(নিচের লেখাটি একট ঘটনার কথা মনে করিয়ে দিল। একটি সুপরিচিত দৈনিকের রিপোর্টিংয়ে কাজ করতো একটি মেয়ে, যে জিনস-ফতুয়া পরে আসতো। এ নিয়ে কানাঘুষা চলতো অফিসে। একদিন চিফ রিপোর্টার মেয়েটিকে ডেকে বললেন, কাল থেকে যেন সালোয়ার-কামিজ পরে আসে। মেয়েটি তখন জিজ্ঞাসা করে, কেন অসুবিধা কোথায়? চিফ রিপোর্টার বলেন, তাদের অসুবিধা হয়। মেয়েটিও তখন চটপট উত্তর দেয়, আপনারাও তাহলে টাইট জিনস পরবেন না। এতে আমাদেরও কাজ করতে অসুবিধা হয়। ভাবি, সব মেয়েই যদি এভাবে উত্তর দিতে পারতো!)
নাজীব আলম: একটি স্যান্ডো গ্যাঞ্জি ও একটি ব্রা বারান্দায় রশিতে শুকাতে দেয়া হয়েছে। তাদের মাঝে কথা হচ্ছে…
স্যান্ডো গ্যাঞ্জি: কি ব্যপার, তুমি বারান্দায় আসলা ক্যন? শরম করে না? মানুষ দেখে ফেলবে তো।
ব্রা: তো কি হইছে! তোমাকেও তো মানুষ দেখতেছে। তোমার শরম করেনা?
স্যান্ডো গ্যাঞ্জি: আমি তো ছেলেদের অন্তর্বাস। আমার লজ্জা করবে ক্যন। লজ্জা নারী আর তার অন্তর্বাসের থাকতে হয়, আমাদের নয়। ব্রা-প্যন্টিদের বারান্দায় মানুষের সামনে আসতে নেই।
এমন সময় বাইরে থেকে দুটি ছেলে ব্রার দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছে আর একজন আরেকজনকে বলছে, “দোস্ত, সাইজ ৩৮।”
স্যান্ডো গ্যাঞ্জিঃ বলছিলাম না। তারাতারি ভিতরে যাও। দেখছো, ওরা তোমারে দেখে হাবিজাবি বলছে।
ব্রা: তো কি হইছে! হাবিজাবি বলছে কারণ ওই ছেলেটা পচা। তোমারে দেখেও কোন মেয়ে বলতে পারে, “দেখছো, চেষ্টটা কত চওড়া!” তখন নিজে লজ্জায় না পালিয়ে বরং মেয়েটাকেই তো বাজারে মেয়ে বলে গালি দিবা।
স্যান্ডো গ্যাঞ্জি: ছেলেদের তো এমনিতেই দেখে দেখে অভ্যস্ত। ওদের দিকে মানুষ এত তাকায়না।
ব্রা: মেয়েদেরগুলোও দেখে দেখে অভ্যস্ত হতে হবে। ওই বেয়াদব ছেলের মায়ের কালো রঙের ব্রা আর আমি একই দোকানে ছিলাম। সেই ব্রা ওদের ঘরে এখানে সেখানে পরে থাকে। ওইটা দেখে তো ছেলেটা ৪০-৪২ বলে লাফিয়ে উঠে না। দেখতে দেখতে অভ্যস্ত হয়ে গেলে অন্যের বারান্দায় শুকোতে দেয়া ব্রা দেখেও আর লাফ দিবেনা।
স্যান্ডো গ্যাঞ্জি: তারপরও, তোমারে দেখলেই ওসব দুষ্ট ছেলেরা নারীর স্তনের কথা মনে করে।
ব্রা: মনে করলে করুক। এইটা ওই ছেলেদের সমস্যা, মেয়েদের তো কোন দোষ নেই। ওদের সমস্যার জন্য ওরা চাইলে সানগ্লাস পরে থাকবে, কিন্তু মেয়েরা এত লুকোচুরি করে তাদের স্যনিটারি ন্যপকিনটা, অন্তর্বাসটা এত লুকিয়ে রাখবে কেন!
স্যান্ডো গ্যাঞ্জি: ওই হারামজাদি, তোর লজ্জা শরম কিছু নেই? আমি ভেতরে যাইতে বলছি, যা। আর কোন কথা হবেনা।
ব্রা ভয় পেয়ে চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো। এমন সময় বাইরে দুজন মধ্যবয়স্ক লোক এসে দাড়িয়েছে। লোক দুটি সমকামি। একজন আরেকজনকে স্যান্ডো গ্যাঞ্জিটার দিকে ইঙ্গিত করে বলছে,
……দেখ দেখ, ওই বাসার সুমইন্যার স্যন্ডো গেঞ্জিটা দেখ! পোলাডার বুক দুইটা ভালোই চওড়া আছে।
…… আবার জিগায়, ঠোঁট দুইটাও যা সুন্দর না। তয় ওর স্যান্ডো গ্যাঞ্জিটা দেইখাই চরম ফিলিংস পাইতাছি। (জিহ্বা চাটছে)
ব্রাটি স্যান্ডো গ্যাঞ্জির দিকে তাকিয়ে বলছে, “কি হইলো? চলো ভেতরে যাই, তোমার দিকেও তো নজর দিছে। নোংরা মানুষগুলা নজর দেয়া দেখে ভয়ে পালাবা নাকি নিজেকে স্বভাবিকভাবে উপস্থাপন করবা?”
স্যান্ডো গ্যাঞ্জি কোন উত্তর দিচ্ছেনা…
(মেয়েদের অন্তর্বাস লুকিয়ে রাখতে হবে এমন একটা ধারণা সমাজে খুব প্রচলিত। এই ধারণার অবসান হোক।)