রায়হান রশীদ: তিনি নারী। তিনি জননী। তিনিই আবার লেখিকা এবং নেত্রী। আন্দোলনের আলোকবর্তিকা। এবং সর্বোপরি একজন মানুষ। মাত্র এক জীবনে যিনি ছিলেন এই প্রতিটি পরিচয়েই উজ্জ্বল।
আজ শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ২০-তম মৃত্যু বার্ষিকী। ৯০ এর দশকে সারা দেশকে জাগিয়ে তুলেছিলেন তিনি ১৯৭১ এর ঘাতক দালালদের বিচারের দাবীকে সামনে রেখে এক অভূতপূর্ব গণআন্দোলনের মাধ্যমে। আহ্বায়ক হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছেন “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল জাতীয় সমন্বয় কমিটি”র (সংক্ষেপে: একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি)। মরণব্যাধি ক্যান্সার তাঁকে আন্দোলনের মাঠ থেকে সরিয়ে নিয়েছে এক সময়, কিন্তু তাঁর গড়ে তোলা আন্দোলনকে কোন কিছুই দমিয়ে রাখতে পারেনি।
রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হয়েছে, নেতৃবৃন্দের উপর নেমে এসেছে আইনী খড়গ আর নির্যাতন; দু’দুবার সরকার বদল হয়েছে; কিন্তু শেষ পর্যন্ত ঠিকই বাংলাদেশের মাটিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হয়েছে।
চলে যাওয়ার আগে শেষ চিঠিতে শহীদ জননী লিখেছিলেন:
“আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি এবং অঙ্গীকার পালনের কথা আরেকবার আপনাদের মনে করিয়ে দিতে চাই। আপনারা আপনাদের অঙ্গীকার ও ওয়াদা পূরণ করবেন। আন্দোলনের শেষ পর্যায় পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ে থাকবেন। আমি না থাকলেও আপনারা, আমার সন্তান-সন্ততিরা, আপনাদের উত্তরসূরীরা সোনার বাংলায় থাকবেন।”
সহযোদ্ধাদের তিনি প্রতিজ্ঞা করিয়েছিলেন। আমাদের সে ওয়াদা স্মরণ আছে তো? মনে আছে তো কিসের জন্য কিসের বিরুদ্ধে লড়ছি আমরা?