কামাল এইচ মজুমদার মুন: ধর্ষণ, নারী হত্যা, নারী নির্যাতন, ইভ টিজিং সাড়া বিশ্ব জুড়েই আছে, কিন্তু আমাদের দেশে মাত্রাটা প্রকট আকার ধারণ করছে। এর কারণ ও প্রতিকার অত্যন্ত জরুরি হয়ে পরেছে। প্রতিকার শুধু কাগজে কলমে সীমাবদ্ধ । ৫৫,৫৭০ বর্গমাইল জুড়ে প্রতিদিন কোথাও না কোথাও ঘটছে নারীর অপমান অবহেলা।
আমাদের দেশের দু’জন রাজনৈতিক শীর্ষ নেত্রীই নারী, তারপরও এই বিষয়টি খুব অবহেলিত। ফেসবুক জুড়ে প্রতিদিনই স্টেটাস পওয়া যায়, অনেকই লিখেন এই বিষয়ে , জানান দেন সামাজিক নানা বিচ্যুতির কথা, কিন্তু কিছুতেই যেন কোনো পরিবর্তন আসছে না। তাই এর জন্য একটিভিস্টদের আন্তরিকতার প্রয়োজন, আমি কাউকে খাটো করছি না, চাই একটি শক্তিশালী জাগরণ, চাই সত্যিকারের সমাধান। এই বিষয়ে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে, আইনজীবী, শাসন ব্যবস্থা, বিচার ব্যবস্থা সহ সমাজের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে একটি শক্ত সমাধানের লক্ষ্যে।
আমরা যারা লেখাপড়া জানি, যাদেরকে হয়তো প্রতিনিয়ত এ জাতীয় সমস্যায় পড়তে হয় না, তারা যদি একটু আন্তরিক হন তাহলেই সম্ভব। ভারতে কিংবা পাকিস্থানে নারী নির্যাতন যেই মাত্রায় গেছে, আমরা হয়তো এত ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির কাছাকাছি এখনো পৌঁছিনি। কিন্তু নির্বিকার বা একে নিয়ে ঠিকভাবে না ভাবলে, পার্শ্ববর্তী দেশগুলির মত পরিস্থিতি খুব বেশি দূরে নয়। যে জাতি নারীকে সম্মান দিতে জানে না তাদের উন্নতি কোনভাবেই সম্ভব নয়, কারণ সৃষ্টির মূলেই যে নারী তা যেন আমরা ভুলে না যাই, অন্তত এই আমরা যারা কিছুটা হলেও লিখতে পড়তে জানি।
সে জন্যই প্রতিবাদের ও প্রতিকারের কৌশলে যেন কোনো অসচ্ছতা ঢুকে না পারে ৷ ব্যক্তি স্বার্থ যেন বড় না হয়ে সামষ্টিক স্বার্থটাকে প্রাধান্য দিতে হবে ৷ সবাইকে নি:স্বার্থ ভাবে এগিয়ে আসতে হবে, যে কারণগুলো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে, তাকে কৌশলে প্রতিহত করতে হবে ৷ প্রয়োজনে ধর্মীয় অনুশাসন, সামাজিক দায়িত্ববোধ , পারিবারিক দায়িত্ববোধ ও ব্যক্তি পর্যায়ের কর্তব্য গুলোর গুরুত্ব মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে, ছোট ছোট প্রকল্পের মত বাস্তবায়নের চেষ্টা করতে হবে ৷ মানুষের মনুষ্যত্বের বিপর্যয়ে যেভাবে ফরমালিনের ব্যবহার বেড়েছে, তেমনি নারী অধিকার ও খর্ব হচ্ছে একই বিপর্যয়ের কারণে ৷ দারিদ্র্য আমাদের সমাজে ছিল অনেক আগে থেকেই, কিন্তু বর্তমানের যেই মূল্যবোধের বিপর্যয়, তাকে শুধু দারিদ্র্যের কারণ করা ঠিক হবে না ৷ যা করতে হবে তা দ্রুততার সাথেই করা প্রয়োজন ৷