তখন দেশপ্রেম কোথায় থাকে সবার?

Hindu_thereport24
ছবিটি দ্য রিপোর্টের সৌজন্যে

প্রভাতী দাস: “যুবলীগ নেতা জাকির হোসেন অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আ. রশিদের কোনো দোষ নেই। হিন্দুরা ইচ্ছা করেই এলাকা থেকে ঘরগুলো বিক্রি করে চলে গেছে।”

২৪ শে মার্চ রাতে একটা স্ট্যাটাস লিখেছিলাম, লিখতে বসে নিজেই কেঁদেছিলাম অঝোরে। হ্যাঁ, কেঁদেছিলাম…। কেঁদেছিলাম আমাদের অশ্বত্থের উঠোন, শীতলা খোলা, নদীর ঘাটের জন্য; কেঁদেছিলাম ভিটে-মাটি-থালা-বাটি-বিছানা-চৌকি সব পরিপাটি গুছিয়ে রেখে রাতের অন্ধকারে দেশান্তরের পথে হারিয়ে যাওয়া আমার কিরণ পিসি বা চিত্র পিসিদের কথা মনে করে; কেঁদেছিলাম থেকেও না থাকা আমার একান্ত মাটির সেই গ্রামটির কথা ভেবে । গ্রাম থেকে একের পর এক পরিবার লোপাট হয়ে যাবার পর যারা তাদের সম্পত্তি দখল করতো, তাদের ভাষাও ঠিক একই রকম ছিল, “ওরা স্বেচ্ছায় সব বিক্রি করে দিয়ে চলে গেছে।”

এরাও গেছে তেমন করেই…। ঠিক ৪৪তম স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে…, স্বেচ্ছায়। এ আর এমন আশ্চর্যের কথা কি!!!

দ্য রিপোর্টের খবরে বলা হয়েছে, বড় বড় নারকেল, সুপারি, বরইসহ বিভিন্ন ধরনের ফল আর ফুলগাছে ঘেরা ভিটেগুলো। ঘর নেই, মানুষও নেই। শূন্য ময়দানে সনাতন ধর্মাবলম্বী পরিবারগুলোর শেষ চিহ্নগুলো জানান দিচ্ছে কিছুদিন আগেও সেখানে মানবের বসবাস ছিল।

বরগুনার তালতলী উপজেলার পঞ্চকোড়ালিয়া ইউনিয়নের চন্দনতলা (মগপাড়া হিসেবে পরিচিত) গ্রামে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে। স্থানীয় এক যুবলীগ নেতার ইশারায় সন্ত্রাসীদের তাণ্ডবে ওই গ্রামের ১৪টি হিন্দু পরিবার তাদের বাপ-দাদার ভিটেমাটি ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সরেজমিন ওই গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, শূন্য ভিটেয় আছে পুকুর, পাকা টয়লেট। পড়ে আছে ক’দিন আগে রান্নার কাজে ব্যবহৃত চুলা। ঘরের মেঝেতে পড়ে আছে মাটির সানকিসহ পুরানো অসংখ্য চিহ্ন। শুধু মানুষ নেই। দিনের পর দিন অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার হয়ে বিচার না পেয়ে হিন্দু পরিবারগুলো বাপ-দাদার ভিটে ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন বলে ভুক্তভোগী ও স্থানীয়দের অভিযোগ।

শেয়ার করুন: