ফের পাহাড়িদের উচ্ছেদে সামিল হচ্ছে সরকার

hillম্যাকলিন চাকমা: কাপ্তাই বাঁধের গল্পটা শুনেছেন? যেটির পরিচালক ছিল আমেরিকা। আর ভিলেনের ভূমিকায় অংশ নিয়েছিল তত্কালীন পাকিস্তান সরকার। আর সেটি হবার পর এখনো প্রতিনিয়ত করুণ সুর বেজে যাচ্ছে পাহাড়ের প্রতিটি স্তরে।
ছেড়ে দিতে হয়েছে বাপদাদার বসত ভিটা। ডুবিয়ে দেয়া হয়েছে পাহাড়িদের সমস্ত সম্পদ। পাহাড়ে ঠাঁই না পেয়ে অজানার দেশে পাড়ি দিতে হয়েছে হাজার হাজার পাহাড়িকে।
মনে আছে সাজেক ভ্যালীর গল্প? যেটি সৃষ্টির গল্প এখনো কাঁদায়। অনেক ত্রিপুরা পরিবারকে ভিটে ছাড়তে হয়েছে। নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে।
এ রকম অনেক গল্প আছে আমাদের। যেগুলো শুনি, জানি কিন্তু অনুভব করি না।
২.
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী অঞ্চল ঠেগামুখে স্থল বন্দর হচ্ছে।আস্তে ধীরে জাহাজ চলাচল করবে। কর্ণফুলির পানি কমানো যাবেনা। পানির উচ্চতা আরও গভীরে নেয়া হচ্ছে। সুতরাং কাপ্তাই বাঁধ আরও শক্তিশালী ভূমিকা রাখবে এটা নিঃসন্দেহে বলা যায়। নাহলে যে জাহাজ চলাচল করতে পারবে না। এরপর ভারত-বাংলাদেশের বাণিজ্য প্রসারিত হবে। উন্নয়নের জোয়ার বইবে দেশে।

কতই আনন্দের তাই না?
হোক আদিবাসীদের মরণফাঁদ, তাতে কি!
যারা চর অঞ্চলে ধান চাষ করে তাদের কী হবে? কর্ণফুলী বাসীদের একমাত্র অবলম্বন চরাঞ্চলের চাষাবাদকে কেন্দ্র করে।
ক্ষতি হোক তাতে কি! দেশের উন্নয়ন তো হচ্ছে। পাহাড়িদের ক্ষতি হোক, তাতে কিচ্ছু যায় আসে না।
এইতো গেল চাষাবাদের অংশ। তারপর কী হবে ভেবে দেখেছেন কখনো?
হ্যাঁ। আমরা ভাবি। এখানে স্থলবন্দর হলে সরকার বাঙালি পাঠাবে এটা নিঃসন্দেহে বলা যায়। বলতে পারেন পাহাড়িদের উচ্ছেদের অংশ এটি। সুতরাং পাহাড়িদের উচ্ছেদের মিলন মেলায় আমরা কখনো শামিল হতে পারি না।
৩.
গেল কয়েকদিন আগে ভারতের একটি প্রতিনিধি দল ঠেগামুখ অঞ্চলের পাহাড়িদের সাথে আলোচনায় বসতে চেয়েছিল। ঠেগামুখ অঞ্চলের আদিবাসীরা আলোচনায় রাজি না হওয়ায় ঐ এলাকার কয়েকজনের সাথে বৈঠক করে ভারতের একটি প্রতিনিধি দল।
ইতিমধ্যে বাংলাদেশের উচ্চ পর্যায়ের কিছু লোকের সাথে আলোচনাও হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে কাজ শুরু হবে।
দেশের উন্নয়ন হোক তা আমরাও চাই। কিন্তু একটা জাতির অস্তিত্ব বিলুপ্ত হোক তা কোনভাবেই মেনে নেয়া সম্ভব নয়।

শেয়ার করুন: