ফারজানা নীলা: নারী মাত্রই পরাধীন এমন একটি বোধ আমাদের সামাজিক এবং ধর্মীয় রীতিতে বিরাজমান। ধর্ম এবং সামাজিকতার শুরু থেকেই সমাজ নারীকে পুরুষের উপর নির্ভরশীল বানিয়ে রেখেছে। নতুবা সমাজের নিয়ম কানুন গুলো কোনোটাই প্রকাশ করে না যে নারীও স্বতন্ত্র, সেও স্বাধীন। নারীর পরাধীনতার এবং স্বতন্ত্রতার পরিপন্থী দুটি নিয়ম, একটি যৌতুক অন্যটি দেনমোহর। ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী দেনমোহর বিয়ের একটি অন্যতম শর্ত। এই শর্ত অনুযায়ী স্ত্রী স্বামীর নিকট থেকে বিয়ের সময় কিছু অর্থ বা সম্পত্তি পায় বা পাওয়ার অধিকার লাভ করে। দেনমোহর বিয়ের সময়ই ধার্য করা হয়। এটি স্ত্রীর একটি বিশেষ অধিকার। দেনমোহর স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে পরিশোধ যোগ্য একটি আইনগত দায়। অর্থাৎ স্বামী দায়ী থাকবে স্ত্রীকে নির্ধারিত অর্থ পরিশোধ করতে।
সমাজ বা ধর্ম দেনমোহর নিয়ে কি ব্যাখ্যা দেয় তা প্রথমে জেনে নেই। ধর্ম এবং সমাজের মতে দেনমোহর স্বামীর উপর আরোপিত স্ত্রীর ভরণপোষণের একটি কর্তব্য। দেনমোহর এই জন্য নির্ধারণ করা হয় যেন স্বামী স্ত্রীর প্রতি অবহেলা করতে না পারে, স্ত্রীকে অর্থনৈতিক ভাবে নিশ্চয়তা দিতে পারে। স্বামীর যেন স্ত্রীর প্রতি একটি অর্থনৈতিক দায়বদ্ধতা থাকে। যে দায়বদ্ধতার জন্য সে যেন স্ত্রীকে অকারণে ছেড়ে দিতে না পারে। অথবা যদি তালাক দিতেও চায় তাহলে যেন সে তালাক পরবর্তী সময়ে স্ত্রীর অর্থনৈতিক নিশ্চয়তার ব্যাপারটি বিবেচনায় রাখে। স্বামীর ছেড়ে যাওয়ার পরও স্ত্রীকে যেন অন্যের মুখাপেক্ষী হতে না হয় । স্বামী ছাড়া যেন তার জীবন ধারণে অসুবিধা না হয়।যদি স্বামী তালাকের পরও দেনমোহর পরিশোধ না করে তবে সেটি আইনগত অপরাধ বলে বিবেচিত হবে। এক কথায় স্বামী যেন স্ত্রীর অর্থনৈতিক নিশ্চয়তার দায়িত্ব নেয় তাই এই দেনমোহর প্রথা। এখানে আইন করে স্ত্রীকে টাকা বা সম্পত্তি দেওয়ার ব্যাপারটি স্পষ্টতই নারী পরনির্ভরশীলতাকেই বুঝায়
আপাত দৃষ্টিতে দেনমোহর প্রথা নারীর পক্ষে যাচ্ছে বলে মনে হয়। বা সমাজের প্রায় সবাই এর পক্ষে মত দিবে। আমাদের মা দাদী নানীরা বা সেই যুগের নারীরা স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ পায় নি। তখন সময়টাই নারীদের অনুকূলে ছিল না। সুযোগের অভাব এবং পরিস্থিতির প্রতিকূলতা সেই যুগের নারীদের করেছে পুরুষের মুখাপেক্ষী। পরিবেশই ছিল এমন যে নারী অবশ্যই স্বামীর উপর নির্ভর হবে। বিয়ের আগে পিতা বিয়ের পর স্বামী। এবং এই জন্য দেনমোহর প্রথা গ্রহণযোগ্য ছিল। কারণ তখনকার যুগের নারী মাত্রই অবলা অসহায় বঞ্চিত নির্ভরশীল। স্বামী যদি তার ভরণপোষণের দায়িত্ব না নেয় বা কোন কারণে তালাক হয়ে যায় , তখন যদি সে স্বামীর কাছ থেকে দেনমোহরের টাকা না পায় তবে তার জন্য জীবন ধারণ করা অত্যন্ত দুর্বিষহ হয়ে যায়।
যেহেতু সমাজ এবং ধর্ম নিয়ম নীতি এভাবেই বানিয়েছে এবং তখন নারীদের স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ ছিল না সেহেতু সেই সময় নারীদের স্বামীর উপর নির্ভর হওয়া ছাড়া কোন গতি ছিল না। এখানে সমাজ এবং ধর্মকেই দোষারোপ করা যায় , নারীকে নয়। যদি নিয়মটি এমন যে নারী পুরুষ উভয়কেই স্বাবলম্বী হতে হবে, দুজন দুজনের ভরণপোষণের দায়িত্ব নিবে, এক তরফা কেউ অন্যজনকে আজীবন বহন করে যাবে না তবেই বলা যেত সমাজ এবং ধর্ম নারী পুরুষ দুজনকে সমান দৃষ্টিতে দেখছে।

এই দায়িত্ব নেওয়ার একটি অন্যতম উপায় স্বামী হিসেবে স্ত্রীকে দেনমোহর দেওয়া। যুগ যুগ ধরে এই নিয়ম চলে আসছে। কারণ পুরুষতান্ত্রিক সমাজ এবং ধর্ম এমন নিয়ম বানিয়েছে। নারীও মেনে নিচ্ছে চিরন্তন ভাবে। অতীত যুগের নারীদের জন্য এমন নিয়ম কার্যকর কারণ তাদের সেই সুযোগ এবং যোগ্যতা ছিল না যে তারা নিজের দায়িত্ব নিজেরা নিতে পারবে। সময় এখন অনেক পরিবর্তন হয়েছে। নারীর জন্য সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে নিজের দায়িত্ব নিজে বহন করার। কিন্তু সেই আদিযুগের নিয়মের কোন হেরফের হচ্ছে না। বরং সংযুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন নিয়মের।
একজন উচ্চশিক্ষিত এবং ধনী ঘরের মেয়ের জন্য নির্ধারণ করা হচ্ছে উচ্চ মূল্যের দেনমোহর। যার পিতা যত ধনী তার দেনমোহরের পরিমাণ তত বেশি। সাধারণত উচ্চবিত্তের সাথে উচ্চবিত্তেরই বিয়ে হয়। সুতরাং দেনমোহরের পরিমাণ বিশাল আকারে নির্ধারণ করা হলে পাত্র পক্ষের খুব একটা সমস্যা হয় না। বর্তমান যুগে দেনমোহর সামাজিক স্ট্যাটাসের অংশ হিসেবে দাঁড়িয়েছে। যত বড় অংকের দেনমোহর হবে ততই সেটি পাত্র এবং পাত্রী উভয় পক্ষের জন্য সম্মানের। দেনমোহরের পরিমাণ যদি নগণ্য হয় তবে পাত্র পক্ষের ক্ষমতা নেই এবং পাত্রীর মূল্য নেই এমন একটি নাক ছিটকান ভাব বিরাজ করবে আশেপাশে।

সাধারণত এই দেনমোহর নির্ধারণের কাজটি বাবা মা’ই করে থাকে। পাত্রীর বাবা মা যত ধনী হবে ততই মেয়ের দেনমোহরের পরিমাণ বাড়বে। যেন মেয়েকে পড়াশুনা করিয়ে উচ্চশিক্ষিত করে পণ্য বানানো হচ্ছে। বিয়ের আসরে একে চড়া দামে বিক্রি করা হবে। এখানে যুক্তি দেখান হয় দেনমোহর নারীকে পণ্য বানায় না , এটি নারীর নিরাপত্তার জন্য। যদি এই যুক্তি নারীর নিরাপত্তার জন্য প্রযোজ্য হয় তবে নারীর আত্মসম্মান এবং স্বাধীন স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য এই যুক্তি কি অযুক্তি হয়ে যাচ্ছে না?
আমি আবারো বলছি দেনমোহর প্রথা আমার মা নানী দাদীদের জন্য ঠিক ছিল কিন্তু বর্তমান যুগে নারীরা যেখানে তারা চাইলে তাদের যোগ্যতা দিয়ে নিজের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিজে নিশ্চিত করতে পারে সেখানে দেনমোহর নেওয়ার প্রয়োজন কতটুকু? দুঃখজনক কিন্তু বাস্তব বর্তমানে দেনমোহর একটি সম্মানের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে নারীর দেনমোহর যত বেশি সে তত বেশি অহংকার বোধ করে। নিরাপত্তা, সম্মান সব কিছু একটু পাশে রেখে খুব সাধারণ দৃষ্টিতে সোজা ভাবে দেখলে দেনমোহরকে কিসের সাথে তুলনা করা যায় একটু দেখি। বাজারে গেলাম, একটি জিনিশ পছন্দ হল, একই জিনিশ বাজারে আরও আছে, কিন্তু কোয়ালিটি অনুসারে দামের হেরফের। কোনটার দাম বেশি কোনটার দাম কম। আমার দামিটি কিনার সামর্থ্য থাকলে আমি সেই বেশি দামের জিনিসটিই কিনব। এবার জিনিশটির জায়গায় কন্যাটিকে বসিয়ে দেখুন তো , পণ্য মনে হয় কিনা।
প্রথা মানুষের প্রয়োজনে এবং উপকারে তৈরি হওয়া উচিত। কিন্তু একবার একটি প্রথার প্রচলন হলে সেটি যুগের পর যুগ একই রীতিতে চলতে থাকবে , এর কোন যৌক্তিকতা নেই। যে নারীর সামর্থ্য আছে যোগ্যতা আছে নিজের নিরাপত্তা নিজেই বিধান করার সেই নারীর জন্য দেনমোহর একটি অপমান।।বলা হয়ে থাকে দেনমোহরের পরিমাণ বেশি হলে স্বামী স্ত্রীর সাথে অন্যায় করতে ভয় পাবে, অর্থাৎ যখন তখন তালাক দিতে পারবে না, দেওয়ার আগে তাকে দেনমোহরের কথা ভাবতে হবে। স্ত্রীটি যদি অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হয় তবে কোন কারণে যদি স্বামীর সাথে ছাড়াছাড়ি হয় তবে দেনমোহর নামে সেই স্বামীটির কাছ থেকে টাকা নিতে কি স্ত্রীর সম্মানে লাগবে না, যার সাথে সে থাকছে না?
এবার বলা হবে, যারা স্বাবলম্বী না তাদের কি হবে? সেখানেই মূল সমস্যা। একজন মানুষ সে পুরুষ হোক বা নারী অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী না হয়ে কখনো বিয়ে করা উচিত না। সমাজ যে নারীদের স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য খুব বেশি অনুকূল তাও নয়। কিন্তু এ স্বীকার করতেই হবে নারী এখন চাইলে অন্ধকারের গণ্ডি পেরিয়ে আসতে পারে। সমাজে সেই সুযোগ তৈরি হয়েছে। যদি সুযোগ তৈরি না হতো তবে যেসব নারীরা আত্মনির্ভরশীল হচ্ছে তারাও হতে পারত না। নারী লড়েছে, আন্দোলন করেছে তার প্রাপ্য অধিকার বুঝে নেওয়ার জন্য।
লড়াইটা এখনো চলছে, এখনো আরও বহুদূর যাওয়া বাকি। আরও অর্জন বাকি। কিন্তু সেই লড়াইটি স্তিমিত হয়ে যায় যখন একজন উচ্চ শিক্ষিত নারী হাসিমুখে দেনমোহর গ্রহণ করে আবার জীবনভর স্বামীর উপর নির্ভরশীল হয়ে জীবন কাটায়।
এই দেনমোহরের মত অন্য আরেকটি প্রথা , যৌতুক। যদিও যৌতুক কোন ধর্মীয় রীতির মধ্যে পড়ে না। কিন্তু এটিও ধীরে ধীরে প্রথার রূপেই আবর্তিত হচ্ছে। অতীতে প্রকাশ্যে যৌতুক নির্ধারণ করা হত। বিশেষ করে হিন্দু পরিবারে এটি একটি অন্যতম রীতি। যেহেতু হিন্দু পরিবারে কন্যা বাবার কোন সম্পত্তির অংশ পায় না সেহেতু বিয়ের সময় বাপের বাড়ি থেকে মেয়েকে একসাথে বা একেবারে বা চিরতরে অনেক কিছু দিয়ে দেওয়া হয়। সময় এবং এই রীতির পরিক্রমায় ধীরে ধীরে এটি অন্য ধর্মের বিয়েতেও প্রচলিত হতে শুরু করে। যৌতুকের জন্য অশিক্ষিত এবং গরিব পরিবারে মেয়েদের কেমন অত্যাচারের সম্মুখীন হতে হয় সেই হিসেবে আজ না গেলাম। যৌতুক বর্তমানে শিক্ষিত এবং উচ্চ বিত্ত পরিবারে উপহার দেওয়া নেওয়া প্রথায় পরিণত হয়েছে। যেন এটি একটি অলিখিত নিয়ম। যদিও অধিকাংশ পাত্র পক্ষ বুক ফুলিয়ে বলে বিয়েতে আমরা কিছু চাই না। কিন্তু মনে মনে কিছু না কিছু আশা করেই। ক্ষেত্র বিশেষে তারা কিছু চায় না কিন্তু যদি সত্যি পাত্রী পক্ষ কিছুই না দেয় তবে কালে ভদ্রে মেয়েকে কথা শুনাতে পিছুপা হবে না যে “মেয়ের বাবা মা তো মেয়েকে কিছুই দিলো না”
যৌতুক বা উপহার দিতে মেয়ের বাবা মাও কম পিছিয়ে নেই। পাত্র পক্ষ কিছু দাবি করুক না করুক তারা ঠিকই করে রাখে পাত্রকে কি কি দিবে। ব্যাপারটি সেই দেনমোহর প্রথার মত মান সম্মানের বিষয় হয়ে দাড়ায়। যত উপহার (যৌতুক) দিতে পারবে ততই পাত্রী পক্ষের মর্যাদা বেড়ে যায়। কন্যা অহংকার করে বলতে পারে “আমার বাপের বাড়ি থেকে এই দিয়েছে, সেই দিয়েছে” । বাপের বাড়ি থেকে কি এসেছে সেটি বড়াই করার মত বিষয় নয়, স্বামীর জন্য হীনমন্যতার বিষয়। বিয়েতে স্ত্রীর পরিবারের কাছ থেকে দামি গাড়ি পাওয়া এবং পাত্র যদি সেটি স্বেচ্ছায় গ্রহণ করে তবে সেটি পাত্রের জন্য অপমান জনক।
যদি ব্যাপারটি এমন হতো বিয়ের আগেই বাবা মা কন্যাকে গাড়ি কিনে দিয়েছে, বা কন্যার বিয়ে আগে থেকেই গাড়ি আছে, তবে সেই গাড়ি যদি সে বিয়ের পর শ্বশুর বাড়ি নিয়ে যায় তবে সেটি যৌতুক বা বর্তমান পরিভাষায় উপহার নয়। অনেক অযুক্তি অনেকে উপস্থাপন করে যে পাত্র পক্ষ নিতে চায় না পাত্রী পক্ষে জোর করে দিয়ে দেয়। আসলেই কি ইচ্ছে ছাড়া দেওয়া সম্ভব? যাদের সত্যিকার অর্থে দামি উপহার নেওয়ার ইচ্ছে নেই তারা এমন ভাবেই মানা করে যেন পাত্রী পক্ষ দিতে না পারে। বা দিলেও ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয়। এদের সংখ্যা কম, কিন্তু এরাই সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষের উদাহরণ।
বিয়ে যদি হয় দুটি মানুষের একসাথে বসবাস, দুটি মানুষ জীবনের সকল সুখ দুঃখ পাওয়া না পাওয়া একসাথে ভাগাভাগি করে জীবন উপভোগ করবে তবে সেখানে টাকা পয়সা , দামি উপহার দেওয়ার নেওয়ার মত ব্যবসায়িক লেনদেন কেন? একজন অন্যজনের সকল ভরণপোষণের দায়িত্ব নিবে এবং দায়িত্ব নেওয়ার প্রমাণ স্বরূপ উচ্চ অংকের টাকা দেওয়ার অঙ্গীকার করতে হবে , এমন অসামঞ্জস্য নিয়ম কেন? কেন স্ত্রীর অর্থনৈতিক দায়িত্ব পুরোটাই স্বামীকে নিতে হবে? কাবিন নামায় যে টাকার কথা উল্লেখ থাকে সেটি কি বিয়ের চালান পত্র? বিয়ের সময় পাত্রী চালান করার মূল্য পরিশোধের রশিদ? বাজার থেকে পণ্য কিনার রশিদের সাথে বিয়ের কাবিননামার কি কোন পার্থক্য আছে? মেয়ের সাথে অগণিত দামি দামি উপহার পাওয়া কি একটির সাথে একটি ফ্রি পাওয়া বিজ্ঞাপন নয়?
মানুষের সঙ্গীর প্রয়োজন। বিয়ে আমাদের সমাজে সেই প্রথা যেখানে বৈধ ভাবে একটি মানুষ অন্য মানুষের সাথে জীবন কাটাবে। একটি সংসার রচনা করবে। যেখানে দুই সঙ্গী তাদের যোগ্যতা এবং সামর্থ্য অনুসারে সেই সংসারের জন্য শ্রম অর্থ ভালোবাসা ব্যয় করবে। কেউ কারও উপর আজীবন অর্থের জন্য নির্ভরশীল হয়ে থাকবে না। স্বামী স্ত্রীকে যেমন অর্থনৈতিক ভাবে সহযোগিতা করবে তেমনি স্ত্রীও স্বামীকে অর্থনৈতিক ভাবে সহযোগিতা করবে। কিন্তু সেই সহযোগিতা এমন হবে না যে স্ত্রী বাপের বাড়ি থেকে অঢেল দামি উপহার নিয়ে আসবে, আর স্বামী কাগজে উল্লেখ করবে বিশাল অঙ্কের দেনমোহর।
বিয়ের বন্ধন যদি হয় ভালোবাসার বন্ধন তবে সেখানে দেনমোহর এবং যৌতুকের মত দেনা পাওনা কেন থাকবে? নিয়ম করে একজনকে অন্যজনের উপর নির্ভরশীল করে রাখার চেয়ে নিয়মটি যদি এমন হতো, স্বামী স্ত্রী উভয়কেই স্বাবলম্বী হতে হবে, তবে কি নারীরা আরও একটু বেশি স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করতো না? অথবা বিয়েকে ব্যবসায়িক দেনা পাওনার প্রথা না বানিয়ে শুধুমাত্র দুটি জীবন একসাথে থাকবে একে অপরের প্রতি সকল ধরণের দায়বদ্ধতা নিয়ে এমন প্রথা বানালে কি সমাজে নারী পুরুষের বৈষম্য আরও একটু দূর হতো না?