উইমেন চ্যাপ্টার: আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে বর্তমান রাজনৈতিক পরিমন্ডলে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের হঠাৎ সক্রিয়তা নিয়ে বাক্ বিতণ্ডা অব্যাহত রয়েছে।
এবার দেশে ফেরত আসার পর থেকে নানাভাবেই তিনি আলোচনায় রয়েছেন। সংবাদ মাধ্যমগুলোও নানাভাবে তাকেই আলোচনায় রেখেছে।
তবে এবারের সর্বাধিক আলোচিত বিষয় হলো গত মঙ্গলবার তিনি বলেছিলেন, ‘তার কাছে তথ্য আছে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসবে’।
এই সংবাদ প্রচারিত হলে বিভিন্ন মহল থেকে বিভিন্ন প্রকারের ব্যাখ্যা, বিবৃতি ও সমালোচনা করা হয়। আওয়ামী লীগের মতে, দলীয় নিষ্ক্রিয় কর্মীদের উজ্জীবিত করতে তিনি এমন বলেছেন। বিএনপি আবার এটিকে আগামী নির্বাচনের বিশাল ষড়যন্ত্রের আগাম জলজ্যান্ত প্রমাণ হিসেবে দেখছে।
এ সম্পর্কে রোববার এক বিবৃতিতে জয়ের ‘মা’ খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তাঁর মতে, জরিপের তথ্যের উপর ভিত্তি করেই জয় এমন কথা বলেছেন। আওয়ামী লীগ নিজেদের দলের অভ্যন্তরের বিষয়াদিতে নজর রাখার জন্য নিজস্ব জরিপ করে থাকে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
জয় যা ভেবেই বলুক না কেন, তিনি এখন যে সক্রিয়, সেটাই এখন রাজনৈতিক ও সাংবাদিক মহলের মূল আলোচনা।
এদিকে কিছুদিন ধরে স্ত্রীর সাথে জয়ের বিবাহবিচ্ছেদ নিয়ে গুঞ্জন তৈরি হয়েছিলো। সস্ত্রীক সন্তানকে নিয়ে তার দেশে আসাকে অনেকে সমালোচকদের এক প্রকারের জবাব দেয়া হিসেবেও দেখছেন অনেকেই।
জয়ের বর্তমানে অনলাইনের কার্যক্রমও চোখে পড়ার মত। তিনি নিজ জায়গা থেকে যে দলের কর্মীদের উজ্জীবিত করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছেন সেটা এখন অনেকটাই দৃশ্যমান।
এ সম্পর্কে বিশ্লেষকরা বলছেন, মি. ওয়াজেদের এবারকার কর্মকাণ্ডে অনেকটাই স্পষ্ট যে তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় হচ্ছেন।
এ বিষয়ে বিবিসি অনলাইনের একটি প্রতিবেদনে দৈনিক সমকালের সম্পাদক গোলাম সারওয়ারকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, “জয়ের রাজনীতিতে আসার ব্যাপারটি এবার অনেকটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। গত নির্বাচনেও তার মোটামুটি পরোক্ষ একটা ভূমিকা ছিল। আর এবার তার কার্যক্রমে বোঝা যাচ্ছে এবারকার অংশগ্রহণটা অনেক সরাসরি হবে।”
আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন ‘রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য হিসেবে জয় রাজনীতিতে আসতেই পারেন। এটাই স্বাভাবিক। এই মুহূর্তে তিনি যেহেতু দু-একটা রাজনৈতিক কর্মসূচীতে অংশ নিচ্ছেন সেহেতু ধরেই নেয়া যেতে পারে রাজনীতিতে তার আগ্রহ সৃষ্টি হচ্ছে’।
জয়ের বক্তব্যের বিরোধিতা করে বিবৃতি দেয়াকে সঠিক উল্লেখ করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “উনি রাজনীতিতে আসতেই পারেন। যেকোন মানুষেরই রাজনীতি করার অধিকার রয়েছে। কিন্তু উনি আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতিতে না এসেও যখন দেশের নির্বাচন সম্পর্কে কিংবা যেকোনও রাজনীতিক ইস্যু সম্পর্কে মন্তব্য করবেন, তখন সেটা রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়ার অংশ বলে আমরা মনে করি। সেজন্যই জয় আগামী নির্বাচন সম্পর্কে যে বক্তব্য দিয়েছেন যে তার কাছে আগামী নির্বাচন নিয়ে তথ্য আছে, সে বিষয়ে আমরা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছি।”
উল্লেখ্য, জয় এখনো আওয়ামী লীগের কোন গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক পদেও অধিষ্ঠিত নন। উপরন্তু তিনি এখনো মূলত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। এবং সেখানে তিনি একজন সফল তথ্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ হিসেবেও পরিচিত। তাই অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, তিনি যদি রাজনীতিতে সক্রিয় হতেই চান তবে তিনি প্রকাশ্যে আসছেন না কেন?