
উইমেন চ্যাপ্টার: বাংলাদেশ-পাকিস্তানের মধ্যে এশিয়া কাপ ক্রিকেটের সেমিফাইনাল চলছে। খেলা তখন জমে উঠেছে। যারা আমরা মাঠে যাইনি, ক্যামেরার লেন্সের ভিতর দিয়ে আমরা দর্শক গ্যালারি দেখে নিচ্ছি বার বার। এরই মাঝে জানা হয়ে গেল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এসেছেন মাঠে খেলা দেখতে। তাঁর জন্য এটা নতুন কিছু না। ক্রিকেট দেখে ঊনাকে শিশুর মতো আবেগে ভাসতে দেখেছি আমরা বহুদিন, বহুবার।
তাঁর মতোন অন্য দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরাও জাতীয় পর্যায়ের খেলা দেখতে মাঠে যান। ভারতের কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী তো একবার মাঠেই নেমে গেলেন, কোনো নিরাপত্তা বাহিনীই তাঁকে আটকাতে পারছিল না। আরেকবার ভারতে অনুষ্ঠিত ভারত-পাকিস্তান খেলার সময় সমস্ত রাজনৈতিক বৈরিতা কাটিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ভারত গিয়েছিলেন।
যা বলছিলাম, কালকের খেলাটি ছিল প্রচণ্ড রকমের শ্বাসরুদ্ধকর। স্নায়ুর ওপর দিয়ে যাওয়া এই খেলাটি দেখতে গিয়ে সাধারণ দর্শকদের মতোন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও বার বার অস্থির দেখাচ্ছিল। খেলা শেষে যখন বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত হলো, আবেগে কান্না ধরে রাখতে পারেননি তিনি। পতাকা উড়ানোর সময় তাঁর চোখ-মুখই বলে দিচ্ছিল তিনি নিজেকে সংবরণ করতে পারছিলেন না। একজন রাষ্ট্রনায়কের এমন ক্রিকেটপ্রীতি সত্যিই মুগ্ধ করে আমাদের।
খেলার সাথে রাজনীতি মেলাতে চাই না, কিন্তু যদি বলি, প্রধানমন্ত্রীর আবেগের এই কান্নার চেয়েও আমার বা অনেকের কাছেই দামি অভিজিৎ রায় কিংবা ফয়সল আরেফিন দীপনের বাবার চোখের জল। নারায়ণগঞ্জের কিশোর ত্বকীর বাবার চোখের জল। এমন হাজার হাজার, লাখ লাখ স্বজন হারানো সাধারণ মানুষের চোখের জল। যারা বিনা বিচারে প্রচণ্ড ক্ষোভ নিয়ে বেঁচে আছেন এই মাটিতে।
প্রিয় প্রধানমন্ত্রী, আমরা বাংলাদেশি, আমরা খেলা ভালবাসি, নিজেদের সব দৈন্য-দুর্দশা ভুলে গিয়ে আমরা মেতে উঠি খেলার আনন্দে, তেমনি ঘোর অন্ধকারেও তলিয়ে যাই বিচারহীনতার সংস্কৃতিতে, নিজেদের অপরাগতায়। তাই আপনার কাছে আমাদের অনুরোধ, আপনি সত্যিকারের একজন ‘দেশপ্রেমিক’ হয়ে উঠুন, প্লিজ। শুধু খেলায় নয়, আপনার এই আবেগ আমরা দেখতে চাই সমাজের প্রতিটি কাজে, প্রতিটি দায়িত্বে। তাহলেই না অনন্যা হয়ে উঠবেন আপনি!