মঞ্চের কর্মসূচিতে পুলিশের লাঠিপেটা, কাল বিক্ষোভ

Gonojagoron attackedউইমেন চ্যাপ্টার: পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কসহ সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবিতে গণজাগরণ মঞ্চের ঢাকায় হাইকমিশন অভিমুখী দ্বিতীয় দিনের বিক্ষোভ কর্মসূচিতেও লাঠিপেটা করেছে পুলিশ। এতে মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকারসহ বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছেন। প্রাথমিকভাবে অন্তত ১০জনকে আটক করা হলেও পরে তাদের ছেড়ে দেয়া হয় বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে রাজধানীর গুলশান ২ নম্বরে এই ঘটনা ঘটে। এদিকে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার সহ গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীদের ওপর ন্যাক্কারজনক পুলিশী হামলার প্রতিবাদে আগামীকাল বিকাল ৩ টায় শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরসহ দেশব্যাপী সকল গণজাগরণ মঞ্চে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলের ডাক দেয়া হয়েছে। সন্ধ্যায় গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পাকিস্তানের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্নের ২০ ঘণ্টার আল্টিমেটাম শেষে বেলা ২টার পর  থেকে গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা মিছিল নিয়ে গুলশান ২ নম্বরে সমবেত হতে থাকে। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে গণজাগরণের কর্মীরা পাকিস্তান হাইকমিশনের সামনে যেতে চাইলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এ সময় তারা বাধা উপেক্ষা করে সামনে এগোতে  চাইলে পুলিশ তাদের লাঠিপেটা শুরু করে। এর এক পর্যায়ে গণজাগরণের কর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় এবং আশপাশের অলিগলিতে আশ্রয় নেয়। পুলিশ সেখানে হামলা চালিয়ে গণজাগরণ মঞ্চের কয়েকজন কর্মীকে আটক করে। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছেন রওশন আরা নীপা, মাহমুদুল হাসান মুন্সী ও অনন্য আজাদ। এ সময় গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার ও নিজেরা করি’র নির্বাহী পরিচালক খুশী কবিরকে গাড়িতে তুলে নেয় পুলিশ। পরে অবশ্য তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

মঞ্চের কর্মীরা গুলশান-২ নম্বরের তাহের টাওয়ারের নিচে অবস্থান নিলে বিকাল ৩টা ৫মিনিটে পুলিশ তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এতে ইমরান এবং মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদসহ (বীরপ্রতীক) কয়েকজন আহত হন। তাদের প্রথমে গুলশানের ল্যাব হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। মঞ্চের কর্মী-সমর্থকরা ওই হাসপাতালে যাওয়ার পথে পুলিশ আবারও লাঠিচার্জ করে। এসময় স্লোগান কন্যা শাম্মী হককে আটক করে পুলিশ। পরে ইমরানকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার বলেন, “পুলিশ বিনা উস্কানিতে আমাদের মিছিলে হামলা চালিয়ে অনেক কর্মীকে আহত করেছে। তাদের মধ্যে নারীকর্মীও রয়েছে। এটা ন্যাক্কারজনক।”

মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী কোনো মানুষ এভাবে হামলা করতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ইমরান বলেন, “যতোই হামলা হোক,  আমরা এখানে আছি। এখান থেকেই পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করে যাব। সরকার যতক্ষণ পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন না করবে, কিংবা পাকিস্তান আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা না চাইবে- ততোক্ষণ এই ‘অহিংস’ কর্মসূচি চলবে বলেও তিনি ঘোষণা দেন।

লাঠিপেটা সম্পর্কে পুলিশের বক্তব্য, “তাদের কর্মসূচি আইনশৃঙ্খলার অনুকূলে নয়। যেহেতু এটা কূটনীতিক এলাকা, তাই নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা যথাযথভাবে তাদের এ এলাকা থেকে সরিয়ে দিয়েছি।” গুলশান পুলিশের উপ কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবির বলেন, ভিয়েনা কনভেনশন অনুসারে কূটনীতিক এলাকায় মিছিল-মিটিং নিষেধ। এ কারণেই গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীদের সরিয়ে দেয়া হয়েছে।

তবে ঠিক কতোজনকে আটক করা হয়েছে, সে বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি তিনি।

 

শেয়ার করুন:
Copy Protected by Chetan's WP-Copyprotect.