ধ্যানের পাহাড়ে আত্নজাগরণ

lamaমনিজা রহমান (উইমেন চ্যাপ্টার): আমার জীবনের অন্যতম … নাকি সেরা তিনটি দিন কাটালাম বান্দরবানে লামা সফরে। আমি সব সময়ই সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগি। তবে এবার কিভাবে যেন সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম। আর নিয়ত করলে সুযোগ আসবেই।
অনেকদিন পরে দূর সম্পর্কের ভাইঝি শান্তা ফোন করল। ওর স্বামী ইরাক গেছে। তাকে বিদায় দিতে মেয়েকে নিয়ে ঢাকায় এসেছে ভাশুরের বাসায়। মগবাজারে বাসা। বান্দরবানের লামায় রওনা হবার আগের দিন ফোন করল ও। বললাম, কালকে আমার বাসায় চলে আয়। এসে থাকবি কিছুদিন। আমি ঢাকার বাইরে যাব।
শান্তা রাজী হল।
যাবার দিন বিকালে আমার বোনও এল। সন্ধ্যায় রওনা হলাম। তিন বছরের ছেলে সৃজন সঙ্গে এল বাস কাউন্টার পর্যন্ত। ফকিরেরপুলে সাউদিয়া বাসের কাউন্টারে পৌঁছানোর পরে ও কেন যেন গাড়ী থেকে নামতে চাইল না। আট বছর বয়সী বড় ছেলে মনন আসেনি। তবে রওনা দেবার পরে ফোন এল, মনন আমাকে খুব মিস করছে। কান্নাকাটি করছে এজন্য।
বাসে বেশীরভাগই পরিচিত মুখ। নায়ক ইমন ছিল। আমার দুই বন্ধু পেলাম। জুলিয়া আর মাহমুদ। অভিনেত্রী মোমেনা চৌধুরীকে পেলাম। খুব মজা হল জার্নিটা। বাসে গানের লোক অনেকেই। তারা সারা রাত গানে-আড্ডায় মাতিয়ে রাখল। ভোরের দিকে সামান্য ঘুম হল। ছয়টার দিকে আমরা ওখানে পৌঁছালাম। বাস থেকে চান্দের গাড়ী। সেখানেও নানা ইয়ার্কি চলল। প্রশ্ন করে একটা বিষয় জানলাম, এই দলে আমিই একমাত্র নতুন মুখ। আর সবাই আগেও বহুবার এসেছে লামায়।
চান্দের গাড়ীতে ঝাঁকি খেতে খেতে চললাম। প্রথম দিকে সাধারণ সমতলের গ্রামই মনে হচ্ছিল লামাকে। আস্তে আস্তে চারদিকে সবুজ পাহাড় দেখতে পেলাম।
কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের স্বর্গ বলে বিবেচিত বান্দরবানের লামায় পৌঁছানোর পরে কোয়ান্টিয়ার ভাইরা ছুটে এল ব্যাগ বহন করে নেবার জন্য। ক্লান্ত-রাত জাগা শরীর মুহুর্তে স্নিগ্ধ হয়ে গেল। এমন নির্মল বাতাস। এই বাতাসে যেন অফুরন্ত শক্তি বা কোয়ান্টামের ভাষায় ‘কোয়ানফি’। সবাই যেন দারুণভাবে রিচার্জ হলাম।
দরবারান ছাড়িয়ে অনেকদূর হেটে যাবার পরে ধ্যান ঘর। তারপর আমাদের বাসস্থান। লম্বা ঘর। সবার জন্য ঢালা বিছানা। চমকে গেলাম। রুমে ফ্যান নাই। ফ্যান ছাড়া এভাবে থাকব কিভাবে ? বাসায় কারেন্ট চলে গেলে অস্থির হয়ে যাই। রাতে এসি ছাড়া ঘুমাতে পারি না। তাহলে ?
গোসল সেরে এসে টের পেলাম রুমে অত গরম লাগছে না। বরং বেশ ঠান্ডা বাতাস বইছে। তারপর ঘুমিয়ে গেলাম। উঠে ঢাকায় ফোন করার কথা মনে হল। কোয়ান্টিয়াররা বলল, রহম গিরিতে উঠতে। উঠলাম। রহম গিরিকে পাহাড় বা টিলা দুই বলা যায়। সেখানে উঠে ফোন করলাম বাসায়। মনন স্কুল থেকে বাসায় ফিরেছে। সৃজন স্কুলে আছে।
এরপর ধ্যান ঘরের সামনে বসে মেডিটেশন করলাম। খুব ভালো লাগলো। এত ভালো অনেকদিন লাগেনি।
দরবারানে সবার জন্য খাওয়ার ব্যবস্থা। সকালে খিচুড়ি ও ডিম রান্না করা হয়েছিল। দুপুরে সবজি আর তেলাপিয়া মাছ। অসাধারণ রান্না।
দুপুরে আমাদের রিপোর্টিং ধ্যান ঘরে। গুরুজী এবার রমজান মাসে আমপারা ও সাত সুরা অনুবাদ করেছেন। সেটাই আমাদের সবাইকে দেয়া হল। গুরুজী কোরআনের মর্মবাণী নিয়ে আলোচনা করলেন।
প্রথমে ছিল ভূমিকা নিয়ে আলোচনা। আমি কি বুঝেছি তা নয়। লেখক কি বোঝাতে চেয়েছেন, সেটা বোঝাতে হবে।
আমাদের পাঁচজনের গ্রুপ। সবাই মিলে আলোচনা করে কয়েকটা পয়েন্ট পেলাম।
১. এতোদিন কোরআন পড়তাম আরবী ভাষায়। নেকি বা সোয়াব পাওয়ার আশায় কোরআন খতম করেছি বহুবার। কিন্তু কোরআনের প্রকৃত মর্মবাণী কিছু বুঝতে পারিনি। কিন্তু এবার বাংলা ভাষায় কোরআন পড়ব। শুধু তাই নয়। ধ্যানের স্তরে উপলব্ধি করবো কোরআনের আয়াত।
২. এই পৃথিবীতে সব মানুষ তার কাজের ক্ষেত্রে স্বাধীন। কিন্তু প্রত্যেক মানুষকে তার কাজের জন্য জবাবদিহি করতে হবে।
৩. জন্মের সৃষ্টি রহস্য, ইহকালের জীবন বিধান ও পরকালের মুক্তি সবই আছে কোরআনে।
৪. কোরআন জ্ঞান অর্জনকে উদ্বুদ্ধ করে।
৫. পূর্ব পুরুষের হাজার বছরের কুসংস্কার থেকে বেরিয়ে এসে সঠিক জীবনদৃষ্টি দেয় কোরআন।
৬. কোরআনের মর্মবাণী বুকে ধারণ করে এক সময়ের সুপার পুওর আরবরা যেভাবে সুপার পাওয়ার হয়েছিল, সেভাবে বাংলাদেশের মানুষও কোরআনের শিক্ষা থেকে বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে পারে।
এই পয়েন্টগুলি নিয়ে প্রত্যেক গ্রুপ তাদের নিজেদের অবস্থান জানালো। এক সময় আমারও ডাক পড়ল। কোয়ান্টায়নে জীবনে প্রথম দিনেই কিছু বলার সুযোগ পেলাম।
বিকালে পাহাড়ে যাত্রা করলাম। আগেও পাহাড়ে গিয়েছি। সিলেট অঞ্চলে। তবে এবারের পাহাড় অনেক উঁচু। পথ যেন শেষ হতে চায় না। এক সময় আমরা সমতল ভূমিতে পৌঁছালাম। সেখানে মেডিটেশন করলাম। মেডিটেশন শেষে অদ্ভুত অনুভূতি হল। কি নি:সীম শূন্যতা। চারদিকে কোন আওয়াজ বা শব্দ নেই। যত দূর চোখ যায়…শুধু সবুজ।
রমজানের চাঁদ দেখা না যাওয়াতে রোজা হল না বুধবার। সকালে উঠে আবারও পাহাড়ে ওঠার প্রস্তুতি। রাত সাড়ে তিনটায় তুলে দেয়া হল ফজরের নামাজ পড়ার জন্য। নামাজ পড়ার পরে টোস্ট আর চা। তারপর রওনা হলাম। এবার অন্য পথ। এই পথ আরো কঠিন। গ্র্যান্ড অলিম্পিয়ান মাঠে নিয়ে যাওয়া হবে। কত পথ যে ঘুরলাম। ভাবতে খুব কষ্ট হচ্ছিল যে এই পথ দিয়ে আবার ফিরতে হবে। কিন্তু অন্য পথ দিয়ে আবার গ্র্যান্ড অলিম্পিয়ান মাঠেই এলাম। একটু আগে পাহাড়ের গায়ে আনারস দেখলাম। দেখেছি রাবারের বন। আমাদের সদ্য কেটে আনা আনারস খাওয়ানো হল। কি যে মজা!
দুপুরের আগে ধ্যান ঘরে আবার মিলিত হলাম আমরা। এবার ভূমিকা থেকে একটা লাইন নেয়া বেছে নেয়া হল আলোচনার জন্য। মডারেটর রাবেয়া আপা জানালেন, এবারের আলোচনার বিষয় – অজ্ঞতাকে কোরআন চিহ্নিত করেছে মহাপাপ রূপে। এখানে যে পয়েন্টগুলি উঠে এল –
১. কোরআন খতমের জন্য শুধু নয়। কোরআন বৈজ্ঞানিকভাবে জীবনযাপনের বিজ্ঞান। আগের মতো সব ব্যাপারে বিচার সালিশ করতে পারব না। কোরআন আমাদের শিক্ষা দেয়, কোথা থেকে বাধা আসে?
২. জীবনের সব প্রশ্নের উত্তর কোরআনে আছে।
৩. আমরা অনেক কিছু শুনি। কিন্তু উপলব্ধির গভীরতায় আনি না। নামাজ পড়া মানেই ভালো মুসলমান নয়। জীবনের সব ক্ষেত্রেই ভালো মানুষও হতে হবে। ‌ওজনে কম দিও না’- বাক্যটা কেবল ব্যবসায়ীদের জন্য নয়। আমরা কাছের লোকদের ক্ষেত্রে কতখানি দায়িত্ব পালন করি, তারও একটি প্রকাশ হতে পারে এই বাক্যটি। সারা রাত ইবাদতের চেয়ে এক ঘন্টার জ্ঞান চর্চাকে শ্রেয়তর বলা হয়েছে কেন? তার মানে এখানে চিন্তাশীলদের আলাদা মর্যাদা রাখা হয়েছে। গিলাবের মধ্যে কোরআন রেখে দিলে মানুষের মর্যাদা বাড়ে না।
৪. পড়, তোমার প্রভুর নামে….. কোরআনের শুরুতেই আছে শেখার কথা। মনের সব দরজা-জানালা খুলে না দিলে সেই শেখা হবে না। কোরআন মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে জ্ঞানের পথে, মুক্তবুদ্ধির পথে।
ওই দিন রাতে গুরুজী আমাদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখলেন। তিনি যা বললেন, তার কিছু অংশ তুলে ধরছি……
‌‌‍নারী যুগে যুগে অত্যাচারিত হয়েছে। এর কারণ নি:সংকোচ প্রকাশ। তার মানে এটা বেয়াদবি বা অশিষ্টাচার নয়।
তিনি আরো বলেছেন, যেকোনো কিছু জানতে হবে। মানতে হবে। তারপর নি:সংকোচ প্রকাশ ঘটাতে হবে। বিশ্বাস ও প্রকাশে যদি আন্তরিকতা থাকে, স্থান-কাল-পরিবেশ বুঝে কথা বলা গেলে যে কোন কথাই অন্যের হৃদয়ে স্পর্শ করবে। কোরআনের আসল শক্তি কোথায়? নির্ভেজাল সত্যকে সহজ-সরল ভাবে উপস্থাপন করা।
গুরুজী বলেন- কোরআন যেভাবে তৌহিদের শিক্ষা দেয়, একইভাবে শোকর গোজারের শিক্ষাও দেয়। যত শোকর, তত ভালো থাকবেন। দু:খ যদি আপনাকে দু:খিত করতে পারে, তবে সে আপনাকে ছেড়ে যাবে না।
তিনি বলেন,‌মা যেমন সন্তানকে ভালোবাসে। তেমনি ভালোবাসুন কোরআনকে।
গুরুজী আলোচনা শেষের আগে আমাদের সুরা হুজুরাত পড়ার জন্য বলে যান।
বিকেলে দরবারানে সবার উপস্থিতিতে রোজার তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা হয়। আলোচক মওলানা সাইদুল হক বলেন, ‌আছর থেকে মাগরেব, এক জুমা থেকে আরেক জুমা যেমন, তেমনিভাবে এক রমজান থেকে আরেক রমজান হল কাফফারা। রোজার মাসে ভালো কাজের ফল আল্লাহ নিজের হাতে দেবেন। রমজান মাসে যেকোনো ভালো কাজের প্রবৃদ্ধি ৭০ থেকে ৭০০ গুণ। সেটা ইবাদত হতে পারে, আবার দান হতে পারে।
পরদিন রোজা। তার প্রস্তুতিও শুরু হয়ে যায়। আমি জীবনে প্রথম জামাতে তারাবির নামাজ আদায় করি। ২০ রাকাআত তারাবি নামাজ..সব মিলে ৩০ রাকাতের বেশি নামাজ ফ্যানবিহীন ঘরে আদায় করতে কোন সমস্যা হয় না। রুমে ফিরে গোসল করে সবাই ঘুমিয়ে পড়ি। রাতে উঠে সেহরি খেতে হবে।
রাত তিনটায় আমাদের উঠিয়ে দেয়া হয়। সেহরির আয়োজনে ভর্তা আর সবজি। কখনও এভাবে শুধু নিরামিষ দিয়ে সেহরি খাইনি। খাওয়া শেষ করে জামাতে ফজরের নামাজ পড়ি। তারপর রুমে এসে আটটা পর্যন্ত ঘুমাই।
বৃহস্পতিবার সকালে শিডিউলের শুরুতেই ছিল সুরা হুজুরাত নিয়ে আলোচনা। যেহেতু সবাই রোজা রেখেছে, তাই পাহাড়ে ওঠার কোন কর্মসূচি ছিল না।
সুরা হুজুরাতকে বলা হয় সামাজিক সুরা। ১৪শ বছর আগে এই সুরায় মানুষের জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে এখানে যেভাবে বলা হয়েছে, তাতে মনে হয় কোরআন ওই সময় যেমন আধুনিক ছিল, আগামীতেও সেভাবে থাকবে। সুরা হুজুরাত নিয়ে গ্রুপ আলোচনায় আমরা যে পয়েন্টগুলি তুলে ধরি-
১. সব সময় আল্লাহ সচেতন থাক। অবশ্যই আল্লাহ সব শোনেন, সব জানেন।
২. কোন খবর বা তথ্য দিলে অবশ্যই তার সত্যাসত্য যাচাই করবে। তা না হলে (হুজুগে পড়ে) কোন জনগোষ্ঠির ক্ষতিসাধন করে ফেলতে পার।
৩. আল্লাহ তোমাদের কাছে বিশ্বাসকে প্রিয় করেছেন আর তোমাদের হৃদয়ে এর সৌন্দর্য্যকে গেঁথে দিয়েছেন। সেই সাথে সত্য অস্বীকার, সত্য ত্যাগ ও অবাধ্যতাকে তোমাদের কাছে অপ্রিয় করেছেন।
৪. বিশ্বাসীরা পরস্পরের ভাই। তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব-সংঘাত হলে শান্তি স্থাপন করবে।
৫. কাউকে উপহাস কর না বা মন্দ নামে ডেক না। কারণ উপহাসকারী ব্যক্তি তোমার চেয়ে ভালো হতে পারে।
৬. তোমরা সাধারণভাবে অন্যের ব্যাপারে আন্দাজ-অনুমান কর না।
৭. অন্যের ব্যক্তিগত ব্যাপারে গোয়েন্দাগিরি কর না।
৮. কারো অনুপস্থিতিতে গীবত বা গোয়েন্দাগিরি কর না।
৯. সত্যিকারের বিশ্বাসী তারাই, যারা আল্লাহ ও রসুলের প্রতি বিশ্বাসস্থাপনের পরে কোন ধরনের সন্দেহকে প্রশ্রয় দেয় না।
