মিশরে নারীদের সমুদ্রে স্নান হচ্ছে ‘জিনা’

women-swimming-in-burkasআসিফ মহিউদ্দীন: সম্প্রতি মিশরে একটি ফতোয়া দেয়া হয়েছে। যেই ফতোয়া মোতাবেক যে সব নারী সমুদ্রে নেমে গোছল করবে, এবং তাদের শরীরের যৌনাঙ্গগুলো সেই পানিতে ভিজবে, তাদের এই গোছলকে জিনা হিসেবে গণ্য করা হবে এবং তাদের জিনার দায়ে শাস্তি দেয়া হবে। ইসলামে জিনার শাস্তি কী হতে পারে, তা নিশ্চয়ই আর বুঝিয়ে বলতে হবে না।

এর কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, আরবি ভাষায় সমুদ্র হচ্ছে একটি পুরুষবাচক শব্দ। সেই পুরুষবাচক শব্দের সান্নিধ্যে নারীরা যাচ্ছে, গোছল করছে এবং যৌনাঙ্গ সমুদ্রের সংস্পর্শে আনছে, তাতে নারীরা আনন্দও পাচ্ছে। তাই তা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই ফতোয়া কোন অমুক এলাকার তমুক ইসলাম না জানা অশিক্ষিত মোল্লা দেয় নি, খুব বিখ্যাত এবং বিভিন্ন বড় বড় ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলাম বিষয়ে বড় বড় ডিগ্রি অর্জন করা পণ্ডিত ইসলাম বিশেষজ্ঞরাই দিয়েছেন।

মডারেট মুসলমানগণ সবসময়ের মতই গোস্বা করে গাল ফুলিয়ে হয়তো বলবেন, ইহা ছহি ইসলাম নহে। তারা অবশ্য কোনদিন কোরআন হাদিস খুলে না দেখেও বড় বড় ইসলাম বিশেষজ্ঞ বনে যাওয়া মানুষ, কোনটা ছহি আর কোনটা অছহি তা অবলীলায় বুঝে যান। ইসলামিক দেশগুলোর এই সব ফতোয়া নিয়ে তারা কখনোই টু শব্দটি করেন না, কিন্তু এই নিয়ে কথা বললেই তাদের অনুভূতি ভেঙে খান খান হয়ে যাবে। যেন ফতোয়াগুলো নাস্তিকরাই দেয়!

ইসলাম ধর্মের পৌরাণিক আদম হাওয়ার কাহিনী অনুসারে, নারীকে সৃষ্টি করাই হয়েছিল পুরুষের নিঃসঙ্গতা দূর করার উদ্দেশ্যে। অর্থাৎ নারী আলাদা কোন স্বাধীন সত্তা নয়, একটি উপকরণ। নারী হচ্ছে পুরুষের জন্য একটি বিনোদনের বস্তু, একটি যৌনযন্ত্র। পুরুষের সৃষ্টিই ছিল মুখ্য, নারী সেখানে একটি অবসর বিনোদন মাত্র।

ইতিপূর্বে মিশরে যে সব বিখ্যাত ফতোয়া দেয়া হয়েছে, তার কয়েকটি হচ্ছে-

১) কোন নারী কিছু বিশেষ বিশেষ সবজি ও ফলমূল খেতে পারবে না। যেমন কলা, শসা ইত্যাদি। কারণ এগুলো তাদের মানসিক জিনায় উৎসাহিত করতে পারে।

২) বাড়িতে একলা থাকার সময় তাদের এয়ারকন্ডিশন বন্ধ করে রাখতে হবে। কারণ এয়ারকন্ডিশন চালু থাকলে পাশের বাড়ির পুরুষের মনে হতে পারে নারীটি বাসায় একলা রয়েছে, এবং তাতে জিনা ঘটতে পারে।

৩) বিবাহিত নারী পুরুষ সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থায় শারীরিক সম্পর্ক করতে পারবে না। অর্থাৎ আপনি আপনার স্ত্রীর সাথে কী অবস্থায় শারীরিক সম্পর্ক করছেন, তাও দেখভাল করা হবে।

৪) স্বামী বা নিকটাত্মীয় ছাড়া আর কোন পুরুষের সাথে মেলামেশা বা বাইরে যাওয়া যাবে না। অন্য কারো সাথে মেলামেশা বা বাইরে যেতে হলে সেই পুরুষকে নিজের বুকের দুধ খাইয়ে আত্মীয়তার সম্পর্ক তৈরি করতে হবে। বুকের দুধ কীভাবে খাওয়ানো হবে তা নিয়ে অবশ্য ইসলামি চিন্তাবিদগণ বিভিন্ন মতামত দিয়েছেন। কেউ বলেছেন সরাসরি, কেউ বলেছেন গ্লাসে করে। কিন্তু তা খাওয়ানো নিয়ে বেশিরভাগ ইসলামি আলেম ওলামাই একমত হয়েছেন।

– সত্যিই সেলুকাস, কী বিচিত্র এই ধর্ম! আসুন দেশে ইসলাম কায়েম করি।

শেয়ার করুন: