
ঠিক একই ব্যাপার আমি প্রত্যক্ষ করলাম গায়িকা ন্যান্সিকে নিয়ে। তিনি কোন একটা ব্যাপারে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। এই খবরটাকে সাংবাদিকরা যেন জাতীয় দুর্যোগ বানিয়ে ফেললো। প্রতিটা সংবাদপত্র খুললেই চোখে পড়ে ন্যান্সির কিছু দৃষ্টিকটু ছবির সাথে তার শারীরিক অবস্থার সর্বশেষ খবর এবং তার সাথে তার পরিবারকে নিয়ে কাঁটা ছেড়া। এসব কাঁটা ছেঁড়ায় তার দুটো অবুঝ সন্তানও বাদ যাচ্ছেনা। সাথে টনিক হিসেবে কাজ করছে একদা ন্যান্সির একটি রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে দেয়া কিছু বক্তব্য।
ভাবলে অবাক লাগে সাংবাদিকরা এতোটা নিষ্ঠুর হয় কিভাবে যে, একজন অসুস্থ মহিলার বেসামাল অবস্থার কিছু ছবিকে কেন্দ্র করে প্রতিদিন সেইসব ছবি ছাপিয়ে ব্রেকিং নিউজ করছে? একবারও ভাবছে না তার অবুঝ দুটি শিশুর কথা যে, তাঁরা তাঁদের মায়ের এমন রূপ দেখে অভ্যস্ত নয়, সুতরাং তাঁদের কাছে ব্যাপারগুলো কতটা খারাপ লাগতে পারে অথবা তার পরিবারের কতটা অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে। কিন্তু না তাঁদের কাছে এসবের চেয়ে বড় হচ্ছে ন্যান্সির বেসামাল ছবি দিয়ে খবর বানিয়ে ব্যাবসা করা। একেই কি বলে সাংবাদিকতা? এটাই কি সাংবাদিকদের নৈতিকতা? এসবই কি সাংবাদিকদের মূল্যবোধ? এগুলোই কি তাঁদের দায়বদ্ধতা সমাজ ও জনগণের প্রতি?
এসব ভাবলে সত্যিই ঘেন্না হয় দেশের আনাচে কানাচে গজিয়ে ওঠা এইসব তথাকথিত সাংবাদিকদের প্রতি। সাংবাদিকতা মানে যে শুধুই সংবাদ পরিবেশন এবং ব্যবসা নয়, সাংবাদিকতা মানে যে একটা বিশাল দায়বদ্ধতা এই বোধটুকু যতদিন না আমাদের দেশের সাংবাদিকদের মাঝে জাগ্রত হবে ততদিন এই দেশে শত শত ঐশী, ন্যান্সি প্রতিদিন সাংবাদিকদের সংবাদপত্রের সংবাদের মোড়কে শ্লীলতাহানির খপ্পরে পড়ে নিজেদের আব্রু এবং পরিবারের মানসম্মান খুইয়ে একজন প্রতিবন্ধি নাগরিক হিসেবে সমাজের কোন এক কোণে চরম হতাশায় জীবন যাপন করবে।