আপেল মাহমুদ: আচ্ছা ধরুন মাধ্যমিক পড়ুয়া এক মেয়ে তার বন্ধুদের দ্বারা ধর্ষিত হয়েছে। এখন আপনারা নিউজের শিরোনাম কি দেবেন?
-ষোড়শীকে রাতভর গণধর্ষণ।
-ষোড়শী? গণধর্ষণ? এসব শব্দের কারণ কি?
-পাঠক পড়ার জন্য আগ্রহ পাবে।
-ও আচ্ছা। তাহলে নায়িকা নাবিলা’র অসতর্কতাবশত: একটা ব্যক্তিগত ভিডিও প্রকাশ হয়ে গেছে ইন্টারনেটে এটার শিরোনাম কি দেবেন?
-এবার টপ নায়িকা নাবিলার হট স্ক্যান্ডাল, ইন্টারনেটে তোলপার। (পড়ুন: ভিডিও সহ)
-হট স্ক্যান্ডাল? ইন্টারনেটে তোলপাড়? আবার ভিডিও কেন?
-ভাই এটাও পাঠকরা পড়ার আগ্রহ পাবে।
-ও আচ্ছা। তাহলে ধরুন একটা ছেলে রাস্তায় ইভটিজিং করে জনগণের হাতে প্যাদানী খেয়েছে_ এটার শিরোনাম কি দিবেন?
-অশ্লীল পোশাকে রমণী, ফেঁসে গেল যুবক!
-অশ্লীল পোশাক কই পেলেন? আমিতো পোশাক নিয়ে কিছুই বলিনি।
-তাতে কি? এসব ঘটনায় পোশাক নিয়ে লিখলে পাঠকরা পড়ার আগ্রহ পাবে।
-ও আচ্ছা। তাহলে ধরেন আপনি উঠতি নায়িকা স্বপ্নার সাক্ষাৎকার নেবার জন্য তার বাড়িতে গেলেন, কিন্তু নায়িকা শুটিংয়ে থাকায় আপনি তার সাক্ষাৎকার নিতে পারলেন না, এক্ষেত্রে কি শিরোনামে নিউজ করবেন?
-মিডিয়ায় আসতে না আসতেই ভাব নিচ্ছেন স্বপ্না।
-কিন্তু উনি তো শুটিংয়ের কারণে আপনাকে সময় দিতে পারেননি?
-তাতে কি? চাইলেই সময় দিতে পারতো।
-ও আচ্ছা। তাহলে কোন নায়িকা যদি কাজ করতে করতে শুটিংয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে বা অসুস্থ হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে আপনারা কি শিরোনামে নিউজ করবেন?
-শুটিং ইউনিটে কেলেঙ্কারি, অবস্থা সামলাতে না পেরে অজ্ঞান নায়িকা!
-ও মাই গড! কেন কেন? কেলেঙ্কারি কেন?
-আরে পাঠক পড়ার আগ্রহ পাবে।
-ও আচ্ছা। তাহলে ধরুন কোন মেয়েকে দুর্বৃত্তরা ধর্ষণ করল, বাঁচাতে গিয়ে মেয়ের মা-ও ধর্ষণের শিকার হলো, আপনারা সংবাদ শিরোনাম কি করবেন?
-মা-মেয়ে উপুর্যপরি গণধর্ষণের শিকার।
-উপর্যুপরি? গণধর্ষণ? এগুলো নিশ্চই পাঠকের পড়ার আগ্রহ তৈরির জন্য?
-এক্সাক্টলি।
-আচ্ছা তাহলে ধরুন কয়েকজন মাস্তান একটা মেয়েকে তুলে নিয়ে গেল। পরদিন রাস্তার পাশে মেয়েটাকে রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া গেল। আপনারা এটার কি শিরোনাম দিবেন?
-সারারাত ধরে লাগাতার গ্যাং রেপ, রাস্তার পাশে কিশোরীর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার।
-বাহ, বাহ, বেশ। আপনার সাক্ষাৎকার নিয়ে বেশ ভাল লাগলো।
-ধন্যবাদ। তা আমার এই সাক্ষাৎকারের শিরোনামটা কি দেবেন?
-বাঁদররাও এখন লিখতে শিখেছে।
-মানে? এটা কেমন শিরোনাম?
-ভাই, এই শিরোনাম দিলে পাঠকরা পড়ার আগ্রহ পাবে।