অপমানগুলো নিজেই টেনে এনেছে অপু বিশ্বাস

মালবিকা লাবণি শীলা:

ডিভোর্স দিতে চেয়েছে বা দিয়েছে এতেই শাকিব হিরো থেকে ভিলেইন হয়ে গেল! অপু যে নিজের হাতেই নিজের এই অপমান টেনে এনেছে সেটা কেউ দেখলো না? আমার পয়েন্টগুলো সব অপুর বিরুদ্ধেই যাবে, তবুও বলি।

১) শাকিবের প্রেমে উন্মাদ হওয়া।
২) নিজের ক্যারিয়ারের কথা না ভাবা।
৩) ধর্মান্তরিত হওয়া।
৪) বিয়ে করে শাকিবের স্বার্থে সেই তথ্য গোপন রাখা।
৫) যে সন্তান বাপের নামেই পরিচিত হবে তার জন্মের সময় বাপের অনুপস্থিত থাকাটা মেনে নেওয়া।
৬) অপুর অপছন্দের নায়িকার সাথে শাকিবকে দেখে, মিডিয়াতে কান্নাকাটি করে হুলুস্থুল ফেলে দেওয়া।
৭) কয়দিন পরেই “স্বামী”র সাথে গুলগুলা হাসি দিয়ে ছবি দেওয়া।
৮) নিজে উপার্জনক্ষম হয়েও টাকা-পয়সার জন্য অন্যের মুখাপেক্ষী হওয়া।
৯) ডিভোর্সের কথায় আবার প্যানপ্যান শুরু করা।
১০) নিজেকে ভিক্টিম হিসেবে উপস্থাপিত করা।

কেন, ওর নিজের পায়ের তলায় কি মাটি ছিল না? এরকম দায়িত্বজ্ঞানহীন বাপকে উপেক্ষা করে ও কি একটি সন্তানকে মানুষ করতে পারত না? “সন্তানের দায়িত্ব নেবে কিন্তু স্ত্রীর দায় নেবে না” বলার পরেও কোন আক্কেলে আবার ওই ব্যাটার সাথে মিলমিশ করতে গিয়েছিল? সন্তান কি শাকিবের একার?

বিবাহবহির্ভূত অনেক সম্পর্কের ক্ষেত্রেই আমি দেখেছি, মেয়েরাই বিয়ের জন্য চাপ দেয় বেশী। যেন পৃথিবীতে আর কোনো গন্তব্য নেই। ক্যারিয়ার বা পড়াশোনা ছাড়া একটি মেয়ের ক্ষেত্রেও এটা মানতে আমার কষ্ট হয়। কাজ করতে চাইলে কাজের অভাব হয় না। আর অপু বিশ্বাস নিজে অত্যন্ত ভালো অবস্থায় ছিল। তবুও কেন সে এরকম পরিস্থিতি তৈরি করতে গেল!

আমাদের দেশের লোকজন আজাইরা সব অনুভূতি নিয়ে বসে থাকে। ধর্ষণ, খুন, গৃহ নির্যাতনের শিকার লাখ লাখ মেয়ের মৃত্যু, অপমান এদের গায়ে লাগে না, অথচ একজন চিত্রতারকার চোখের পানি দেখে তাকেই ভিক্টিম ভেবে বসল! কেউ কি ভেবে দেখেছেন, এখানে শাকিব খান নিজেও ভিক্টিম হতে পারে? কোন পরিস্থিতিতে সে বিয়ে করেছে? বিয়েতে তাকে বাধ্য করা হয়েছিল কী-না!

জানি আপনাদের নরম দিলে এরকম গরম কথা ছ্যাঁকা দেবে। তবে ভেবে দেখবেন, পয়সায় এপিঠ ওপিঠ দুই পিঠ থাকে। এক হাতে তালি বাজে না। নারী বলেই সে নির্যাতিতা, নারী বলেই সে ভিক্টিম, নরম, সহজ সরল, এরকম ভাবাটা আসলে নারীকেই অপমান করা।

পুরুষকে ট্র্যাপে ফেলে বিয়ে করতে বাধ্য করেছে, এরকম প্রচুর ঘটনা আমি জানি। প্রেগন্যান্ট হয়ে বিয়ে করতে বাধ্য করেছে, এরকম মেয়েও আমি চিনি। বিয়ে টিকিয়ে রাখতে গিয়ে স্বামীকে না জানিয়ে গর্ভবতী হয়েছে, এরকম উদাহরণ আমার সামনেই ঘটেছে। একতরফাভাবে পুরুষের দোষ দেওয়াটা আমাদের একটা কালচার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এগুলো করতে থাকলে ব্লেইম গেইম আর ভিক্টিম সাজা চলতেই থাকবে। এতে মেয়েদের ভুলভাবে উপস্থাপিত করা হচ্ছে। ছেলেরা দোষ না করেও দোষী হচ্ছে।

মানুষ হিসেবে সমতা পেতে চাইলে এসব গেইম বন্ধ করতে হবে। অপু বিশ্বাসের উচিত ছিল শাকিবকে ওষ্ঠা মারা, তা না করে সে তার নিজের জীবনটাকেই একটা সস্তা সিনেমার স্ক্রিপ্ট বানিয়ে বসে আছে। আমি আমার নিজের দায়িত্ব নিতে পারলে নিজের সন্তানের দায়িত্ব নিতে পারবো না? পৃথিবীতে তো সিঙ্গেল ফাদারের চেয়ে সিঙ্গেল মাদার অনেক বেশী।

আত্মসম্মানবোধ থাকলে এরকম কেউ করতে পারতো না। পারা উচিত নয়। এখন আর কি, অপু ইসলাম হজ করে এসে অনন্ত জলিলের সাথে ধর্ম প্রচার শুরু করুক। পরে রাজনীতিতে এলে শাইন করতে পারবে।

শেয়ার করুন: