প্রিয় নেতার স্মরণে রবেন দ্বীপে ওবামা

obama-mandela
ছবি: দ্য টেলিগ্রাফ

উইমেন চ্যাপ্টার (৩০ জুন): বর্ণপ্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা যে রবেন দ্বীপের একটি কারাগারের ছোট্ট কুঠরিতে জীবনের ১৮টি বছর পার করেছেন বন্দী অবস্থায়, সেখানেই শ্রদ্ধা জানাতে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। ওবামা তার পুরো আফ্রিকা সফর জুড়েই বক্তব্যে স্মরণ করছেন ম্যান্ডেলাকে, তাঁকে তিনি তার রাজনৈতিক জীবনের ‘হিরো’ বলেও বর্ণনা করেছেন। এই সফরে তাঁর সঙ্গে আছেন স্ত্রী ও দুই মেয়ে।
এমন একটা সময়ে ওবামা রবেন দ্বীপে যাচ্ছেন যখন নেলসন ম্যান্ডেলা তৃতীয় সপ্তাহের মতো জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে হাসপাতালে। শনিবার ওবামা প্রিটোরিয়ায় ম্যান্ডেলার হাসপাতালের কাছাকাছি থাকলেও পরিবারের ইচ্ছা অনুযায়ী তিনি তাঁকে দেখতে যাওয়া থেকে বিরত থাকেন। তবে ম্যান্ডেলার পরিবারের সদস্যদের সাথে দেখা করে তিনি সহানুভূতি জানান। প্রথমে বিমানে করে কেপটাউন ও পরে সেখান থেকে হেলিকপ্টারে করে তার রবেন দ্বীপে যাওয়ার কথা।

এর আগে সিনেটর হিসেবে ওবামা দক্ষিণ আফ্রিকা সফর করলেও এবারই তিনি পুরো পরিবার নিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, তিনি তাঁর মেয়েদের ম্যান্ডেলার বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়াই সম্পর্কে জানাতে চান, শিক্ষা দিতে চান প্রথমে একজন আন্দোলনকারী এবং পরে একজন প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি কিভাবে তার সাবেক বর্ণবাদী সরকারের সাথেই সমঝোতা করে ঐকমত্যের সরকার গড়ে তুলেছিলেন।

শনিবার তিনি সাংবাদিকদের বলেন, তার মেয়েরা শুধু এই শিক্ষাগুলোকে নিজের জীবনে প্রয়োগ করুক, এটাই চান না, বরং ভবিষ্যতের বিশ্ব নাগরিক হিসেবে তাদের দায়িত্বগুলোও তারা বুঝতে শিখুক, এটা একটা বিশাল সুযোগ তাদের সামনে, সেইসাথে সম্মানও।

ওবামা তার এই আফ্রিকা সফরের পুরোটা জুড়েই ম্যান্ডেলা সম্পর্কে বলছেন, প্রশংসা করছেন দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক এই প্রেসিডেন্টের মানসিক সাহসের। ওবামার হোয়াইট হাউসে প্রবেশের সাথে ম্যান্ডেলার লড়াইয়ের অনেক মিল খুঁজে পাচ্ছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, দুজনই তাদের নিজ দেশে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রতীক, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী। ওবামা ১৯ বছর বয়সে কলেজ ছাত্র হিসেবে প্রথম বর্ণবাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক র‍্যালিতে অংশ নিয়েছিলেন।

এদিকে, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা ওবামা এবং ম্যান্ডেলা সম্পর্কে বলেছেন, দুজনই লাখ লাখ আফ্রিকান মানুষের স্বপ্ন বহন করছেন এবং অত্যাচারিত, নিপীড়িতের পথপ্রদর্শক তারাই।

রোববার আরও পরের দিকে কেপটাউন ইউনিভার্সিটিতে বক্তৃতা দেয়ার কথা রয়েছে বারাক ওবামার। রবার্ট এফ কেনেডির বিখ্যাত রিপল অব হোপ শীর্ষক বক্তৃতার ৫০ বছর পর বক্তব্য রাখতে যাচ্ছেন ওবামা। এতে তিনি পরিবর্তনের লক্ষ্যে সমাজের সক্ষমতার ওপর জোরারোপ করবেন বলে হোয়াইট হাউস সূত্রে জানা গেছে। পাশাপাশি গণতান্ত্রিক উন্নয়ন এবং তরুণদের ক্ষমতায়নের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও কথা বলবেন ওবামা।

শেয়ার করুন: