উইমেন চ্যাপ্টার: লন্ডনে আজ শুরু হয়েছে ব্রিটিশ সরকার এবং জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফ আয়োজিত গার্ল সামিট। বাংলাদেশসহ ৫০টি দেশের ৫০০ প্রতিনিধি এ সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন। এবারের সম্মেলনের আলোচ্য বিষয় মেয়েদের খৎনা প্রথা বন্ধ এবং বাল্য বিবাহ দূর করা।
ইউনিসেফ এর তথ্যমতে, সারাবিশ্বে ৭০ কোটি নারীরই বিয়ে হয়েছিল ১৮ বছর হওয়ার আগে, এবং আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের তের কোটিরও বেশি নারীরই খৎনা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে।
এদিকে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে দৃঢ় অঙ্গিকার ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দারিদ্র্য নিরসন, শিক্ষা ও কাজের সুযোগ নিশ্চিত করতে পারলেই মেয়েদের বাল্যবিয়ে কমবে। আর তার সরকার সে লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছে। মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টায় লন্ডনে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধসহ মেয়ে শিশুদের অধিকার বিষয়ক ওয়ার্ল্ড গার্ল সামিট ২০১৪ বা বিশ্ব কন্যাশিশু সম্মেলনের উচ্চ পর্যায়ের সেশনে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। লন্ডনের শর্ন ক্লিফ রোডের ওয়ালওর্থ একাডেমিতে গার্ল সামিটের প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, নারী শিক্ষাকে প্রাধান্য দিয়ে মাধ্যমিক পর্যায়ে মেয়েদের শিক্ষা অবৈতনিক করে দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে মাস্টার্স পর্যন্ত তা নিশ্চিত করতে চান তিনি।
বিশ্বে প্রথমবারের মতো এ গার্ল সামিটের উচ্চ পর্যায়ের সেশনে অংশ নিয়ে নারীর ক্ষমতায়নে ও উন্নয়নে, বিশেষ করে বাল্যবিবাহ রোধে তার সরকারের উদ্যোগ ও অঙ্গীকারগুলো তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার সঙ্গে এ সেশনে অন্য প্যানেল আলোচক হিসেবে রয়েছেন বুরকিনা ফাসো’র ফার্স্টলেডি স্যান্তাল কমপাওর এবং পাকিস্তানের কিশোরী মানবাধিকার কর্মী মালালা ইউসুফজাই। সঞ্চালনায় ছিলেন ব্রডকাস্টার জয়নাব বাদাবি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার স্বপ্ন মাস্টার্স পর্যন্ত প্রতিটি মেয়ে বিনা বেতনে পড়ালেখা করার সুযোগ পাবে। আর তাতেই নারীরা এগিয়ে যাবে।
ব্রিটিশ সরকার ও ইউনিসেফের উদ্যোগে বিশ্বব্যাপি কন্যাশিশুদের নিরাপত্তা ও জীবনমান উন্নয়নের জন্য এ সম্মেলন আয়োজন করা হচ্ছে। মেয়েদের খৎনা বা লিঙ্গ কর্তন, বাল্যবিয়ে ও জোরপূর্বক বিবাহের বিরুদ্ধে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিকভাবে সচেতনতা সৃষ্টিই এ সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য। এ সম্মেলন মেয়েদের বাল্য ও জোরপূর্বক বিয়ে বন্ধ, নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতার অবসান, নিরাপদ শিশু জন্মদান, নারীর কর্মসংস্থান, শিক্ষা এবং ভূমি ও উত্তরাধিকার প্রাপ্তিতে আইন সংস্কারেও সহায়তা করবে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৫২টি দেশের প্রতিনিধিরা এ সম্মেলনে অংশ নেন।