
উইমেন চ্যাপ্টার: হাকিম আদালত থেকে জামিন না পেয়ে এখন ঢাকার দায়রা জজ আদালতে আবেদন করেছেন পুলিশ দম্পতি হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার তাদের মেয়ে ঐশী রহমান।
ঐশীর আইনজীবী মাহাবুব হাসান রানা ও রেজাউর রহমান টিংকু আজ ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে এই আবেদন করেন।
বিচারক মো. জহুরুল হক আগামী ১ অক্টোবর ঐশীর জামিন আবেদন শুনানির দিন ধার্য করেছেন। এজন্য তিনি নিম্ন আদালতের নথিও তলব করেছেন।
গত ১৬ আগস্ট রাজধানীর চামেলীবাগের ফ্ল্যাট থেকে এসবি পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না বেগমের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
পরদিন তাদের মেয়ে ঐশী পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করলে তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠায় আদালত। পুলিশের দাবি, বাবা-মাকে একাই হত্যা করেছেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন ঐশী।
গত ২৪ আগস্ট রিমান্ড শেষে ঐশী মহানগর হাকিমের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এরপর ঐশী গত ৫ সেপ্টেম্বর ওই জবানবন্দি তার কাছ থেকে জোর করে নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তা প্রত্যাহারের জন্য আদালতে আবেদন করেন। ওইদিন তার জামিনের জন্যও আবেদন করা হলে তা নাকচ করে দেন আদালত।
অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ‘ও’ লেভেলের শিক্ষার্থী ঐশীর বয়স বিদ্যালয়ের নথি অনুযায়ী ১৮ বছরের কম হওয়ায় তাকে রিমান্ডে নেয়ায় শিশু আইন লঙ্ঘন হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে।
এই সমালোচনার মধ্যে আদালতের অনুমতি নিয়ে গত ২১ অগাস্ট ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসকদের মাধ্যমে তাদের বয়স পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার প্রতিবেদনে চিকিৎসকরা জানান, ঐশীর বয়স ১৯ এর কাছাকাছি।
বয়স নিয়ে বিতর্কের মধ্যে ঐশীকে গাজীপুরের কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্রে রাখা হলেও পরে আদালতের নির্দেশে তাকে নেয়া হয় কাশিমপুর কারাগারে।
এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে বুধবার হাইকোর্ট মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ঐশীকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানান্তরের নির্দেশ দেন। বুধবার বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি জাফর আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চ এ সংক্রান্ত একটি রুল জারি করে।
রুলে ঐশীকে বিএসএমএমইউয়ে রেখে ওই হত্যাকাণ্ড, আত্মসমর্পণের আগে ও পরের তাঁর মানসিক অবস্থা ও মাদক নেওয়ার ইতিহাস নিরূপণে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
রুলে হত্যাকাণ্ডের আগে ও পরে তাঁর মানসিক অবস্থা এবং মাদক নেওয়ার ইতিহাস মূল্যায়ন করতে বলা হয়েছে।
পরীক্ষা নিরীক্ষাগুলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) তে রেখে করতে বলা হয়। প্রয়োজনে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাউন্সিলিং এর ব্যবস্থাও করতে বলা হয়েছে।