উইমেন চ্যাপ্টার: ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অগ্নিকন্যা, বিপ্লবী জাতীয়তাবাদী নেত্রী প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের আজ ১০৩তম জন্মবার্ষিকী। ১৯১১ সালের ৫ মে চট্টগ্রামের পটিয়া ধলঘাট গ্রামের এক নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন প্রীতিলতা।
তিনি ছিলেন প্রথম ভারতীয় বিপ্লবী নারী, যিনি সরাসরি ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিলেন। তাঁর বাবা জগদ্বন্ধু ওয়াদ্দেদার ততকালীন চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের চাকরিজীবি ছিলেন। কিন্তু মেয়ের বিপ্লবী ভূমিকার জন্য চাকরি হারাতে হয় তাকে।
চট্টগ্রামের ডা. খাস্তগীর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মেট্রিক ও ঢাকা ইডেন কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাসের পর প্রীতিলতা দর্শন শাস্ত্র নিয়ে কলকাতার বেথুন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি নেন। ১৯৩২ সালে ডিসটিংশান নিয়ে তিনি বি এ পাশ করে।
কৃতিত্বের সাথে স্নাতক পাস করলেও ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে সম্পৃক্ত থাকায় তাঁর এবং তাঁর সঙ্গী বীণা দাসগুপ্তের পরীক্ষার ফল স্থগিত রাখা হয়। অবশেষে তাঁদেরকে ২২ মার্চ, ২০১২ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে মরণোত্তর স্নাতক ডিগ্রী প্রদান করা হয়।
তিনি চট্টগ্রাম নগরীর নন্দনকানন এলাকায় অপর্ণাচরণ স্কুলে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ হয়ে মাস্টারদা সূর্য সেনের সংস্পর্শে আসেন বিপ্লবী প্রীতিলতা। ১৯৩২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে মাস্টারদার নির্দেশে প্রীতিলতা সামরিক পোশাক পরে আরও কয়েকজন বিপ্লবীসহ চট্টগ্রামের পাহাড়তলীতে ইউরোপিয়ান ক্লাব আক্রমণ করেন। তিনি তখন ১৫ সদস্যের পুরুষদের একটি দলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ওই ক্লাবটিতে সেইসময়ে সাইনবোর্ডে লেখা থাকতো, ‘কুকুর এবং ভারতীয়দের এখানে প্রবেশ নিষেধ’।

সফল অপারেশন শেষে ফেরার পথে হঠাৎ একটি গুলি তার পায়ে এসে বিঁধে। ইংরেজ সৈনিকদের হাতে ধরা পড়ার আশঙ্কায় এসময় প্রীতিলতা পটাসিয়াম সায়ানাইড পান করে আত্মাহুতি দেন।
ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের বীরকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের ১০৩ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে বিভিন্ন সংগঠন। প্রীতিলতা ট্রাস্টের উদ্যোগে তার জন্মস্থান চট্টগ্রামের পটিয়ার ধলঘাটে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সোমবার সকালে বিপ্লবীর আবক্ষ মূর্তিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে ১০৩তম জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শুরু করে সংগঠনটি।