সংসদে দুই নেত্রীর বাকবিতণ্ডা

dui netriউইমেন চ্যাপ্টার (৩০ জুন): সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের জিএসপি বাতিলের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরোধী দলীয় নেতার লিখিত একটি নিবন্ধের কথা উল্লেখ করে বলেন, জিএসপি-সুবিধা বাতিল করার অনুরোধ জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পত্রিকায় খালেদা জিয়া নিবন্ধ লিখেছেন। এর চেয়ে দুঃখের আর লজ্জার কিছু হতে পারে না।
তিনি বলেন, এইদেশে গণতান্ত্রিক অধিকার সুসংহত করতে চাই। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে যেভাবে নির্বাচন হয়, এখানেও তাই হবে। গণতন্ত্রের পথে আমাদের অন্তত একবার পা বাড়াতে হবে। মাইনাস টু ফর্মুলার প্রবক্তাদের আর ক্ষমতায় আসতে দেয়া যাবে না।

এদিকে নিজের বক্তব্যে বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া ওয়াশিংটন টাইমসের নিবন্ধ লেখাকে অস্বীকার করে বলেন, ‘আমার পক্ষে এ ধরনের কোন চিঠি দেয়ার প্রশ্নই উঠে না’ এসময় প্রধানমন্ত্রী একটি চিঠির ফটোকপি সংসদে তুলে ধরলে বিরোধী দলীয় নেত্রী বলেন, ‘এটা আমার চিঠি নয়। আমি প্রমাণ দেখাতে পারি’।

চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারী ওয়াশিংটন টাইমসে খালেদা জিয়ার একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। নিবন্ধে তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও তার সহযোগীদের উদ্দেশে বলেন, ‘তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলতে পারেন শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় যারা কাজ করছেন বা যারা প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক মতাদর্শের বিরোধী, তাদের ওপর দমনপীড়ন চলায় জিএসপি-সুবিধা প্রত্যাহার করা হবে।’

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি এমন সুস্পষ্ট বার্তা প্রদানকে বিরোধীদলীয় নেতা অস্বীকার করলেও প্রমাণাদি নিয়েই প্রধানমন্ত্রী বলেন, লিখেননি বললে তো চলবে না। নিবন্ধটির ১২ জায়গায় আমার নাম লিখে, আমার বিরুদ্ধে কথা বলা হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে বলেন, কিন্তু দেশের মানুষের বিরুদ্ধে কেন?
এ সময় তিনি ওই নিবন্ধের অংশবিশেষ পাঠ করেও শুনান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যখন বিএনপি ক্ষমতায় ছিল ইইউতে চিংড়ি রপ্তানি বন্ধ হয়েছিল জালিয়াতির জন্য। আমরা জিএসপি রক্ষা করি। ইউরোপে চুক্তি করি। নিজে যাই। অস্ত্র ছাড়া ইইউ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ডিউটি ফ্রি কোটা পাই। আমেরিকা ২০০৭ সাল থেকে নোটিশ দিচ্ছে। আমরা তো ঠেকিয়ে রেখেছি। আমরা শ্রমিকদের উন্নয়নে সার্বিক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বিএনপি আমলে গার্মেন্টস শ্রমিকের বেতন ছিল ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকা। আমরা সরকারে আসার পর গার্মেন্টস শ্রমিকের বেতন ৮২ ভাগ বৃদ্ধি করেছি।’
খালেদা জিয়ার এমন লেখাকে লজ্জার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘এই জিএসপি বন্ধ করার জন্য বিরোধীদলীয় নেতা “ওয়াশিংটন টাইমস” নামে একটি পত্রিকায় লেখেন, যার মালিক ইহুদি। খালেদা জিয়া ওই নিবন্ধে সব ধরনের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা বলেন। এটা দুঃখের কথা, লজ্জার কথা।’

এদিকে বিরোধী দলীয় সাংসদরা বারবার লেখাটি খালেদা জিয়ার নয় বলে চেষ্টা করলেও লেখাটি প্রকাশিত হওয়ার পরে সরকার ও সচেতন নাগরিক সমাজের বিভিন্ন প্রকারের সমালোচনাকে ‘নিচু মানসিকতা ও অসহিষ্ণুতার’ পরিচায়ক বলে উল্লেখ করেছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ।

নিবন্ধটি কেন দেশের কোন পত্রিকায় না দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পত্রিকায় দেয়া হলো এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি তখন বলেন, ‘আজকালকার তথ্যপ্রযুক্তির এ যুগে এখানে বা ওখানে লেখার মধ্যে তফাতটা কী? দেশের বাইরে বাংলাদেশের শুভাকাঙ্ক্ষীদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য প্রতিবেদনটি “ওয়াশিংটন টাইমস”-এ দেওয়া হয়েছে।’

শেয়ার করুন: