ক্ষরণ

বীথি চৌধুরী: ঘুম থেকে উঠেই সংবাদটা পেলাম।
চোখের সামনে দুলে উঠল একটা লাল স্কার্ফ।
স্কার্ফটা বাতাসে উড়িয়ে এক ছুটে মাঠের এক পাশ থেকে অন্য পাশ।
প্রায়শঃ পড়া না শিখে স্কুলে আসা অভ্যেসে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল।
ভূগল আর ইংরেজি কিছুতেই মাথায় ঢুকত না;
কিন্তু স্কুল স্পোর্টসে চ্যাম্পিয়ন হওয়া চাই-ই চাই আর
রুটিন করে প্রতিদিন কান ধরে বারান্দায় দাঁড়ানো চাই দুষ্টুমীর শাস্তি হিসেবে;
ক্লাসে বরক্ত করার জন্যে ক্যাপ্টেনের খাতায় যাদের ওঠে
তাদের শীর্ষে থাকা চাই-ই চাই।
কিন্তু আজকের সকালটা অন্য রকম।
কেননা সকালে উঠেই সংবাদটা পেলাম।
যখন পৌঁছুলাম, দেখলাম
একেবারে শান্ত।
অন্যরকম এক চেহারা।।
কালো কুচকানো ঠোঁটের ফাঁক দিয়ে
একটু উঁচু দাঁত দু’টো বেরিয়ে আছে।
কানের ছেঁড়া লতির ক্ষতে কামড়ে থাকা লাল পিঁপড়েটা সরালাম-
বন্ধ চোখের পাতা দু’টো একটু কি নড়ে উঠল!
না! মনের ভুল!
মুখে শরীরে কেউ যেন এক দোয়াত কালি ঢেলে দিয়েছে।
নীল কালি!
অপরাজিতার রঙ এর চেয়ে গাঢ় না হালকা!
মনে পড়ছে না!
চশমাপরা শুকনোমত এক সাংবাদিক
ক্লিক ক্লিক ছবি তুললো।
‘ভীড় ছাড়েন, সরে দাঁড়ান’ –
পুলিশ ভ্যান।।
চাদরে মুড়ে তোলা হল।
চশমাপরা সাংবাদিকের নাকে-মুখে বিন্দু বিন্দু ঘাম।
‘আচ্ছা আপনাদের কি ধারনা?
ব্যাপারটা কিভাবে ঘটল?’
বিরক্ত পুলিশ অফিসার।
‘দেখুন, বয়স যেহেতু সাত
পোস্টমর্টেমের আগে বলা যাবে না
মৃত্যু ধর্ষণের সময় রক্তক্ষরণে হয়েছে
নাকি ধর্ষণের পরে শ্বাসরোধ করে’।।

শেয়ার করুন: