মধ্যে রেখে তা ‘তথাকথিত’ বা এটি তার নিজস্ব মত নয় বলে দাবি করতে পারেন, তারপরেও এই নেতিবাচক শব্দটি ব্যবহারের দায় তিনি এড়াতে পারেন না। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী বা সহকর্মী হিসেবে আকতার জাহান কতোটা মেধাবী ছিলেন তা তিনি উল্লেখ করেননি। ‘কালো’ বলা তাঁর সাংস্কৃতিক দর্শনে অন্যায় মনে না হলেও, যার গায়ের রং প্রকৃতপক্ষেই কালো, তাকে কালো বলা বর্ণবাদী আচরণের বহিঃপ্রকাশ।

বোঝা যাচ্ছে, কালো-ধলার বিষয়টি আমাদের শেকড়ের সাথে মিশে আছে, যা বলতে না চাইলেও বের হয়ে পড়ে। উন্নত দেশে নিগ্রোদের কালো বলা যায় না। তাদেরকে কালো বলা অন্যায় এবং ঝুঁকিপূর্ণ। ‘কালোদের বুদ্ধিভিত্তিক অবস্থান সাদাদের চেয়ে নিচে’ এমন মন্তব্য করে ১৯৬২ সালে চিকিৎসায় নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক জেমস ওয়াটসন চাকরি হারিয়েছিলেন। বেঁচে থাকার জন্য তাকে নিলামে উঠাতে হয়েছিল নোবেলের সোনার পদকটি।

আকতার জাহানের সাবেক স্বামীর গায়ের রঙ কালো হলে নিশ্চয়ই এ নিয়ে তেমন কোন কথা হতো না। কারণ তিনি পুরুষ।
লেখাটিতে তিনি জলি-তানভীরের সাথে তাঁর ঘনিষ্ঠতার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন এবং কারও ব্যক্তিগত বিষয়ে আগ্রহ না থাকার কথাও জানিয়েছেন। কিন্তু একথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে ব্যক্তিগত সম্পর্কের টানাপোড়েন যখন সমাজের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে তখন ব্যক্তিগত বিষয়টি আর ব্যক্তিগত থাকে না। বিষয়টি সামাজিক হয়ে যায়। আর তাই সমাজে প্রতিনিধিত্বকারী ব্যক্তিদের সে ক্ষেত্রে একটি ভূমিকা পালন করা জরুরি হয়ে পড়ে।

তিনি ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে সময় টেলিভিশনের একটি অনুষ্ঠানের কথা এনেছেন। যেখানে তানভীর আহমেদ তাঁর ছেলের সাথে ‘প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ক’ একটি অনুষ্ঠান একসাথে দেখেছেন বলে ভালো লাগার কথা জানিয়েছেন। এই ঘটনাটি বলে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন বাবা হিসেবে তানভীর কতোটাই আধুনিক,দায়িত্বশীল। এতে তানভীর আহমেদ এর প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ পেলেও জলির প্রতি সহমর্মিতার খানিকটা অভাব আছে বলেই মনে হচ্ছে।

Sabina Sharmin
সাবিনা শারমিন

আত্মাহুতি দেয়া আকতার জাহানকে তিনি যতোগুলো প্রশ্ন করেছেন, জীবিত তানভীর আহমেদ এর দ্বিতীয় বৈবাহিক জীবন এবং সন্তানের গলায় ছুরি ধরার বিষয়ে তিনি তেমন আলোচনায় যাননি। খুব সূক্ষ্মভাবে তিনি তানভীর আহমেদ এর একরকম প্রশংসাই করেছেন, সম্ভবত এজন্য যে, এতে সন্তানের গলায় ছুরি ধরার বিষয়টি কম গুরুত্ব পাবে। তিনি বলেছেন ”যে তানভীর ভাইকে চিনি বলে মনে করতাম সেই ব্যক্তির সাথে এইসব অভিযোগ, সত্যি বলতে, মেলাতে পারি না।” মেলাতে না পারাটিই স্বাভাবিক। একজন মানুষকে স্ত্রী-সন্তানের চেনা এবং সহকর্মীর চেনা এক কথা নয়।

মানুষ যখন সাবেক স্ত্রীর সামনে নবাগত স্ত্রীকে নিয়ে দাপ্তরিক কাজকর্ম করেন, তখন সাবেক স্ত্রীর মনস্তাত্ত্বিক অবস্থাটি কেমন হয়, সেটি বুঝতে মনোবিজ্ঞানী হতে হয় না। আকতার জাহানের জুনিয়র সহকর্মীর সাথে প্রেমের গুঞ্জনের কথা কাবেরী গায়েনের কানে এলেও, তানভীর আহমেদ এর দ্বিতীয় বিয়ে সম্পর্কে তিনি কোন প্রশ্ন তোলেননি। বরং তিনি বলেছেন চার বছর পর বিয়ে অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু চার বছর পর আত্মাহুতি তার কাছে অস্বাভাবিক। মনে রাখতে হবে যে এরা একদিকে যেমন সাবেক স্বামী- স্ত্রী, অন্যদিকে তেমনি সহকর্মীও। তাই ব্যক্তিগত সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হলেও কর্মক্ষেত্রের সম্পর্ক কিন্তু বিচ্ছিন্ন হয়নি।

আকতার জাহান ও তানভীর উভয়ের ছাত্রী সোমা দেবকে বিয়ে, সাবেক স্ত্রীকে ডিভোর্স এবং নতুন সংসার করতে কতোটা সামাজিক এবং ধর্মীয় চাপ তানভীরকে অতিক্রম করতে হয়েছে সেটি বুঝতে খুব বেশী বেগ পেতে হয় না। ছাত্রী সোমা দেব, তার অতীত, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক পদে তার যোগদান এবং কর্মস্থলের ত্রিমুখী জটিলতার বিষয়ে আলোকপাত না করে নতুন বিয়েতে অভিনন্দন না জানাতে পেরে আফসোস করছেন তিনি। অথচ আকতার জাহানের ঘর ভাঙ্গার বিষয়ে তিনি তেমন আফসোস করেননি।
আকতার জাহানের আত্মহত্যার পর তানভীর নিজের ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে অনেকটাই নিজের গা বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন। তাঁর এই ফেইসবুক স্ট্যাটাস অনলাইন মিডিয়াতে তির্যক সমালোচনাসহ প্রকাশিত হয়েছে।

তানভীর আহমেদ লিখেছেন, আকতার জাহান ছাত্রছাত্রীদের কাছে ছিলেন একজন মাতৃতুল্যে অভিভাবক। স্বাভাবিকভাবেই একটি প্রশ্ন জাগে – তাঁরই স্বামী হয়ে আপনি কেনো একজন সাবেক ছাত্রীর কাছে পিতৃতুল্য না হয়ে, স্বামীতুল্য হয়ে গেলেন? তানভীর আহমেদ এর দ্বিতীয় স্ত্রীর আবির্ভাব সম্পর্কে শাহাজাদী সুলতানা নামের একজনের মন্তব্য উল্লেখ করতে চাই।

তিনি লিখেছেন ‘একটা অংক মিলছে না। আপনার ভাষ্যমতে, ম্যাডামের সাথে সমস্যা শুরু হয়েছিল ২০১০ সালে ম্যাডামের কারণে। তো আপনার বর্তমান বউ তো ২০১০ এর অনেক আগেই পাস করে চলে যাওয়ার কথা। তাইলে পাইলেন কেমনে? অ্যারেঞ্জড ম্যারেজ বুঝি? আপনারা অনেক জ্ঞানী! তাই বলে আমরা কী অনেক বোকা?’ কাবেরী গায়েন, এই অংকের হিসেব আপনার কাছে আছে কি?
যারা সমাজে প্রতিনিধিত্ব করেন তাঁরা সাধারণ মানুষের ব্যথা বেদনার কথা বুঝবেন এবং তাঁদের অধিকারের কথা বলবেন সেই আশাতেই সাধারণ মানুষ তাঁদের সমর্থন দেয়। আমাদের সমাজে এমন অনেক লোক আছে যারা ন্যায়-অন্যায় না দেখে কারো সাথে সুসম্পর্কের কারণে সত্য কথা বলতে চায় না। অনেকে নিরপেক্ষতা হারায় সম্পর্ক হারানোর ভয়ে।

আকতার জাহান জলি আত্মহত্যা করে জীবন যুদ্ধে হয়তো হেরে গিয়ে পালিয়ে বাঁচতে চেয়েছেন, কিন্তু ভালো মানুষের মুখোশ পড়ে নিজেকে আড়াল করতে চাননি। বরং তিনি অনেকের সাদা রং এর নীচে ঢাকা পড়ে থাকা কালো রূপটিই উন্মোচন করে গেছেন। তিনি হেরে গেছেন নাকি তাকে জোর করে হারানো হয়েছে, তার সঠিক তদন্ত এখন খুব জরুরি। এতে প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটিত হবে, আর যারা নির্দোষ তারা সন্দেহে থেকে মুক্তি পাবে।
[email protected]

শেয়ার করুন:

Saying a black person black or white person white is quite ok in developed countries like USA or Canada. The writer is absolutely ignorant about that fact when she said: উন্নত দেশে নিগ্রোদের কালো বলা যায় না। You cannot use the “N” word though which this ignorant writer ironically used to mention the black people. Simply ridiculous.

Perhaps you are wrong and the writer is correct as far as the connotation of N-word is concerned. Here is the meaning for you from dictionary. Engage in a debate when you know someting well.
N-word
noun
informal
used instead of or in reference to the word “nigger” because of its taboo nature.
“I can’t believe he used the N-word in front of her”

I disagree with writer where she says mentioning someone’s skin colour is derogatory. No, it is not. It is just a colour black is another colour like pink, blue. White or purple. There is nothing wrong in mentioning someone’s skin colour while describing that person, because we do come in different colour! It is the stigma attached to it, it is how we use it and how we look at it.