উইমেন চ্যাপ্টার: সোমবার থেকে শুরু হতে যাওয়া জেএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ২১ লাখ শিক্ষার্থী নতুন করে ডাকা হরতালে বেশ বিপাকে পড়ে গেছে। সম্পূর্ণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে তাদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ।
যদিও বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট বলছে, পরীক্ষার্থীরা হরতালের আওতামুক্ত থাকবে। কিন্তু সহিংসতার অনিশ্চয়তা না কাটায় শংকামুক্ত হতে পারছেন না শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা। শিক্ষামন্ত্রীও বেশ ক্ষোভের সাথেই বলেছেন, “অমি খুবই ক্ষুব্ধ এবং উদ্বিগ্ন যে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নিয়ে এরকম অমানবিক বিবেক বর্জিত কার্যকলাপ হচ্ছে”।
এবছর জেএসসি এবং মাদ্রাসা পর্যায়ে জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট বা জেডিসি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২১ লাখ।
পরীক্ষার প্রথমদিন সোমবার ৪ নভেম্বর জেএসসিতে বাংলা প্রথম পত্র এবং ৬ নভেম্বর বুধবার বাংলা দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। আর জেডিসিতে ৪ নভেম্বর কুরআন মজীদ ও তাজবিদ এবং ৬ নভেম্বর আরবি প্রথম পত্রের পরীক্ষা রয়েছে। পরীক্ষাগুলো সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত হওয়ার কথা।
কিন্তু টানা তিনদিনের হরতালে এসব পরীক্ষাই অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বিবিসির সাথে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “তারা (বিরোধী দল) দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং শিক্ষা-বিরোধী।” হরতাল প্রত্যাহারের আহ্বান জানালেও এর বিকল্প কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন কিনা এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে অস্বীকৃতি জানান তিনি।
পরীক্ষা পিছিয়ে নেবেন কিনা এই প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, সমস্যা হচ্ছে জেএসসি এবং জেডিসি পরীক্ষা পিছিয়ে নিলে আসন্ন পঞ্চম শ্রেণীর ফাইনাল পরীক্ষাসূচির ওপর তার প্রভাব পড়বে।
আগামী ২০শে নভেম্বর থেকে অর্থাৎ জেএসসি পরীক্ষা শেষ হওয়ার সাথে সাথেই পঞ্চম শ্রেণীর সমাপনী পাবলিক পরীক্ষা শুরুর কথা। প্রায় ৩১ লাখ ছাত্র-ছাত্রী ঐ পরীক্ষায় অংশ নেবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বছর শেষে পরীক্ষার মৌসুমে সারা দেশে স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে চার কোটির মত ছেলে-মেয়ে হয় পরীক্ষা দিচ্ছে, নয় প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এ নিয়ে রোববার একটি সংবাদ সম্মেলন করার ইঙ্গিত দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। পরীক্ষা পেছানো না পেছানোর সিদ্ধান্ত তখন পরিষ্কার করা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে শুধু পরীক্ষার্থীরা নয়, হরতালের কারণে ব্যবসা বাণিজ্যও অনিশ্চয়তায় পড়েছে বলে অভিযোগ করছেন ব্যবসায়ীরা।
একটি রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক কারখানা ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর ইঞ্জিনিয়ার এমএম নজরুল ইসলাম বিবিসিকে বলছিলেন, হরতালের কারণে তার উৎপাদন খরচ যেমন বেড়ে যাচ্ছে, তেমনি ঠিক সময়ে পণ্য সরবরাহ নিয়েও পড়েছেন এক চরম অনিশ্চয়তায়।
“ক্রিসমাস এবং নিউ ইয়ারের আগে আমাদের অর্ডারের একটা চাপ থাকে। কিন্তু হরতালের মধ্যে পণ্যের কাঁচামাল আনা, উৎপাদন এবং তার শিপমেন্ট করা খুবই দুরূহ।” তিনি বলেন, শিপমেন্টের ডেডলাইন থাকলে পণ্য কার্গোতে না পাঠিয়ে আকাশপথে পাঠাতে হয় যেখানে কেজিপ্রতি তিন ডলার বাড়তি খরচ হয়।