উইমেন চ্যাপ্টার ডেস্ক (জুন ১৩): ২০১১ সালের মার্চে সিরিয়ায় বিক্ষোভ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত কয়েক হাজার শিশু নিহত হয়েছে। শিশু এবং সশস্ত্র সংঘাত নিয়ে জাতিসংঘের নতুন বৈশ্বিক রিপোর্টে একথা উল্লেখ করা হয়েছে।
ওই গবেষণায় এই সংখ্যাকে “অসহনীয়’ উল্লেখ করে বলা হয়েছে, সরকারি বাহিনী এবং বিদ্রোহীরা দুপক্ষই শিশুদের আত্মঘাতী হামলাকারী বা মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। যেসব দেশে শিশুরা সহিংসতার শিকার হচ্ছে সেরকম ২১টি দেশের ওপর এই গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে। প্রথমবারের মতো এই গবেষণায় আফ্রিকার দেশ মালিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অভিযোগ আছে, মালিতে ব্যাপক হারে শিশুদের সশস্ত্র কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে এবং তাদের ওপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে।
এ বছর এই গবেষণায় ১৪টি দেশের বিভিন্ন সশস্ত্র সংগঠন এবং ৫৫টি সশষ্ত্র বাহিনীকে সংযুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে নতুন দল হিসেবে সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক এন্ড ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক কঙ্গোও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
জাতিসংঘের গবেষণায় বলা হয়েছে, মালিতে ১৫ দশমিক ৮ মিলিয়ন জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি শিশু এবং দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় অংশের সংঘাতপূর্ণ এলাকায় এদের অধিকাংশই ভয়াবহভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। ২০১২ সালে মালির নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভয়াবহ অবনতি ঘটেছে। আর এর সবই ঘটেছে বিভিন্ন সশস্ত্র সংগঠনের শিশুদের ব্যবহারের মধ্য দিয়ে। তাদের হত্যা করা হয়েছে, অঙ্গহানি ঘটানো হয়েছে, বিভিন্ন সশস্ত্র কাজে নিয়োগ করা হয়েছে, আটক করা হয়েছে এবং সর্বোপরি তাদের ওপর চলেছে অমানুষিক নির্যাতন। এদের অধিকাংশেরই বয়স ১২ থেকে ১৫। কন্যা শিশুরা হয়েছে নির্মম ধর্ষণের শিকার।
অন্যদিকে, সিরিয়ায় শিশুরা বিশ্বের সবচেয়ে বেশিসংখ্যক হারে নির্যাতনের মুখে পড়েছে। জাতিসংঘের পরিচালিত এই গবেষণাটি বিশেষ প্রতিনিধি লেইলা জেরোগুই নিউইয়র্কে সাংবাদিকদের বলেন, তাদের ওপর হেন নির্যাতন নেই, যা করা হয়নি। বিদ্রোহীদের সংগঠনগুলোর সাথে শিশুদের যোগসাজশ রয়েছে এমন অভিযোগ এনে সরকারি বাহিনী তাদের ওপর চড়াও হয়ে নির্যাতন চালিয়েছে বলেও লেইলা জানান।
২০১১ সালের মার্চে সংঘাত শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ৮০ হাজারেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে। ২০ লাখ শিশু এ ঘটনায় এতিম হয়েছে পড়েছে, যাদের দরকার এখন সহায়তা। আবার, গবেষণায় এটিও বলা হয়েছে যে, ২০১২ সালে বিভিন্ন সশস্ত্র সংগঠনের হাত থেকে কয়েক হাজার শিশুকে মুক্ত করাও সম্ভব হয়েছে। এই তালিকায় নেপাল এবং শ্রীলংকার নামও উঠে এসেছে।
সংঘাত-সশস্ত্র সহিংসতায় শিশুদের ব্যবহার বন্ধে গবেষণায় এ সংক্রান্ত একটি অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করা হয়েছে। এতে দক্ষিণ সুদান, মিয়ানমার, কঙ্গো এবং
সোমালিয়ার সরকারি বাহিনী এবং সশস্ত্র সংগঠনগুলোকে আওতায় আনা হয়েছে।