উইমেন চ্যাপ্টার: সাংবাদিক ও সাবেক সংসদ সদস্য এন মাহফুজা খাতুন বেবী মওদুদ আর নেই। বেশ কিছুদিন ক্যান্সারে ভুগে শুক্রবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে মারা যান তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৬৬ বছর।
সবশেষ তিনি অনলাইন পত্রিকা ডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সোশ্যাল অ্যাফেয়ার্স এডিটর হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
বেবী মওদুদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বেবী মওদুদ প্রধানমন্ত্রীর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের খুবই কাছের একজন বন্ধু ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের এই বান্ধবীর মৃত্যুতে শোক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর মৃত্যুতে জাতি এক নিবেদিতপ্রাণ সাংবাদিক এবং লেখককে হারাল। মরহুম বেবী মওদুদকে তাঁর অকৃত্রিম সুহূদ হিসেবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাঁর মৃত্যুতে আমি আমার দীর্ঘদিনের একজন প্রিয় বন্ধুকে হারিয়েছি।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচিত অসমাপ্ত আত্মজীবনী গ্রন্থটি সম্পাদনার ক্ষেত্রে বেবী মওদুদের ভূমিকা তিনি কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন। প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন।
বেবী মওদুদ জন্মগ্রহণ করেন ১৯৪৮ সালের ২৩ জুন, কলকাতায়। তার বাবা আবদুল মওদুদ ছিলেন একজন বিচারপতি। আর মায়ের নাম হেদায়েতুন নেসা।
১৯৬৭ সাল থেকে সাংবাদিকতায় জড়িত বেবী মওদুদ দৈনিক সংবাদ, দৈনিক ইত্তেফাক, বাসস ও সাপ্তাহিক বিচিত্রায় দীর্ঘদিন কাজ করার পর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে যোগ দেন।
মুক্তিযুদ্ধের আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী থাকার দিনগুলোতেই পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সদস্য হিসেবে ছাত্র রাজনীতিতে যুক্ত হন বেবী মওদুদ। ১৯৭১ সালে বাংলায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পাওয়ার আগে ১৯৬৭-৬৮ সময়ে রোকেয়া হল ছাত্রী সংসদের সদস্য হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
নব্বইয়ের দশকে যু্দ্ধাপরাধীদের শাস্তির দাবিতে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আন্দোলনেও সোচ্চার ছিলেন বেবী মওদুদ।
নবম জাতীয় সংসদে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংরক্ষিত নারী আসন থেকে সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন। সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি এবং লাইব্রেরীর কমিটির সদস্য হিসাবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন।
আনুষ্ঠানিক নাম এ এন মাহফুজা খাতুন হলেও সবাই তাকে চিনতেন বেবী মওদুদ নামে। সাদামাটা পোশাকের স্নেহময়ী এই নারী সহকর্মীদের সবার কাছে ছিলেন ‘বেবী আপা’।
(বিডিনিউজটুয়েন্টিফোর এর সৌজন্যে)