উইমেন চ্যাপ্টার: গত মাসে সুদানে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মেরিয়াম ইব্রাহিম অবশেষে মুক্তি পেলেন। খ্রিস্টিয়ান একজনকে বিয়ে করায় তার বিরুদ্ধে ইসলাম ধর্মকে প্রত্যাখ্যান করার অভিযোগ এনে এই দণ্ড দেয়া হয়েছিল। পাশাপাশি তাকে একশ ঘা দোররা মারারও নির্দেশ দেয়া হয়।
এ ঘটনায় বিশ্বজুড়ে তুমুল সমালোচনার মুখে দেশটির সরকার নড়ে-চড়ে বসতে বাধ্য হয়। বিশ্বের মানবাধিকার সংস্থাগুলোও ক্রমাগত চাপের মুখে ফেলে সুদান সরকারকে। অবশেষে ২৩ জুন সোমবার দেশটির আপিল আদালত তাকে মুক্তি দেন। এরই মাঝে মেরিয়াম কারাগারে এক কন্যাশিশুর জন্ম দেন।
মেরিয়ামের আইনজীবী বিবিসিকে তার মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মেরিয়াম ইব্রাহিমের মৃত্যুদণ্ডাদেশ আপিল কোর্টে বদলে যায়।
মেরিয়াম খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী ড্যানিয়েল ওয়ানিকে ২০১১ সালে পরিচয়ের পর বিয়ে করেন। গত মে মাসে মেরিয়াম খ্রিস্ট ধর্মকে প্রত্যাখ্যানে অস্বীকৃতি জানালে শরীয়া আইন অনুযায়ী তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।
মার্কিন নাগরিক ড্যানিয়েল ওয়ানি বিবিসিকে বলেন, তিনি চেয়েছিলেন যেন তার পরিবার যত দ্রুত সম্ভব সুদান থেকে চলে আসতে পারে। মেরিয়ামের আইনজীবী বলছিলেন, ‘মেরিয়াম এই বিচার চলাকালে খুবই সাহস আর ধৈর্য্যের পরিচয় দিয়েছেন। এটা সুদানে ধর্মীয় স্বাধীনতার বিজয়। আশা করি ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের বিচারের মুখোমুখি হবে না।
মেরিয়ারের এই দণ্ডের খবর ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে বিশ্বজুড়ে তুমুল নিন্দা এবং প্রতিবাদের ঝড় উঠে। দেশটির কর্তৃপক্ষের পক্ষে এই ঝড় সামাল দেয়া সম্ভব ছিল না বলে মন্তব্য করেন তার আইনজীবী।
সুদানে এই ধরনের ঘটনা এবারই প্রথম নয়। ২০০৯ সালে লুবনা হুসেইন নামের একজন নারী জনসমক্ষে ঢিলেঢালা পায়জামা পরার কারণে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন। তখনও তা নিয়ে তুমুল সমালোচনা হয়। অবশেষে একটা ছোট অংকের জরিমানা নিয়ে তিনি মুক্তি পান। ২০১২ সালে ইন্তিসার শরিফ আবদুল্লাহকে ব্যভিচারের অভিযোগে পাথর ছুঁড়ে হত্যার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। তিনিও একপর্যায়ে মুক্তি পেয়েছিলেন।