নির্বাচনে অংশ নেবে বিরোধী দল: প্রধানমন্ত্রী

hasinaউইমেন ডেস্ক (২৭ মে): প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করে বলেছেন, বিরোধী দল আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মতো জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও অংশ নেবে।
সোমবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের রাজনীতিবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি ওয়েন্ডি আর শারমেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। খবর বাসসের।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব বিজন লাল দেব জানান, শেখ হাসিনা ও শারমেন বাংলাদেশের আগামী সংসদ নির্বাচন, যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্ক, রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যা ও পোশাকশিল্প খাতের বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।
বর্তমান মহাজোট সরকার দেশে গণতন্ত্র সুসংহতকরণে সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বজায় রাখতে অঙ্গীকারবদ্ধ বিধায় গণতন্ত্র আরও শক্তিশালীকরণে কঠোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
নির্বাচন কমিশন (ইসি) স্বাধীনভাবে কাজ করছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে সার্চ কমিটির মাধ্যমে বর্তমান ইসি গঠন করেন। তিনি বলেন, সরকার নির্বাচন কমিশনের কর্মকাণ্ডে কখনো হস্তক্ষেপ করবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের বিগত সাড়ে চার বছরে জাতীয় সংসদের ১৫টি উপনির্বাচন, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদসহ পাঁচ হাজার ৬৪৫টি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সব নির্বাচনই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং কেউই এসব নির্বাচন সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন তুলতে পারেনি।
পোশাক খাতের সমস্যা সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার পোশাকশ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করেছে এবং তাঁদের জন্য একটি পৃথক ওয়েজ বোর্ড গঠনের কাজ এগিয়ে চলেছে। তিনি বলেন, ‘পোশাকশ্রমিকদের কল্যাণ ও নিরাপত্তাকে গুরুত্ব দিয়ে বর্তমান শ্রম আইন সংশোধন করা হচ্ছে।’

শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
জবাবে শারমেন বাংলাদেশে বিদ্যমান গণতন্ত্রের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশ দেখে খুবই খুশি।’
বাংলাদেশের পোশাকশিল্প খাতে বর্তমান সমস্যা সম্পর্কে তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও গত শতাব্দীতে একই ধরনের সমস্যা মোকাবিলা করেছে এবং রূপান্তর-প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, বাংলাদেশও একই ধরনের রূপান্তর-প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারি উল্লে¬খ করেন, বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক দিন দিন জোরদার হচ্ছে। ওয়াশিংটন খাদ্যনিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন ও মুসলিম উম্মাহর সঙ্গে সম্পর্ক গঠনের মতো সব আন্তর্জাতিক উদ্যোগে বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্ত করেছে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র জলবায়ু ফোরামের কর্মকাণ্ড ত্বরান্বিত করতে প্রস্তুত। বাংলাদেশ এই ফোরামের অন্যতম শরিক।
শারমেন দারিদ্র্য বিমোচন, শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাস ও নারীর ক্ষমতায়নে অভূতপূর্ব সাফল্যের জন্য বাংলাদেশের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন। রোহিঙ্গা বিষয়ে তিনি আশা প্রকাশ করেন, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ তাদের জন্য প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ নেবে।
অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ এম জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব শেখ মোহাম্মদ ওয়াহিদ উজ জামান, বিশেষ সহকারী আবদুস সোবহান গোলাপ এবং বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজীনা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন: