উইমেন চ্যাপ্টার ডেস্ক (জুন ১০): অবশেষে গ্রেপ্তার হলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে ‘রাইসিন’ বিষমাখা চিঠি পাঠানোর নেপথ্যের সেই নায়িকা ‘দ্য ওয়াকিং ডেড’খ্যাত মার্কিন অভিনেত্রী শ্যানন রিচার্ডসন। মার্কিন প্রেসিডেন্টকে হুমকি দিয়ে এ ধরনের চিঠি পাঠানোর অভিযোগে তার সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
শুরুতে এফবিআইয়ের কাছে বিষাক্ত রাসায়নিক রাইসিনমাখা চিঠি পাঠানোর বিষয়টি অস্বীকার করেছিলেন ৩৫ বছর বয়সী এ অভিনেত্রী। পরে তিনি জানান, তাঁকে এমনটা করতে বাধ্য করেছেন তাঁর স্বামী। ওবামাকে বিষমাখা চিঠি পাঠানোর অভিযোগে টেক্সাসের একটি আদালতে হাজিরাও দিয়েছেন শ্যানন।
এ প্রসঙ্গে ইউএস অ্যাটর্নি অফিসের মুখপাত্র ডেভিলিন ওয়াল্টসনের বরাত দিয়ে ‘ওয়াশিংটন টাইমস’ জানিয়েছে, মার্কিন আইনে এ ধরনের অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।
পাঁচ সন্তানের জননী শ্যানন রিচার্ডসন চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি ছোটপর্দায়ও অভিনয় করেন। তিনি গত মাসে বারাক ওবামার ঠিকানায় সন্দেহজনক একটি চিঠি পাঠান। ওবামা বরাবর হোয়াইট হাউসে আসা চিঠিপত্র তদারক করতে গিয়ে সন্দেহজনক চিঠিটি নজরে আসে। পরে ওই চিঠি আটকে দেয় হোয়াইট হাউস কর্তৃপক্ষ এবং এফবিআইয়ের সন্ত্রাসবাদবিষয়ক যৌথ টাস্কফোর্সের কাছে পাঠানো হয়।
এ ঘটনার কয়েক দিন আগে একই কায়দায় অবৈধ অস্ত্রবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সোচ্চার কণ্ঠ নিউইয়র্কের মেয়র মাইকেল ব্লুমবার্গকেও রাইসিনমাখা চিঠি পাঠিয়েছিলেন শ্যানন। যুক্তরাষ্ট্র সরকার অস্ত্র আইনে কড়াকড়ি আরোপের উদ্যোগ নেওয়ার পর থেকে এ ধরনের বেশ কয়েকটি চিঠি আটক করেছে পুলিশ।
এর আগে গত এপ্রিলের মাঝামাঝিতে রাইসিনমাখা চিঠি এসেছিল ওবামার উদ্দেশে। একই দিন মিসিসিপি অঙ্গরাজ্যের রিপাবলিকান সিনেটরকে পাঠানো চিঠিতেও বিষাক্ত পদার্থ পাওয়া যায়। হোয়াইট হাউস থেকে বেশ দূরে অবস্থিত একটি স্থাপনায় ওবামাকে পাঠানো চিঠিতে সন্দেহজনক বস্তু শনাক্ত করা হয়। হোয়াইট হাউসের চিঠিপত্র সেখানেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। ওবামাকে পাঠানো ওই চিঠিতে বিষাক্ত রাইসিন মাখানো রয়েছে বলে প্রাথমিক পরীক্ষায় ধরা পড়ে।
ভেন্নার বীজ থেকে উত্পাদিত এই রাইসিন বিষ সায়ানাইডের চেয়ে এক হাজার গুণ বেশি বিষাক্ত। নিঃশ্বাসের মাধ্যমে অথবা গিলে ফেললে বা সুচের মাধ্যমে শরীরে এই বিষ দেওয়া হলে মানুষের মৃত্যু ঘটতে পারে। তবে এটি নিরাময়যোগ্য। পরে ওই চিঠির উত্স খুঁজে বের করতে যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। সেবার মিসিসিপি থেকে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
মে মাসের শেষদিক থেকে একের পর একাধিক সরকারি কর্তাব্যক্তির নামে এ রকম চিঠি আসতে থাকে। নিরাপত্তাব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে।