প্রথমবারের মতোন বাংলাদেশে ওমেন লিডারশিপ সামিট

women leadership summitউইমেন চ্যাপ্টার: পেশাদারিত্বের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীর ক্ষমতায়ন ও নেতৃত্বের অবস্থানে পৌঁছাতে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা, সুযোগ চিহ্নিতকরণ, সহায়ক বা সমর্থনসূচক পদ্ধতির উন্নয়ন এবং নারী নেতৃত্বকে বিকশিত ও টেকসই করার ইস্যুগুলো নিয়ে সম্প্রতি এক সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছিল ঢাকায়।

ওমেন হরলিক্সের পরিবেশনায় ওমেন লিডারশিপ সামিট ২০১৪ এর আয়োজন করে। ৭ জুন শনিবার রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলন ছিল মূলত নারীদের প্রস্তুত করার লক্ষ্যে নারীকে নেতৃত্ব গ্রহণে উদ্বুদ্ধকরণ প্রকল্পের প্রথম পদক্ষেপ।

এই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম নেতৃত্বের ভূমিকায় নারীর ক্ষমতায়ন বিষয়ে এই অধিবেশনে অংশ নেয় শীর্ষস্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার প্রায় ১৩০ জন প্রতিনিধি।

সম্মেলন থেকে যেসব লক্ষ্যমাত্রা হাতে নেয়া হয়েছে, তাহলো,

ক. যে কোনো সংগঠন/সংস্থায় নারীর পারফরমেন্স ও সুযোগ নিশ্চিত করতে নীতি প্রণয়ন ও নীতিমালা অনুসরণ।

খ. নারীর সক্ষমতা রুপায়ণে সহায়ক সামাজিক পরিবেশ গড়ে তোলা।

গ. ওমেন ইন লিডারশিপ নেটওয়ার্ক বা নেতৃস্থানীয় নারীদের একটা প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলা। যারা শারীরিকভাবে ও কার্যক্ষেত্রে পরবর্তী প্রজন্মের নারীদের দিকনির্দেশনা, উপদেশ ও সমর্থন জোগাবেন।

এসব উদ্দেশ্য পূরণে এই সম্মেলনে ছিল চারটি মূল অধিবেশন এবং তিনটি বিস্তৃত প্যানেল আলোচনা। মূল অধিবেশনগুলোতে সভাপতিত্ব করেন বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের চারজন নেতৃস্থানীয় নারী।

এর মধ্যে রয়েছেন এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর ওমেন-চিটাগংয়ের উপাচার্য ড. ফাহিমা আজিজ। তিনি উপস্থাপন করেন হাই পার্টিসিপেশন, লো প্রেজেন্টেশন অব ওমেন: ডেঞ্জারস ডেমোগ্রাফিক্স শীর্ষক নিবন্ধ।

দ্বিতীয় মূল নিবন্ধ পেশ করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দ রিজওয়ানা হাসান। ২০০৯ সালে তিনি লাভ করেছেন গোল্ডম্যান এনভায়রনমেন্টাল প্রাইজ। বাংলাদেশের বিচার বিভাগীয় কার্যক্রমে আপসহীন, সাহসিকতা ও আকর্ষণীয় নেতৃত্বের জন্য ২০১২ সালে তিনি পেয়েছেন র‌্যামন ম্যাগসাইসাই পুরস্কার। তার আন্দোলনের ফলে ভালো পরিবেশের ওপর মানুষের অধিকার নিশ্চিত হয়েছে।

তৃতীয় মূল আলোচক ছিলেন ফোর্বস ইন্ডিয়া সম্পাদক নাজনিন কারমালি। একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সাংবাদিক নাজনিন ১৯৮১ সাল থেকে ভারতের উদ্যোক্তাদের বিষয়ে রিপোর্টিং ও লেখালেখি করছেন। এই সম্মেলনে তিনি ওমেন লিডারসÑ দ্য রোড টু দ্য টপ শীর্ষক নিবন্ধে নিজের অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধি তুলে ধরেন।

সম্মেলনে চতুর্থ মূল আলোচক হিসেবে ছিলেন দ্য লার্নিং কোম্পানি লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্যাথি ট্র্যাসি। প্রেরণাদায়ক নারী নেত্রী ক্যাথি ওশেন রোয়ার ও গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের অধিকারী। টিম এবং ব্যক্তি নেতাদের কোচিং দিয়ে থাকেন তিনি। কোচিংয়ে তিনি সংগঠনে মানুষের বৃহত্তর বোঝাপড়া তৈরি করেন, আবেগময় বুদ্ধিদীপ্ততা বাড়িয়ে তোলেন। যা নেতাদের ব্যক্তিগত উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যেতে এবং কার্যকর উদার অংশীদারিত্ব গড়তে সক্ষম করে তোলে। তার বক্তৃতার শিরোনাম ছিল দ্য এবিসি টু ভিক্টোরি। প্রত্যেক মহৃল আলোচনার পর ছিল প্রশ্নোত্তর অধিবেশন।

এ ছাড়া সম্মেলনে ছিল তিনটি প্যানেল আলোচনাÑ যার উদ্দেশ্য উপলব্ধি ও ধারণার উদ্রেক করা, সমস্যা চিহ্নিত করা এবং সমস্যা সমাধানের বুনিয়াদ রচনা করা।

প্রথম প্যানেল আলোচনার শিরোনাম ছিল: ওমেন অব টুমরো: হেলথ অ্যান্ড সাইকিÑ আর উই ডুয়িং এনাফ?

দ্বিতীয় প্যানেল আলোচনার বিষয় ছিল দ্য রাইট পলিসি- প্রসেস টু সাপোর্ট ফিমেল লিডারশিপ ইন অর্গানাইজেশন। তৃতীয় প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় চেঞ্জিং ফিমেল পারসেপশন ইন সোসাইটি-রোল দ্যাট মিডিয়া, ড্রামা, মুভি, অ্যাডভার্টাইজমেন্ট অ্যান্ড স্টোরিটেলিং শুড প্লে শিরোনামে।

প্যানেল সদস্যদের মধ্যে ছিলেন বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও এশিয়াটিক এমসিএলের সিইও ও এমডি আলী যাকের, এয়ারটেল বাংলাদেশ লিমিটেডের হেড অব মার্কেটিং মির নাওবুত আলী, মার্কিন দূতাবাসের আমেরিকান সেন্টারের পাবলিক অ্যাফেয়ার্স অফিসার বিরাজ লেবাইলি, লেখক আনিসুল হক, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের প্রফেসর ইমেরিটাস ও বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।

শেয়ার করুন:
Copy Protected by Chetan's WP-Copyprotect.