আমরা যারা একলা থাকি-১০

imp 1উইমেন চ্যাপ্টার: আজ পহেলা ফাল্গুন, ঋতুরাজ বসন্তের আজ শুরু। প্রকৃতি সেজেছে হলুদ সাজে, বকুলতলায় উৎসবে মিলেছে মানুষ। ফুলের বাগানও আজ কার্পণ্য করছে না, চারদিকে গাঁদা ফুলের হলুদ ছড়াছড়ি বেশ বাড়াবাড়ি রকমের। আর সাথী ফুলগুলো তো আছেই। গোলাপ তার সর্বময় সৌন্দর্য নিয়ে বছরের প্রতিটি দিনের মতোই আজও শামিল এই উৎসবে। আছে গ্লাডিওলাস…নাম না জানা অনেক ফুল।

কবি-সাহিত্যিকরা নারীকে তুলনা করেন প্রকৃতির এই অপার সৌন্দর্যের সাথে, ফুলের সাথে। নারীরাও আজ বাসন্তী হয়ে উঠেছে একেকজন। তবে মনে কয়জনের বসন্ত এসেছে আজ সত্যি করে? উপমা তার আলমারির ডালাটা খুলে দেখার চেষ্টা করলো, বাসন্তী অথবা নিদেনপক্ষে হলুদ রংয়ের কোন শাড়ি তার আছে কিনা! নেই, কোনদিন কেনা হয়নি।

উপমা নারীবাদী নয়, আবার অস্বীকারও করে না নারীবাদ। কিন্তু এটাও চায়, কেউ তাকে বিশেষ দিনগুলোতে একটা বাসন্তী শাড়ি দিয়ে বলুক, আজ এটা পরো। কারও জন্যে সে সত্যি সত্যিই সাজতে চেয়েছিল জীবনের বহু বছর। হয়নি। উদ্দাম বসন্তগুলো কোথায়, কোনদিক দিয়ে বেরিয়ে গেছে, জীবনের কলরবে হারিয়ে গেছে, উপমার জানা হয়নি। কষ্টে ভেঙে পড়তে পড়তে আবার সে শিরদাঁড়া সোজা করে উঠে দাঁড়িয়েছে।

একটা জিনিসই সে পারেনি, তাহলো নিজেকে খুশি রাখতে। এখানেই বন্ধুদের সাথে তার পার্থক্য। কম বকাঝকাও শুনতে হয় না তাকে। কিন্তু সে বোঝাতে পারে না, এটা একজন মানুষের অভাববোধই শুধু নয়, একটা অস্তিত্বের প্রশ্ন, ভালবাসাহীনতার প্রশ্ন, প্রতারণার শিকার হওয়ার প্রশ্ন। কেউ কখনও ভালবাসি বলেও তা অস্বীকার করার প্রশ্ন। আর এতোসব প্রশ্নের মাঝেই উপমা স্থির, নিশ্চল আজ। বহু বছর জীবনের রং থেকে সে নিজেকে গুটিয়ে রেখেছিল।

কিন্তু আজ? আলমারিটা খুলে বাসন্তী শাড়ি খুঁজতে গিয়ে মনে হলো, জীবন তো একটাই, এভাবেই শেষ করে দিতে সে আর রাজী নয়। শাড়ি থাকুক আর নাই থাকুক, মনে আজ বসন্ত ভর করেছে পুরোপুরি….তাই আর ঘরে বসে থাকা নয়। সবাইকে বসন্তের শুভেচ্ছা।

 

শেয়ার করুন:
Copy Protected by Chetan's WP-Copyprotect.