#MeToo এবং একজন মনোনয়নপ্রার্থী আনোয়ার হোসেন খান

আমি সাবিহা নাজনীন। বর্তমানে কানাডায় বসবাস করছি। বয়স ৩০।
আমি লেখিকা নই। গুছিয়ে লিখতে পারি না। কিন্তু বাংলাদেশে মি টু আন্দোলনে শামিল না হয়ে পারছি না। সিলেটে এইচ এস সি শেষ করে চলে আসি স্বপ্নের ঢাকায়, বাবার স্বপ্ন পূরণ করে ডাক্তারী পড়তে। ভর্তি হলাম সদ্য স্থাপিত আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজে। তার প্রতিষ্ঠাতা জনাব আনোয়ার হোসেন খান ছিলেন বাবার পরিচিত।

আনোয়ার হোসেন খান

কোনকালেই লেখাপড়ায় ভালো ছিলাম না। ভর্তিও হয়েছিলাম বাবার রেফারেন্সে। তার উপর পড়তাম ডাক্তারী। যখন কোনভাবেই কুলিয়ে উঠতে পারছিলাম না, বাবাকে জানালাম। বাবা তার বন্ধু জনাব আনোয়ার খানকে  ব্যাপারটি জানালেন।

জনাব আনোয়ার খান আমাকে তার অফিসে দেখা করতে বললেন। আমিও গেলাম দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে। কিছুক্ষণ কথা বলে রুমে বসিয়ে নামাজে গেলেন। এরপর নামাজ হতে রুমে ফিরে আবার আলাপ শুরু করলেন।
আস্তে আস্তে তিনি আমার পাশের চেয়ারে বসলেন। সহমর্মিতা দেখালেন। এরপর সহমর্মিতার খাতিরে হাত চেপে ধরলেন। বাবার স্বপ্ন পূরণের অক্ষমতায় খুবই ভেঙে পড়েছিলাম। কান্নার একপর্যায়ে তিনি আমাকে জড়িয়ে ধরলেন এবং তার কলঙ্কিত হাত দিয়ে আমার স্তন চেপে ধরলেন। এসবে দিশেহারা হয়ে যখন তাকে ধাক্কা দিয়ে বের হয়ে আসতে চেষ্টা করলাম, তখন তিনি আমাকে জাপটিয়ে ধরে, আমার হাত দিয়ে তার গোপনাঙ্গ ধরানোর চেষ্টা করলেন। আবারও তাকে ধাক্কা দিয়ে দৌড় দিয়ে তার রুম হতে বেরিয়ে গেলাম।
এরপর হোস্টেলে এসে ব্যাগ গুছিয়ে সেদিনই ট্রেনে করে সিলেট ফিরে আসি। সারা ট্রেন কাঁদতে কাঁদতে ফিরে এলাম। ফিরে এসে শুনি, তিনি আমার বাবাকে ফোন দিয়ে বলেছেন যে, আমার প্রেমের কারণে নাকি আমার লেখাপড়ার করুণ দশা। যখন বাবাকে খুলে বললাম, বাবা আমাকে ধমক দিয়ে ব্যাপারটা কাউকে বলতে না করলেন।

সাবিহা নাজনীন

এর এক বছর পর বিয়ে হয়ে, স্বামীর সাথে কানাডা চলে আসি। বর্তমানে এক সন্তানের জননী।

এতোদিন পর ব্যাপারটা নিয়ে বলার কারণ হচ্ছে, গতকাল ঐ পিশাচের হাসি মার্কা ছবি দেখলাম যে, তিনি আওয়ামী লীগ এবং তরিকত, দুই দল থেকেই নমিনেশন নিয়েছেন এবং সেই পিশাচ মার্কা হাসি দিয়ে বলছেন যে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এই কাজ করেছে। পিশাচ হাসি দেখে নিজেকে আর কন্ট্রোল করতে পারলাম না। এই নরপিশাচ যদি আইন প্রণেতা হন, তাহলে আমাদের দেশের কোন মেয়েই নিরাপদ নন। নিজেকে কোনভাবেই মানাতে পারছি না যে, যে-ই লোক নিজের বয়সী মেয়েকে দেখে নিজের কুপ্রবৃত্তিকে রোধ করতে পারে না, সে কীভাবে দেশের মানুষের সেবা করবে?
আজ নিজেকে নির্ভার লাগছে এই ভেবে যে, এটলিস্ট নিজের জমানো কষ্টটা এতোদিনে সবার সাথে শেয়ার করতে পারছি। I wish I could’ve chopped him into pieces.
#MeToo
#MeTooBangladesh

শেয়ার করুন: