আমি তো বেঁচে আছি এখনও

আরজু আলফা: যেকোনো মায়ের অস্বাভাবিক মৃত্যুই আমাকে কষ্ট দেয়। অধ্যাপক আকতার জাহান জলির আত্মহত্যা আমাকে সারারাত ঘুমাতে দেয়নি। আমি জলি আপা-কে চিনতাম না, কিন্তু একজন মা-কে আলাদা করে চিনতে হয় না। আমি জানি ও আমার মতোই- সন্তানের হাসিতে ও হাসে, সন্তানের চোখের জলের সাথে ও কোনো সমঝোতা করতে পারে না. আমার কাছে সব মা এমন। কেন ও আত্মহত্যা করলো- আমি গত রাতে ওকে জিগ্যেস করেছিলাম- আপা নির্বাক, কিন্তু কী জীবন্ত দুইটা চোখে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হেসে গেলো। আমি আর পারি নাই।  

akter-jahanমনে হলো – আপার কি যাবার কোনো জায়গা ছিলো না, ও কি কোনো অসাধারণ বোন (তোমাদের নামগুলো বলতে পারলে ভালো লাগতো। কিন্তু আমি জানি আমি যাদের কথা লিখেছি – ওরা জানে আমি কতোটা কৃতজ্ঞ ওদের কাছে..!) পায়নি? কিংবা বন্ধু – যার সাথে ও কথা বলবে- নিজের কষ্ট ভাগ দিবে, চিৎকার করে কাঁদবে- জড়িয়ে ধরবে। কিংবা বলবে “আমাকে সাহায্য করো- আমি বাঁচতে চাই, আমার ছেলেকে বুকে নিয়ে।”

সারারাত আমি – ফেইসবুকে তানভীর আহমেদ প্রবাল, সোমা দেব (ওকে আমি চিনতাম – সাংবাদিকতার সুবাদে), মাহফুজ মিশুসহ যারা জলি আপাকে নিয়ে লিখছেন- সবার প্রতিটি কমেন্ট আমি পড়েছি- পাগলের মতো পড়েছি। অনেক কিছুই জেনেছি- শুধু জানা হয়নি- আপার কী কোনো বন্ধু ছিল না?

আমার জীবনের একটা প্রাসঙ্গিক ঘটনা দিয়ে শুরু করি। ২০০৭ সালে আমি অন্তঃসত্ত্বা। আমার তখন স্বামী-সংসার-ক্যারিয়ার সব নিয়ে দারুণ সময়, কারণ অনেক। দীর্ঘ যুদ্ধের প্রায় অবসান। অার্থিক, সামাজিক ও পারিবারিক যুদ্ধ। অসময়ে বিয়ে করে প্রথম সন্তান নিয়ে আমি অনেক হিমশিম খেয়েছি। সেই প্রসঙ্গে অন্যদিন লিখবো। আজকে যে বিষয়ের জন্য আমার এই প্রচেষ্টা- সেটা বলি।

সেই ২০০৭ এর শেষের দিকে আমি টের পাচ্ছিলাম আমার সংসার দুলছে, অন্য একজন দুলাচ্ছে। আমার পাগলপ্রায় অবস্থা। কী করবো! আমার স্বপ্নের সংসার। আমি খুব সংসার ভালোবাসি। অনেক কষ্ট করে সংসার সাজিয়েছি নানা রঙে, খুব কষ্টের আর ভালোবাসার সংসার আমার। পরিবার, সমাজ, সংসারকে থোড়াই কেয়ার করে গড়ে তুলেছিলাম সেটা।

একের পর এক মিথ্যে আমার সামনে- কোনটা কীভাবে সামাল দিবো জানি না। আমি একজন অতি সামান্য ঘরে জন্ম নেয়া মানুষ। আমার সামনে সংসারের যে ছবি তার সাথে আমার বাস্তব জীবনের সংসার মেলে না, কাউকে বলতেও পারি না, ততদিনে বাবার শারীরিক অবস্থা খুব খারাপ। তাই বাবা-মাকে দু:শ্চিন্তার বোঝা দিতে ইচ্ছে করে নাই অথবা আমি আরও সময় নিয়েছি আসল ঘটনা কী বোঝার জন্য।

অন্তঃসত্ত্বা একজন স্ত্রীর সাথে স্বামীর আচরণ কেমন হওয়া উচিত, আমি জানি না? ডাক্তার এর কাছে মাসিক চেক আপ এ কি স্বামীর যাওয়া উচিত? কোনো শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার সময়? স্ত্রীর কিছু খেতে ইচ্ছে করলে কী করা উচিত স্বামীর? আমার খুব কষ্ট হচ্ছে বললে- কী করা উচিৎ স্বামীর? – এই সব যখন আমাকে ভাবায়- তখন অন্য কেউ একজন কাঠি নাড়ে- আমি কষ্ট পাই, চিৎকার করি, চিকিৎসক এর কাছে বললে তিনি বলেন- আপনার স্বামীকে সহযোগিতা করতে হবে। যাক এটা চিকিৎসক এর মতামত। আর আমার স্বপ্ন – আমি যেইরকম সংসার এর স্বপ্ন নিয়ে এই মায়াজাল সাজিয়েছি – সেখানে আমার পাশেই থাকার কথা আমার স্বামীর। কিন্তু ঊনার অনেক অজুহাত আছে, ব্যবসায়ী মানুষ। ঊনার কোনো শুক্রবার নাই, শনিবার নাই, ঊনার রাত নাই, দিন নাই।

Relighion 1কিন্তু আমি যখন ঊনার পকেটে অনুষ্ঠান দেখার ছেঁড়া টিকেট পাই, কয়টা ফোন নম্বর আমি জানি না. ঊনার মেসেজে যখন উম্মা-চুম্মা পাই. কিছুই বলি না। কী করবো, কীভাবে সামাল দিবো তাও জানি না। একের পর এক ফোন নম্বর পাল্টান সেই ভদ্র-মেয়ে – আমার স্বামীর cooperation এ. ট্রেস করতে হিমশিম খাই। তারপর একটি প্রাইভেট টেলিযোগাযোগ কোম্পানির কর্মকর্তাকে দিয়ে ঊনাদের মেসেজ এবং কল দেখে- আমি মুগ্ধ। “ওই সময় না অমুক কাজে ছিল- ওই সময় আমার স্বামীর খুবই জরুরি মিটিং ছিল, মিটিং যে এতো রগরগে হয়- জানা ছিল না..!”   

কী করবো, কীভাবে মন থেকে এই সব তাড়ানো যায়- সুইসাইড করি, ডিভোর্স দেই, সেপারেশন এ থাকি, পুলিশ এর কাছে কমপ্লেইন করি, মাইরা তক্তা বানাই..! এইরকম অনেক স্ট্র্যাটেজি মাথায় নিয়ে ঘুরতাম- কোনটা করবো ভাবতাম আর কেন জানি খুব কান্না পেতো। পাগল আমি – আমি সন্দেহ করি, এই রকম অপবাদ নিয়ে মোটা-মুক্তি বিপর্যস্ত আমি। নানা রকম বিষয় মাথায় চক্কর খায় – পরকীয়া নিয়ে, ডিভোর্স নিয়ে, সেপারেশন নিয়ে রিপোর্টিং করি।

যাই হোক- কিছুতেই কোনো সুরাহা হচ্ছে না. প্রতিনিয়ত বিভিন্ন পারিবারিক অশান্তি। কোনো পারিবারিক বিষয়ে কথা বলতে চাইলেও ঊনার একজন ব্যক্তিগত সহকর্মী আছে- তার সাথে বলতে হবে। প্রতারণা, মানসিক অত্যাচার, মিথ্যা এই সব নিয়ে আমার সংসার তখন।

কী করবো? আমি ভর্তি হয়ে গেলাম নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় এ, মাস্টার্স অফ পাবলিক হেলথ এ।  পড়াশোনা করি। জীবনে কোনোদিন সায়েন্স পড়ি নাই, নতুন এই চ্যালেঞ্জ আমি এনজয় করি, নতুন নতুন টার্ম শিখি। ক্লাস টেস্ট, এসাইনমেন্ট, ক্লাস প্রেজেন্টেশন। যেহেতু আমি ফুল টাইম জব করতাম, তাই শুক্রবার এ ক্লাস করতাম। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত। আবার মা হবো- শরীরে তেমন শক্তি পাই না- কিন্তু মনের শক্তি আমার অনেক।

Womenযাই হোক, এর মধ্যে আমার সন্তান হলো। আমিও কয়েকবার ঝগড়া করে স্বামীর বাড়ি ছেড়ে বন্ধুদের বাড়ি যেয়ে উঠি। কখনো নিজে আলাদা বাসা ভাড়া নেই- নতুন করে সংসার সাজাই। আবার পরিবারের লোকজন ধইরা বাঁইন্ধা- আমাদের এক করেন। কী যে উথাল-পাতাল করা সময় আমার তখন। ঢাকা শহরের ইট-পাথর রাস্তা-ঘাট আমার তখন অসহ্য। আশে-পাশের বন্ধুবান্ধবদের, স্বজনদের আমি জ্বালিয়ে মারি। ঊনি কিন্তু নির্বিকার। কী যে ঠাণ্ডা মাথা ঊনার এবং ঊনার বান্ধবীর।

একদিন ধৈর্য্যের সীমা ভেঙে কল দেই সেই ভদ্র-মেয়েটিকে। আমার নম্বর থেকে কল দিলে ঊনি ধরেন না. তাই একদিন রাত ১২.৩০ মিনিট এ আমার স্বামী যখন ঘরে ফিরে – বাথরুম এ গেছেন। আমি তার মোবাইল থেকে কল দেই – ওই ম্যাডাম কল ধরেন- আমি সাথে সাথে বলি যে, আমি ঊনার স্ত্রী। আপনি কল দয়া করে কাটবেন না, আমার আপনার সাথে কথা বলা খুব জরুরি।  

ঊনি বললেন (খুব সুন্দর করে শুদ্ধ-ভাষায়) – “ওহ ভাবি, আমি আপনার সাথে কথা বলতে চাচ্ছিলাম।” আমি বললাম- আমি ভাবি না, আমার নাম “আ” ।   

ঊনাকে ধন্যবাদ দিয়ে আমি বললাম- আমার স্বামীর সাথে আপনার সম্পর্ক কী? ঊনি বললেন – “ভাবি, জাস্ট ফ্রেন্ডশিপ (খুব সুন্দর করে শুদ্ধ-ভাষায়)।”  আমি বললাম- আপনি কি আপনার সব বন্ধুদের চুমা দিয়া, লাভ ইউ দিয়া, মিস ইউ দিয়া মেসেজ পাঠান? আমার অনেক ছেলে বন্ধু আছে- আমি ওদেরকে এইসব  লিখি না।

এর মধ্যে স্বামী বাথরুম থেকে বের হয়ে- দেখেন ঊনার ফোনে আমি কথা বলছি। যা হবার তাই হলো- গলা ধাক্কা, চিল্লা-চিল্লি, তালাক সব হলো। ঊনি হুমকি দিলেন বাড়ি ছেড়ে চলে যাবার। আমি তাড়াতাড়ি ঊনার বড় আপাদের জানালাম- তারা চলে আসলেন মধ্য-রাতে আমাদের বাসায়। ঊনি আপাদের বললেন- ঊনি থাকতে চান না, আমার সাথে।

পরের দিন আপারা আমাকে নিয়ে পুরান ঢাকাতে এক কবিরাজের কাছে যান – পানি পড়া নিতে। স্বামীকে বশ করার সূরা শিখে আসলাম। আমি পানি পড়া খাওয়াই স্বামীকে – আবার শুরুর আশায়। কিন্তু ঊনারা দুই জন এতো বুদ্ধিমান – বারবার ফোন নম্বর পাল্টায়। এক সময় আমি আর পেরে উঠি না – গেলাম মনস্তত্ত্ববিদ অধ্যাপক মেহতাব খানম এর কাছে। গেলাম জাতীয় মানসিক ইনস্টিটিউট এ।

এর মধ্যে তিনিও স্ট্র্যাটেজি পাল্টে ফেলেছেন। মাসের অর্ধেক সময় তিনি বিদেশ থাকেন। আমি সন্তানদের নিয়ে দেশে। তিনি আসেন – আমি নতুন করে শুরু করতে চাই, ক্ষমা করতে চাই। কিন্তু এই রাস্তা আমার আর শেষ হয় না। আমি হোম কামিং ডে করি- ভালোমন্দ রান্না করি। ঊনি মধ্যে রাতে ফ্লাইট এ বাড়ি ফেরেন। খাওয়া-দাওয়া শেষ করে- ঘুমাতে যান, আমি নির্ঘুম। মনের সন্দেহ যায় না। চুপি চুপি- ঊনার কল লিস্ট দেখি- এইবার আরও চালাক। এমন একটা নামে তার নম্বর সেভ করা- যে আমার মাথায় ঢোকারই কথা না। কিন্তু আমি আবার চালাক কিনা, সেটাও ধরে ফেলি। ওই সিম্বলিক নম্বর দেখে- খুঁজি। ঊনি সেই ম্যাডাম- উম্মা-চুম্মার ছড়াছড়ি।

কী করবো। কী করবো? রাস্তায় রাস্তায় হাঁটি আর কাঁদি- কী করা উচিত? ওর কাছের দুই-একজন বন্ধুকে কল দেই দিনরাত  – বুঝাতে বলি, চিৎকার করি–  কী করবো ওদের জিগাই। কেউ বলে – বিশ্বাসে মেলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর। বিশ্বাস করো, কখনো বলে- থাকতে পারলে থাকো, না পারলে ছাইড়া দাও।

আবার কেউ বলে এই রকম হতেই পারে। মানতে হবে।

কিন্তু আমি কেন কষ্ট পাই, মানতে পারি না, কাজ করতে পারি না, খেতে পারি না, ঘুমাতে পারি না. কোনো কিছুই আর টানে না। সুইসাইড করবো – এমন ডিসিশন নিয়ে ফেলি। কিন্তু আমি ভীতু – একদিন সুইসাইড এর জন্য অনেকগুলা ঘুমের ওষুধ নিয়ে আসি, কিন্তু খাই মাত্র ৬টা – বেশি খেলে যদি বেশি ঝামেলা হয়, তাই কম করে খেয়ে- আরামে ঘুমাতে ঘুমাতে মরতে চাই আমি।

যাক সেই দিন ঘুম ভাঙে দুপুরের দিকে। উঠেই দেখি  – আমার মায়াভরা দুইটা বাচচা আর ছোট্ট কাজের মেয়ে আমার বিছানার পাশে বসে খেলা করছে। সেটা দেখে মনে হলো- ভাগ্য ভালো যে মাত্র ছয়টা খেয়েছিলাম- বেশি খেলে এই সুন্দর দৃশ্যটা আমি দেখতে পেতাম না। উঠেই এই তিনজনকে নিয়ে চলে গেলাম এক বন্ধুর বাসায়।  

তারপর আবার পারিবারিক ফাজলামি- টানাটানি। এক সাথে থাকো, এক সাথে করো, আমি এর মধ্যে ডিসিশন নিয়েছি – বিদেশে কোথাও চলে যাবো। আমার এই দেশ ভালো লাগে না, এই দেশের মানুষ ভালো লাগে না. সবাইকে প্রতারক মনে হয়, মিথ্যুক মনে হয়. ভণ্ড মনে হয়. তাই আস্তে আস্তে যেইসব দেশে মাইগ্রেশন এর অপশান আছে সেই সব দেশে মাইগ্রেশনের জন্য দরখাস্ত করতে থাকি। কোথাও কোনো পজিটিভ উত্তর পাই না। এইবার বিভিন্ন বিশবিদ্যালয়ে দরখাস্ত করতে থাকি। অস্ট্রেলিয়ার একটা ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ মেলে।

কারোর কোন কথা না শুনেই- এক রকম জেদ করে-  দুই বাচ্চার হাত শক্ত করে ধরে- পাড়ি জমাই অস্ট্রেলিয়াতে। আবার জীবন যুদ্ধ শুরু করি- জিরো থেকে। আত্মীয়-পরিজনবিহীন এই মহাদেশে দুইটা বাচ্চা নিয়ে টিকে থাকার যুদ্ধ। অনেকের সহযোগিতা আমি পেয়েছি, সাথে মন ভালো করা মন্তব্য – যেইগুলো জাজরা করে দিতো আমাকে। কেউ কেউ ভাবতো আমাকে বাহবা দিচ্ছে। কিন্তু ওই বাহবা- আমি নিতে জানতাম না, আমার মন ভেঙে যেতো – টিজিং এর মতো শোনাতো।  

এখন আমি সেগুলোও জয় করেছি।   

এখনো যুদ্ধ থামেনি- কিন্তু আমি বেঁচে থাকার আনন্দ পাই। দারুণ লাগে, প্রায় প্রতিদিন নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে টিকে থাকার আনন্দই আলাদা। কী দারুণ এই বেঁচে থাকা। কষ্ট হয়- একা একা দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে- অবশ্যই। কিন্তু আমার সেই সঙ্গী চাই না- যে আমার বিপদে পাশে দাঁড়াবে না- যে আমাকে অসম্মান জানাবে পদে পদে। যে স্ত্রী-সন্তানের কষ্টে নিজেকে পারি না বলে- দূরে দাঁড়িয়ে বান্ধবীরে সান্ত্বনা দিবে (বান্ধবীর মায়ের) অসুস্থতার জন্য, অর্থ দিবে চিকিৎসার জন্য। আর স্ত্রী-সন্তানকে অসহায় অবস্থার মধ্যে ফেলে দূরে বসে বক্তৃতা দিবে।  

তাই বলছিলাম কী, যখন কোনো কিছুই করার না থাকে- সুইসাইড যখন অবশ্যম্ভাবী – আর একবার অন্য-রকম একটা চ্যালেঞ্জ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ুন। শেষ অপশন আপনার হাতে রেখে দিন।  

অল্প বয়সে একা একা বিয়ে করে সন্তানের জন্ম। কেউ পাশে নাই, অর্থ নাই, সমাজ নাই, পরিবার নাই, স্বামীও নাই, কত বিভীষিকাময় সময় কাটিয়েছি- শুধু ভালো থাকবো বলে, সুন্দর একটা সংসার হবে বলে। কিন্তু যেইদিন আমি পারিবারিকভাবে স্বীকৃতি পেলাম, আর্থিক সচ্ছলতা এলো- সেইদিন দেখি – ওই অর্থের ভাগিদার অন্য কেউ।

আমি কিন্তু জীবনে পা পিছলে গেছি অনেকবার  – কিন্তু আমার দারুণ ভাগ্য- আমি অসাধারণ কিছু মানুষ পেয়েছি আমার পাশে, আমার বাবা-মা, ভাবি-বোন, আমার দারুণ দুইটা বাচ্চা, বন্ধু। যাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। যারা আমাকে বেঁচে থাকার হাজার কারণ দাঁড় করিয়েছে – যতবার আমি মৃত্যুর কথা ভেবেছি- তাদের মুখ আমাকে ভালোবাসা দিয়ে আগলে রেখেছে।

নোট: এর মধ্যে আমিও পা পিছলে পরে যাচ্ছিলাম। একজনের সাথে প্রায় সম্পর্কে জড়িয়ে গেছিলাম। আমি যখন অসম্ভব মানসিক কষ্টে- আমাকে একজন উৎসাহিত করতো বেঁচে থাকার, আনন্দ দিতো ভালো ভালো কথা বলে, বেঁচে থাকার রাস্তা দেখাতো, আবার স্বপ্ন দেখাতো। ঊনাকে ধন্যবাদ – বাঁচার রাস্তা দেখানোর জন্য।

শেয়ার করুন:
Copy Protected by Chetan's WP-Copyprotect.