১০. তোমরা কি ধর্মপালনের কথা আল্লাহকে জানাতে চাইছ, কিন্তু আল্লাহ আকাশ ও পৃথিবীর সব কিছুই অবগত।
এই পয়েন্টগুলি নিয়ে আলোচনায় জীবনের অনেক দিক উঠে আসে। যা বর্তমান প্রেক্ষাপটেও আমরা খুবই অনুভব করি। আমাদের এই আলোচনায় অন্য ধর্মের লোকজনও অংশ নেন। তারাও কোরআনের আয়াতের মাধুর্য দেখে বিস্মিত হন। এই নিয়ে শ্রদ্ধেয় মডারেটর রাবেয়া আপা বলেন, বিশ্বাসীরা সব ধর্মেই একই চেতনা ধারণ করেন। কারণ সৃষ্টিকর্তা একজনই। শুধু ধর্ম আলাদা। ধর্মাচার আলাদা।
দুপুরে আবার বিষয়ভিত্তিক আলোচনা। এবারের বিষয় : নামাজে মনোযোগ বৃদ্ধি। আলোচক মওলানা সাইদুল হক। পুরো সফরে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা পর্ব ছিল এটি। আমরা সবাই জানি, নামাজ বেহেস্তের চাবি। জানার পরেও আমরা মনোযোগের সঙ্গে নামাজ পড়তে পারি না। মওলানা সাইদুল হক সেটাই তুলে ধরলেন আমাদের মধ্যে। তিনি বললেন,নামাজ পড়ত গেলে বেশীরভাগের মনেই হতাশা জাগে। আল্লাহ কি আমার নামাজ কবুল করবেন ? আপনারা কি কখনও ভেবেছেন যে নামাজ হতে পারে একটা আনন্দের উৎস।
তিনি আরো বললেন, আল্লাহর সব সৃষ্টিই আল্লাহতায়ালাকে সেজদা করে। যাদের কোন ভূত-ভবিষ্যৎ নাই, যেমন চন্দ্র, সূর্য, তারা, গাছপালা, পশুপাখি সবাই আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নামাজ পড়ে। অথচ এদের কাউকে পরকালে জবাবদিহি করতে হবে না। জবাবদিহিতা সত্ত্বেও মানুষ ইহকাল ও পরকালের জন্য নামাজ কেন পড়বে না ?
তিনি আরো জানান, নামাজ কোন ব্যাক্তিগত বিষয় নয়। এটা দ্বিপাক্ষিক। আল্লাহ নামাজের আয়োজক ও আহবানকারী। মানুষ এখানে অংশগ্রহণকারী। এখানে লাল ফোনে আল্লাহর সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পায় মানুষ।
এই আলোচনায় যথেষ্টই উপকৃত হলাম। গুরুজী ফজরের নামাজের পর থেকে কোয়ান্টায়ন দিয়েছেন। মানে নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত মৌন থাকতে হবে। আমরা সেই অবস্থাতেই ব্যাগ গুছিয়ে প্রস্তুত হলাম। বিকালে আছরের নামাজের পরে মোনাজাত হল। সবাই আল্লাহর কাছে হাত তুলে কান্নাকাটি করল।
ইফতারের পরেই আমাদের রওনা হবার নির্দেশ। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা একদল সত্যান্বেষী মানুষ এখন ফিরবে প্রিয় গৃহে। চাঁদের গাড়ীতে বুকে জ্ঞান আর বিশ্বাসের আলো জেলে আমরা সবাই যাত্রা শুরু করলাম।
লেখক পরিচিতি: সাংবাদিক ও লেখক

শেয়ার করুন: