ক্যাডেট ছাত্রী তুবার মৃত্যুর সুরাহা আদৌ হবে?

উইমেন চ্যাপ্টার: ফেনি গার্লস ক্যাডেট কলেজের ছাত্রী লামিয়া তাবাসসুম তুবা (১৩) আত্মহত্যা করেছে, নাকি তাকে হত্যা করা হয়েছে, সেই রহস্যের জট এখনও খোলেনি। এর আগেও ময়মনসিংহ গার্লস ক্যাডেট কলেজে এক ছাত্রী আত্মহত্যা (?) করেছিল, গত ১১ বছরেও সেই কারণ কেউ জানতে পারেনি। একের পর এক ‘আত্মহত্যা’র ঘটনায় খোদ ক্যাডেট কলেজ নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে।

গত মঙ্গলবার (২২ মার্চ) হোস্টেTuba 2লের একটি বাথরুম থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী তুবার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে কলেজ কর্তৃপক্ষ ও হাসপাতালের চিকিৎসক একে আত্মহত্যা বলে থাকলেও একে হত্যা বলে দাবি করছেন স্বজনেরা।

কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজের শিক্ষক সাইফুল আলম ও নাদিয়া ইয়াসমিনের মেয়ে তুবাকে নিজের বড় বোনের মেয়ে দাবি করে ফেসবুকে শামীমা শিমু নামে একজন পুরো ঘটনাকে হত্যাকাণ্ড হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

শামীমা শিমু গত বৃহস্পতিবার রাতে নিজের ফেসবুক ওয়ালে তুবার দুটি ছবি শেয়ার দেন এবং  লিখেন, ‘আমি এখনও মানতে পারছিনা তুবা মামনির মৃত্যু। আমার বড়বোনের মেয়ে, অবশ্যই আমারও মেয়ে। ফেনি ক্যাডেট কলেজে পড়তো ক্লাস এইট এ। গত ২২ মার্চ মঙ্গলবার সকালে তার লাশ পাওয়া যায় ক্যাডেট কলেজেরই বাথরুমে ঝুলন্ত অবস্হায়। ফেনি ক্যাডেট কলেজ কর্তৃপক্ষ এই ঘটনাকে সু্ইসাইড বলে প্রচার করেছে। কিন্তু এটা মানতে রাজী না আমরা।তাকে মেরে ফেলা হয়েছে।এত্তোটুকুন একটা মেয়ে কার কী এমন ক্ষতি করেছে যে তাকে এভাবে মেরে ফেলা হলো?

Tuba 1শিমু আরও লিখেন, তার সেই মূহূর্তের কিছু ছবি দেখে যে কেউ বুঝবে যে তাকে মেরে তারপর ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তার হাতের চারটা নখে রক্ত জমাট বেঁধে ছিল্। যারা তাকে গোসল করিয়েছে তারাও বলেছে, মেয়েটার কোমর এর নিচের দিকে অনেক আঘাতের চিহ্ন ছিল। আরো কিছু ব্যাপার আছে যেটাতে আরো পরিস্কার ভাবে বোঝা যায় যে মেয়েটার মৃত্যুর পেছনে কোন ঘটনা অবশ্যই আছে। তার রুমমেটদের অন্য রুমে সরিয়ে নেয়া হয়েছে এবং তাদের সাথে কাউকে কথা বলতে দেয়া হচ্ছে না। বড় আপু এবং দুলাভাই দুজনেই কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজের টিচার হবার কারণে তাদেরকে মুখ বন্ধ করে থাকতে হচ্ছে। আমরা চাই এর সুষ্ঠু তদন্ত হোক , দোষী ব্যক্তিরা যত ক্ষমতাশালীই হোক না কেন শাস্তি যেন পায়।

সবশেষে শিমু আকুতি জানান এই বলে যে, আরেকটা আনুরোধ সবার কাছে, আপনারা কেউ আপনাদের ছেলেমেয়েকে ক্যাডেট কলেজে পড়াবেন না, দেশে অনেক ভালো ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে, সেখানে পড়ান, কিন্তু ক্যাডেট কলেজে না। আমার বাবাও টিচার ছিলেন ক্যাডেট কলেজের, অনেক ব্যাপারই আমি জানি ওখানকার। ওখানে বাচ্চাদের প্রথম তিনটা বছর কী অমানুষিক নির্যাতনের ভেতর কাটাতে হয় সেটা বলার মতো না্। যারা পড়ছে বা পাশ করে এসেছে তারা আরো ভালো বলতে পারবে।আমার বাবা কখনোই তার মেয়েদের ক্যাডেট কলেজে পড়ানোর পক্ষে ছিলেন না, বলতেন ওখানে অনেক কষ্ট, আমার মেয়েরা এই কষ্ট সহ্য করতে পারবে না।এখন আমার বাবার কথার অর্থ খুব ভালোভাবেই বুঝতে পারছি। আমি চাইনা আর কোন তুবার এভাবে মৃত্যু হোক। এর সুষ্ঠু তদন্তে তার রুমমেটদের সহযোগিতা প্রয়োজন, ক্যাডেট কলেজ কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা প্রয়োজন, কিন্তু সেই সহযোগিতা কি আমরা পাবো? দোষী ব্যক্তিরা কি শাস্তি পাবে?

সবশেষে তিনি নিউজটা শেয়ার করার পাশাপাশি তাদের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানান।

শেয়ার করুন: