
উইমেন চ্যাপ্টার: রাজধানীতে বহুল আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা ও তাঁর স্ত্রী হত্যার ঘটনায় তাঁদের মেয়ে ঐশী রহমানের বিরুদ্ধে দেওয়া অভিযোগপত্র আদালত আমলে নিয়েছে। মামলাটি এখন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়েছে। ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।
অভিযোগপত্র গ্রহণের শুনানিতে চার আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। সুমি অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তার বিচার হবে কিশোর আদালতে।
তবে আদালতে ঐশীর আইনজীবী সাংবাদিকদের জানান, বিচারে তিনি ঐশীকে নির্দোষ প্রমাণ করবেন।
গত ৯ মার্চ পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তাঁর স্ত্রী স্বপ্না রহমান হত্যার ঘটনায় মেয়ে ঐশী রহমানসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ওই দিন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে ডিবি পুলিশ পরিদর্শক আবুয়াল খায়ের মাতুব্বর এই অভিযোগপত্র দেন।
ঐশী ছাড়া অভিযোগপত্রভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন ঐশীর বন্ধু আসাদুজ্জামান ওরফে জনি ও মিজানুর রহমান ওরফে রনি এবং গৃহকর্মী সুমি আকতার। দুটি অভিযোগপত্রের মধ্যে একটিতে ঐশীসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। অন্যটিতে গৃহকর্মী সুমি আকতারের বিরুদ্ধে শিশু আইনে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। আসামি ঐশী গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে এবং সুমি গাজীপুরের কিশোরী সংশোধন কেন্দ্রে আছে। বাকি দুজন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক আছেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, ঐশী একাই হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছেন। হত্যার আগে ঐশী মা-বাবাকে ৬০টি ঘুমের ট্যাবলেট মেশানো কফি খাইয়েছিলেন। রাসায়নিক পরীক্ষায় ঘুমের ওষুধে নাইট্রাস, টেনিন ও ট্রমাজিপাম-৩-এর উপস্থিতির প্রমাণ মিলেছে। এ ছাড়া স্বপ্না রহমানের ব্রোঞ্জের রক্তমাখা চুড়ি ও ঐশীর রক্তমাখা কাপড়ের রক্তের সঙ্গে ঐশীর রক্তের মিল পাওয়া গেছে।
গৃহকর্মী সুমি আকতারও আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। অভিযোগপত্রে ৫৭ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
গত বছরের ১৬ আগস্ট রাজধানীর মালিবাগের চামেলীবাগে নিজেদের বাসা থেকে এই দম্পতির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর পরদিন ঐশী গৃহকর্মী সুমিকে নিয়ে রমনা থানায় আত্মসমর্পণ করে। ওই বছরের ২৪ আগস্ট আদালতে খুনের দায় স্বীকার করে ঐশী জবানবন্দি দেয়। পরবর্তী সময়ে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে স্বীকারোক্তি নেওয়া হয়েছিল— উল্লেখ করে ৫ সেপ্টেম্বর ওই স্বীকারোক্তি প্রত্যাহারের আবেদন করেন তাঁর আইনজীবীরা।