
উইমেন চ্যাপ্টার: ধর্মীয় অনুশাসনের নামে গোঁড়ামি এবং বিরোধিতা সত্ত্বেও পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশ ব্যাপক সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে। বেআইনী বাল্যবিয়ে বন্ধে আইন পাশ করেছে প্রাদেশিক সরকার। এই ঘটনাকে দেশটিতে নারী নির্যাতন বন্ধে মাইলফলক হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
নতুন এই আইন অনুযায়ী ১৮ বছরের নিচে যে কারও বিয়ে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে বাল্যবিয়ের বিরুদ্ধে আন্দোলনে এই আইন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সংশ্লিষ্টদের মতে, একটি মেয়ের বিয়ের জন্য অপেক্ষা মানেই দেরিতে গর্ভধারণ এবং এই সময়টুকুতে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া। একইসাথে তিনটি কাজ হচ্ছে একটিমাত্র বিধানের মধ্য দিয়ে। আর এতে করে মেয়েটির জীবনে আরও বেশি জানালা খুলে যায়, তার নিজ সন্তানদের পড়াশোনাটাও সে নিজেই চালিয়ে নিতে পারে।
পাকিস্তানের সবচেয়ে প্রভাবশালী ধর্মীয় ও সাংবিধানিক সংস্থা কাউন্সিল অব ইসলামিক আইডিওলজি (সিআইআই) এক ঘোষণায় বলেছে, বয়ো:সন্ধিকালে পৌঁছানো মাত্রই মেয়েরা বিয়ের জন্য প্রস্তুত হয়। তবে বাল্যবিয়ের পক্ষে সাফাই গাওয়া এই প্রথম নয় সংস্থাটির। গত এপ্রিলে তারা বলে যে, এ ধরনের বিয়ে নিষিদ্ধ করা ইসলাম-বিরোধী। নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে সংস্থাটির এ ধরনের তৎপরতা কোন প্রভাব না ফেললেও দেশজুড়ে স্থানীয় ধর্মীয় নেতাদের মধ্যে এর বিশাল প্রভাব রয়েছে।
সিআইআই এর এমন ফতোয়াতেও পিছপা হয়নি আইনপ্রণেতারা। তারা বাল্যবিয়ে বন্ধে তাদের পদক্ষেপ নেয়া বন্ধ করেননি। সিন্ধ প্রদেশ, যেখানে বাল্যবিয়ের হার সবচেয়ে বেশি, সেখানেই আইন করা হয়েছে ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে। পাশাপাশি যারা এই বিয়ে পড়াবেন বা আয়োজন করবেন, তাদের জন্য রয়েছে তিন বছরের কারাদণ্ড, এবং ৪৫ হাজার রুপি জরিমানা।
সিন্ধ প্রদেশের এই পদক্ষেপকে বেশ ইতিবাচক সাফল্য হিসেবেই ধরা হচ্ছে। আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে এটি একটি মাইলফলক। সবার কথা হচ্ছে, এই আইন প্রয়োগের ফলে মেয়েদের শিক্ষা নিশ্চিত হবে, এবং বিয়েটা দেরিতে হবে। এর মধ্য দিয়ে তাদের অধিকার তারা নিজেরাই বেছে নিতে পারবে।