শেষ শ্রদ্ধায় সমাহিত হলেন মাদিবা

Mandela7উইমেন চ্যাপ্টার: দক্ষিণ আফ্রিকার কিংবদন্তি নেতা নেলসন ম্যান্ডেলাকে তার গ্রামের বাড়ি কুনুতে সমাহিত করা হয়েছে। আত্মীয়স্বজন, আফ্রিকান নেতৃবৃন্দ ও রাজনৈতিক সমর্থকরা তাঁর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান। এরপরই রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাঁকে শুইয়ে দেয়া হয় পারিবারিক কবরস্থানে। প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা বলেছেন, দক্ষিণ আফ্রিকা নেলসন ম্যান্ডেলার আদর্শের প্রতি সম্মান রেখেই  কাজ করে যাবে। তার মরদেহ নিয়ে আসার পথে হাজারো মানুষ পথের দুধারে দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধা জানায়।

কুনুর সবচেয়ে কাছের বিমানবন্দর এমথাথায় অবতরণ করে ম্যান্ডেলার মরদেহ বহনকারী বিমান। এরপর তার কফিন নিয়ে যাত্রা করা হয় কুনুর উদ্দেশ্যে। বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে শবযাত্রার বহর রাস্তায় নামার সঙ্গে সঙ্গে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে ওঠেন হাজারো মানুষ।

গত ৫ ডিসেম্বর ৯৫ বছর বয়সে মারা যাওয়া ম্যান্ডেলাকে রোববার এই কুনুতেই সমাহিত করা হবে, যেখানে শৈশব কেটেছে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্টের।

সমাহিত করার আগে এখানেই হবে তার শেষকৃত্য অনুষ্ঠান। রাষ্ট্রীয় সম্মান জানানোর পাশাপাশি নিজ গোত্র খোসা আবা টেম্বুর রীতি অনুযায়ী তাকে শেষ বিদায় জানানো হবে।

এ সময় পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি জাতীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।  যুক্তরাজ্যের প্রিন্স চার্লস ও যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার কর্মী রেভারেন্ড জেসি জ্যাকসনের মতো বিদেশি অতিথিরাও থাকবেন শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে।

বর্ণবৈষম্য বিরোধী লড়াইয়ের অবিসংবাদিত এই নেতার মৃত্যুর পর গত সপ্তাহ ধরে তাকে শ্রদ্ধা জানায় দেশ-বিদেশের লাখো মানুষ। সর্বশেষ শনিবার কুনুর উদ্দেশ্যে যাত্রা করার আগে প্রিটোরিয়ার একটি বিমান ঘাঁটিতে তাঁকে শ্রদ্ধা জানায় ক্ষমতাসীন দল আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের নেতারা।

রাষ্ট্রীয় পতাকায় মোড়ানো কফিন ঘিরে দাঁড়িয়ে প্রার্থনা করেন তারা। অনুষ্ঠানে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা বলেন, “পিতা, তোমার পরযাত্রা শুভ হোক, তুমি তোমার দায়িত্ব পালন করেছ।”

সাদা-কালোর বৈষম্য ঘোচাতে ম্যান্ডেলার সংগ্রামী জীবন এবং তার ২৭ বছর কারাবাসের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে ম্যান্ডেলার স্ত্রী গ্রাসা ম্যাচেল ও সাবেক স্ত্রী উইনি মাদিকেজেলাও উপস্থিত ছিলেন। এর আগে প্রিটোরিয়ার ইউনিয়ন ভবনে ম্যান্ডেলাকে চিরবিদায় তৃতীয় দিন শুক্রবারও দেখা যায় মানুষের ঢল। সময় শেষ হয়ে আসতে থাকায় অনেকেই প্রাণপ্রিয় নেতাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে বাঁধ ভাঙা জোয়ারের মতো পুলিশের বেষ্টনী ভেঙে এগিয়ে যান কফিনের কাছে। প্রিটোরিয়ার শোগ্রাউন্ডসে পুলিশ মানুষের ঢল ঠেকাতে গেলে জনতা লোহার ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়ে। এ সময় ধাক্কাধাক্কিতে কেউ কেউ মাটিতেও পড়ে যায়। এই পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টার মধ্যেই ম্যান্ডেলাকে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়ে একের পর এক পার হয়ে যেতে থাকে শত শত মানুষ।

শেয়ার করুন:
Copy Protected by Chetan's WP-Copyprotect.