
সাদিয়া আফরোজ শীতল : কিছুদিন আগে প্রথম আলোতে বিজ্ঞানের গবেষণায় নারীর অভাব নিয়ে একটি লেখা পড়ছিলাম, লেখাটার নিচে প্রথম কমেন্ট হলো-
আমিও কমেন্টের উত্তরে বললাম-
“হাতি, তিমি মাছ, ডলফিনের মস্তিষ্ক মানুষের থেকে অনেক বড়, তো আপনার মতে হাতি আর তিমি মাছ সবচেয়ে বড় বিজ্ঞানী?”
মস্তিষ্ক শুধু বড় থাকলেই হয় না তা ব্যবহার করতেও জানতে হয়।
তারপর শুনুন এডা লাভলেসের কথা, ওনাকে বলা হয় প্রথম প্রোগ্রামার। এডা কম্পিউটার প্রোগ্রামের কথা চিন্তা করেছিলেন সেই ১৮৫০ সালের আগে, এমন সময় যখন কিনা কম্পিউটারই আবিস্কার হয়নি!
এডা লাভলেসআরেকজন বিখ্যাত নারী হলেন ড. ফ্রান্সিস অ্যালেন যিনি প্রথম মহিলা টিউরিঙ পুরস্কার পেয়েছেন, যা কম্পিউটার সাইন্সে নোবেল পুরস্কারের সমান।
ড. রাদিয়া পার্লমানকে বলা হয় “মাদার অব দা ইন্টারনেট”। তার আবিস্কৃত “স্পানিং ট্রি প্রোটোকল” ইন্টারনেটের যে কোনো দুইটি অংশের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করেতে ব্যবহার করা হয়।
গত বছর আরেকজন নারী টিউরিঙ পুরস্কার পেলেন ড. শাফি গোল্ডওয়াসার, ক্রিপ্টোগ্রাফিতে অবদানের জন্য। ড. শাফির গবেষনার জন্যই আমরা ইন্টারনেটে নিরাপদে টাকা আদান-প্রদান করতে পারি, যে কেউ চাইলেই ইন্টারনেট থেকে টাকা চুরি করতে পারবে না। আরো অনেক নারী বিজ্ঞানীর কথা জানতে পারবেন এখানে।
ড. শাফি গোল্ডওয়াসারএত এত ট্যালেন্ট নারী থাকার পরও যখন মানুষ বলে “মেয়েদের বুদ্ধি কম,” “মেয়েদের জন্য ইঞ্জিনিয়ারিং না,” এর পরও যখন মানুষ মেয়েসন্তানকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত না করে অল্পবয়সে বিয়ের কথা ভাবে কি যে রাগ লাগে আমার! আমাদের দেশে ওনাদের মত নোবেল/টিউরিঙ পুরস্কার পাওয়া নারী এখনো না থেকে থাকে তার দায়ভার আমাদের সবার। আমরাই এমন পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারিনি যেখানে মেয়েরা গবেষণা করতে পারে, বিজ্ঞানে অবদান রাখতে পারে।আজ থেকে আপনার পরিবারের বা চেনা পরিচিত মেয়ে শিশুটিকে শুধু একজন নারী হিসাবে চিন্তা না করে ভবিষ্যত বিজ্ঞানী হিসাবে চিন্তা করুন, ভেবে দেখুন আজ তাকে অল্প বয়সে বিয়ে দিয়ে হয়ত আপনি গোটা মানবজাতিকে এক যুগান্তকারী আবিস্কার থেকে বঞ্চিত করছেন!