কানিজ আকলিমা সুলতানা: একটা খবর হৃদপিণ্ডটাকে খামচে ধরছে। ক্যালিফোর্নিয়ায় বাঙ্গালি এক পরিবারে মা বাবাকে হত্যার দায়ে তাদের ২২ আর ১৭ বছরের দুই ছেলেকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। মাত্র কৈশোর পেরিয়ে আসা ছেলেরা মা-বাবাকে হত্যা করতে পারে? এখনও যে ওদের সব পাওয়া আর আব্দার মা-বাবার কাছেই থাকার কথা! ওরা কেন মা বাবাকে হত্যা করলো? কতটা মনোবৈকল্যে ভুগছিল ওরা? মা বাবা কি টের পায়নি কিছু? টের পেয়ে থাকলে তা নিরাময়ে কিছু করেছিল কি? কি ভয়ংকর কষ্টে ছেলে দু’টি তখনও মরেছিল, এখনও যেমন মরে আছে ঢাকার ঐশী!
দুনিয়া জুড়ে চলছে অসহিষ্ণুতা। মা-বাবা সন্তানদের হত্যা করছে বা সন্তানরা মা-বাবাকে হত্যা করছে এমন ঘটনার সংখ্যা অনুল্লেখ্য হলেও পারস্পরিক মানসিক বা শারীরীক নির্যাতনের সংখ্যা সত্যিই ভয়াবহ। কেন চলছে এই ভয়ংকর পরিস্থিতি?
ব্যক্তিগত জীবনে পাওয়া উপেক্ষা, চাপ, টানা অনিশ্চয়তা, টিকে থাকার লড়াই, উচ্চাভিলাষ, মাদক, পর্ণ সমাজকে অস্থির করে তুলছে। পথের বাঁকে পথ হারিয়ে ফেলছে মানুষ। বাড়ছে অবিশ্বাস, উষ্মা। ক্ষত বিক্ষত হচ্ছে স্বজন, সমাজ।
অথচ এটা চিরসিদ্ধ যে সব সমস্যার সমাধান হয় না। একটা সুস্থির জীবনের জন্য কিছু মেনে নিতে হয়, কিছু মানিয়ে নিতে হয়, পরিস্থিতি মোকাবেলায় ধৈর্য্য ধরতে হয়, আশায় বুক বাঁধতে হয় আর সাথে ইতিবাচক চিন্তা করতে হয়।
এই যে রুদ্র বৈশাখ সারাদিন ধরে দুঃসহ তাপ ঝরিয়েই চলছে তারপরেও প্রকৃতিতে ফুটছে জারুল, বকুল আর কৃষ্ণচূড়া। ভর দুপুরে জানালার পাশের মধুমালতির লতায় দোল খেয়ে চলছে চড়ুই পাখির জোড়া। প্রকৃতিতে কখনও আঘাত হানে ভূমিকম্প ঝড় খরা বন্যা, কিন্তু এর সবই আসে খুব অল্প সময়ের জন্য।
সবার জীবনের সব অমানিশার অবসান ঘটুক। সকল অন্তর যাতনায় পরিবার এবং সমাজের মমতা থাকুক আবরণের মতো।
ঝলমলে আলোকিত দিন, সুবাতাসে আনন্দিত থাকুক সবাই।
মঙ্গল হোক, কল্যাণ হোক ধরণীর।