
রাজনীতি করেছি, নিজের সুবিধে চেয়েছি, লোক ঠকিয়েছি? না, তাও নয়। তবে কী করেছি যে যার শাস্তি চিরকালের নির্বাসন? কী করেছি যে হাসিনা খালেদা তত্ত্বাবধায়ক– সব সরকারের বেলায় আমাকে আমার নিজের দেশে ঢুকতে দেওয়া হবে না এই একই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়? কোনও একটি বিষয়ে, সব রাজনীতিবিদদের কোনও সিদ্ধান্তে কি এমন চমৎকার মিল পাওয়া যায়? কোনও একটি মানুষের বিরুদ্ধে চরম অন্যায় করে কি কোনও সরকার এমন পার পেয়ে যায়? কোনও একটি মানুষের ওপর নির্যাতন হচ্ছে দেখেও দেশের সব মানুষ কি এমন মুখ বুজে থাকে, বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ? এমন অদ্ভুত কাণ্ড সম্ভবত ইতিহাসে নেই।
কোনও লেখকের এত বই কোনও দেশের কোনও সরকার নিষিদ্ধ করেনি। লেখকদের নির্বাসনে পাঠানো হয়, তবে সরকার বদল হলে লেখকেরা আবার ফিরে যায় নিজের দেশে। আমি নিজের দেশে ফিরতে পারি না। কারণ আমার দেশে সরকার বদল হয়, সরকারের বদমাইশি বদল হয়না। আমার দেশের সব সরকার মনে করে, দেশটা তাদের বাপের সম্পত্তি। সুতরাং তাদের বাপের সম্পত্তিতে পা দেওয়ার কোনও অধিকার আমার নেই।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী বিদেশে এলে তাঁকে অনেকেই প্রশ্ন করেন, ‘তসলিমাকে কেন দেশে যেতে দিচ্ছেন না?’ সঙ্গে সঙ্গে তিনি উত্তর দেন, ‘ওর তো দেশে যেতে কোনও বাধা নেই, ও যাচ্ছে না কেন?’ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানেন তিনি মিথ্যে বলছেন। তিনি নিশ্চয়ই ভালো করেই জানেন যে বাংলাদেশের সমস্ত দূতাবাসকে সরকার থেকে কড়া নির্দেশ দেওয়া আছে যে আমার বাংলাদেশ-পাসপোর্ট যেন নবায়ন করা না হয় এবং আমার ইওরোপের পাসপোর্টে যেন বাংলাদেশের ভিসা দেওয়া না হয়। বাংলাদেশের দূতাবাসগুলো থেকে দেশের মন্ত্রণালয়ে আমার পাসপোর্ট নবায়ন করার ভুরি ভুরি দরখাস্ত পাঠানো হয়েছে প্রায় দু’যুগ যাবৎ, উত্তরে জুটেছে না অথবা নৈঃশব্দ। প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং যাবতীয় সকল মন্ত্রীই জানেন ভ্যালিড পাসপোর্ট বা ভিসা ছাড়া দেশের পথে রওনা হওয়া কোনও জাহাজে বা উড়োজাহাজে উঠতে আমি পারবো না, দেশের মাটিতে পা রাখা তো দূরের কথা।
মিথ্যে বলার কী প্রয়োজন! সরাসরি বলেই দিতে পারেন, ‘আমরা ওকে দেশে ঢুকতে দিচ্ছি না, দেবোও না। কারণ আমরা যা খুশি তাই করার লোক। এ নিয়ে বিরোধী দল কোনও প্রশ্ন করবে না, দেশের জনগণও রা-শব্দ করবে না, তবে আর ওর নাগরিক অধিকার নিয়ে আমাদের মাথা ব্যাথা কেন হবে!’
আমি চিকিৎসাবিজ্ঞান পড়েছি। ডাক্তারি করেছি দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোয়। ছোটবেলা থেকে লেখালেখির অভ্যেস, তাই ডাক্তারির পাশাপাশি ওটি চালিয়ে গেছি। মানুষের ওপর মানুষের নির্যাতন দেখে কষ্ট পেতাম, মানুষের দুঃখ দুর্দশা ঘোচাতে চাইতাম; লিখতাম– যেন সমাজ থেকে কুসংস্কার আর অন্ধত্ব দূর হয়, মানুষ যেন বিজ্ঞানমনস্ক হয়, আলোকিত হয়, যেন কারোর মনে হিংসে, ঘৃণা, ভয় আর না থাকে, যেন মানুষ মানুষকে সম্মান করে, শ্রদ্ধা করে, ভালোবাসে। লিখেছি, বই প্রচণ্ড জনপ্রিয়ও হয়েছে, কিন্তু জনপ্রিয় বইগুলোই সরকার নিষিদ্ধ করতে শুরু করলো। এক সরকারের পদাঙ্ক অনুসরণ করে অন্য সরকারও বই নিষিদ্ধ করেছে।
নিষেধাজ্ঞা ব্যাপারটি বড্ড সংক্রামক। একবার নিষিদ্ধ করে যদি দেখা যায় কোনও প্রতিবাদ হচ্ছে না, তখন নিষিদ্ধ করাটা নেশার মতো হয়ে দাঁড়ায়। আমার বইগুলো যেন সরকারের খেলনার মতো। খেলনা নিয়ে যা খুশি করেছে, ভেঙেছে, ছুঁড়েছে, মাস্তি করেছে। খালেদা সরকার ‘লজ্জা’ নিষিদ্ধ করেছে, লজ্জা ছিল সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে একটি মানবিক দলিল। ‘আমার মেয়েবেলা’ নামের বইটি, যেটি হাসিনা সরকার নিষিদ্ধ করেছে, সেটি বাংলা সাহিত্যের বড় পুরস্কার ‘আনন্দ পুরস্কার’ ছাড়াও বেশ কিছু বিদেশি পুরস্কার এবং বিস্তর প্রশংসা পেয়েছে। তারপর একে একে আমার আত্মজীবনীর বিভিন্ন খণ্ড ‘উতল হাওয়া, ‘ক’, ‘সেইসব অন্ধকার’ নিষিদ্ধ হয়েছে। কেউ আপত্তি করেনি বই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে। নাৎসিরা জার্মানীতে বই পুড়িয়েছিল। সেই বই পোড়ানোর দিনটি এখনও ইতিহাসের কালো একটি দিন। একের পর এক আমার বই নিষিদ্ধ করে বাংলাদেশ সরকার কি সেই বীভৎস নাৎসিদের মতোই আচরণ করেনি! মুশকিল হচ্ছে বেশির ভাগ সরকারই সাহিত্যের কিছু জানে না, মত প্রকাশের স্বাধীনতা সম্পর্কেও তাদের কোনও জ্ঞান নেই। অথবা আছে জ্ঞান, কিন্তু পরোয়া করে না। জনগণের সেবক গদিতে বসার সুযোগ পেলে শাসক বনে যায়, শোষক বনতেও খুব একটা সময় নেয় না।
পাকিস্তানের মেয়ে মালালা ইউসুফজাই সেদিন ইউরোপীয় ইউনিয়নের সবচেয়ে বড় মানবাধিকার পুরস্কার (শাখারভ) পেলো। মালালা সাহসী এবং বুদ্ধিমতি একটি মেয়ে। ওর পুরস্কার পাওয়ায় আমি বেশ খুশি। বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমও মালালার পুরস্কার পাওয়ায় এত খুশি যে খবরটার ব্যাপক প্রচার করেছে। মালালা যে শাখারভ পুরস্কারটি এ বছর পেয়েছে, সেই পুরস্কারটিই আমি পেয়েছিলাম ১৯৯৪ সালে। গত কুড়ি বছরে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম কিন্তু একটি অক্ষরও খরচ করেনি নিজের দেশের মেয়ের পুরস্কার নিয়ে।
ফরাসী সরকারের দেওয়া মানবাধিকার পুরস্কার বা সিমোন দ্য বুভোয়ার পুরস্কার, ইউনেস্কো পুরস্কার, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডক্টরেট – আমার কোনও সম্মান বা পুরস্কার পাওয়ার দিকে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ফিরে তাকায়নি। সবচেয়ে হাস্যকর ঘটনা ঘটায় বাংলাদেশ দূতাবাসগুলো। আমন্ত্রিত হওয়া সত্ত্বেও আজ অবধি কোনও রাষ্ট্রদুত উপস্থিত থাকেননি আমাকে সম্মানিত করার কোনও অনুষ্ঠানে। ইউরোপ আমেরিকা কাউকে বড় কোনও সম্মান দিলে তার দেশের রাষ্ট্রদূতকে আমন্ত্রণ জানায় সম্মান-বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য। এই সেদিন বেলজিয়ামের ‘রয়্যাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্স,আর্টস এণ্ড লিটারেচার’ থেকেও যখন অ্যাকাডেমি পুরস্কার পেয়েছি, অ্যাকাডেমির প্রেসিডেন্ট যথারীতি আমার দেশের রাষ্ট্রদূতকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। যথারীতি রাষ্ট্রদূত অনুপস্থিত। প্রেসিডেণ্ট সম্ভবত অনুমান করেছেন রাষ্ট্রদূত লোকটা ছোটলোক। সবচেয়ে বেশি ছোটলোকি করেছিলেন কুড়ি বছর আগে বেলজিয়ামে যে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ছিলেন, তিনি, বিশাল একটা চিঠি লিখেছিলেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রেসিডেণ্টের কাছে, কাকুতি মিনতি করেছিলেন আমাকে যেন ‘শাখারভ’ পুরস্কারটি কিছুতেই না দেওয়া হয়। প্র্রেসিডেন্ট আমাকে রাষ্ট্রদূতের চিঠিটি পড়তে দিয়েছিলেন, আর ফেরত নেননি। পরদিন ঘটা করে আমাকে শাখারভ পুরস্কার দিয়েছিলেন।
প্রতিবারই যখন সম্মানিত হয়েছি, লজ্জা হয়েছে দেশটির জন্য। আজও হয়। আমার বাবা যখন মৃত্যুশয্যায়, প্রধানমন্ত্রী হাসিনাকে আমি অনেক অনুরোধ করেছিলাম আমাকে যেন অন্তত দু’দিনের জন্য হলেও দেশে যেতে দেন তিনি। আমার বাবা কী যে ব্যাকুল ছিলেন আমাকে একটিবার দেখার জন্য। দিনের পর দিন কেঁদেছেন। হাসিনা আমাকে দেননি দেশে যেতে। হয় তিনি নিজের বাবা ছাড়া আর কারোর বাবাকে মর্যাদা দেন না, নয় তিনি নিজের বাবাকে সত্যিকার ভালোবাসেন না, বাবা নিয়ে রাজনীতি করতে ভালোবাসেন। নিজের বাবাকে ভালবাসলে কেউ এভাবে অন্যের বাবাকে বঞ্চিত করেন না, বিশেষ করে যখন কোনও বাবা তাঁর কন্যাকে একবার শেষবারের মতো দেখতে চান। কন্যার হাত একবার শেষবারের মতো স্পর্শ করার জন্য মৃত্যুশয্যায় যখন কাঁদেন, তাঁকে কোনও শত্রুও বলে না, না।
জীবনে মৌলবাদীদের অত্যাচার অনেক সয়েছি, ওদের জারি করা ফতোয়া, মামলা, ওদের হরতাল, মিছিল। কিছুই আমাকে এত দুঃখ দেয়নি যত দিয়েছে, আমার অসুস্থ বাবার কাছে আমাকে একটিবারের জন্য যেতে না দেওয়ার কুৎসিত সরকারি সিদ্ধান্ত। আমাকে মৌলবাদীরা দেশ থেকে তাড়ায়নি, তাড়িয়েছে সরকার। বাংলাদেশের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের পার্থক্য প্রায় নেই বললেই চলে, বাংলাদেশ থেকে যেভাবে তাড়ানো হয়েছিল, পশ্চিমবঙ্গ থেকেও ঠিক সেভাবেই তাড়ানো হয়েছে, ওই একই কারণে, ধর্মীয় মৌলবাদীদের মুখে হাসি ফোটাতে।
কিছু দূরদৃষ্টিহীন স্বার্থপর রাজনীতিকের কারণে আজ আমি নির্বাসিত। একজন আপাদমস্তক বাঙালি লেখকের আজ বাংলায় ঠাঁই নেই। বাংলা ভাষা থেকে সহস্র মাইল দূরে বসে বাংলার মানুষের জন্য আমাকে বাংলা ভাষায় বই লিখতে হচ্ছে। কী জঘন্য, কী নির্মম, কী ভয়ংকর এই শাস্তি! কী অপরাধ আমার? নিজের মত প্রকাশ করেছিলাম বলে, যেহেতু আমার মত কিছু মূর্খ, ধর্মান্ধ, আর নারীবিদ্বেষী লোকের মতের চেয়ে ভিন্ন?
তারপরও ভালোবাসার মরণ হয় না। মা নেই, বাবা নেই। যাঁরা ভালোবাসতেন, তাঁরা কেউ নেই। শামসুর রাহমান নেই, কে এম সোবহান, কবীর চৌধুরী, রশীদ করীম, ওয়াহিদুল হক নেই, দেশটা খাঁ খাঁ করছে। তারপরও দেশের জন্য, দেশে ফেলে আসা সেই নদীটা, সেই ইস্কুল ঘরটা, শৈশবের সেই উঠোনটা, খেলার সেই মাঠটা, মা’র লাগানো সেই কামিনী গাছটা, সেই নারকেল, সেই কামরাঙা, সেই পেয়ারা গাছটার জন্য মন কেমন করে। কেউ নেই, কিছু নেই, সব বদলে গেছে, দেশ আর সেই দেশ নেই, কিন্তু তারপরও দেশ শব্দটা উচ্চারণ করার সঙ্গে সঙ্গে বুকের ভেতর একটা কষ্ট টের পাই। এই কষ্টটার আমি কোনও অনুবাদ জানি না।
অনেকে জিজ্ঞেস করে, ইউরোপের নাগরিক হয়েও, আমেরিকার স্থায়ী বাসিন্দা হয়েও কেন আমি দিল্লিতে বা ভারতে থাকি। আমি বলি, ‘এখানে থাকি, এখানকার গাছগুলোর নাম জানি বলে’। যারা প্রশ্ন করে, জানি না তারা ঠিক বুঝতে পারে কি না কী বলছি। এই শাল, সেগুন গাছ, এই কৃষ্ণচূড়া, এই শিমুল, এই কাঁঠালিচাপা আমি শৈশব থেকে চিনি। এই গাছগুলো যখন দেখি, মনে হয় বুঝি দেশে আছি। হিন্দি আমার ভাষা নয়, কিন্তু এই ভাষাটির ভেতর সংস্কৃত শব্দগুলো বাংলার মতো শোনায়, সে কারণেই কি ইউরোপ- আমেরিকায় না থেকে এখানে থাকি! আর এই যে কদিন পর পরই যমুনার পাড়ে যাচ্ছি, সে কেন? কী আছে ওই নদীটায়! একদিন পাড়ে দাঁড়িয়েই এক চেনা ভদ্রলোককে বলেছিলাম, ‘জানো, আমার দেশেও একটা নদী আছে, নদীটার নাম যমুনা’। ভদ্রলোক বললেন, ‘কিন্তু ওই নদী আর এই নদী তো এক নয়’। বললাম, ‘তাতে কী! নাম তো এক’।
সেদিন দেখলাম দুটো পায়রা উড়ে এসে আমার জানালার ওপারে বসলো, আমার মা যেরকম পায়রা পুষতো, ঠিক সেরকম দুটো পায়রা। তাকিয়ে থাকতে থাকতে চোখে জল চলে এসেছিল। সন্ধ্যের রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে মাঝে মাঝে থমকে দাঁড়াই। কৈশোরে বেজায় ভালোবাসতাম সেই বেলি ফুলের ঘ্রাণ! ঘ্রাণটা যেদিক থেকে আসছে সেদিকে হেঁটে যাই, ঝাড় জঙ্গল যা কিছু পড়ুক সামনে, হেঁটে যাই। আর, এদিকে আমার বারান্দার টবে পুঁতেছি হাসনাহেনার চারা। আমাদের ময়মনসিংহের বাড়িতে ছিল হাসনাহেনা। ওর সুঘ্রাণ আমাদের ঘুম পাড়াতো। জানিনা, কী এর নাম! এই বার বার পেছন ফিরে তাকানোর! কী নাম এর!
এই কুড়ি বছরে পৃথিবীর পথে অনেক হেঁটেছি। মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি অনেক। যারা ভালোবাসে, যারা আমার মত প্রকাশের অধিকারের পক্ষে দাঁড়ায়, আমার নীতি আর আদর্শে বিশ্বাস যাদের, যারা বৈষম্যের বিরুদ্ধে আমার মতোই সরব, তাদের আমার ‘দেশ’ বলে মনে হয়। তারা পাশে থাকলে আমি নিরাপদ বোধ করি। দেশ মানে আমি ভালোবাসা বুঝি, নিরাপত্তা বুঝি। যে দেশ ঘৃণা করে, ছুড়ে ফেলে, ভয় দেখায়, সে দেশকে দেশ বলে কেন মনে হবে! জন্ম দিলেই তো মা হওয়া যায় না, মা হতে গেলে ভালোবাসতে হয় সন্তানকে। দেশ তো কেবল মাটি, নদী, গাছপালা, আর বাড়িঘর নয়। দেশ এসবের চেয়েও আরও বড়, অনেক বড়।
বেঁচে থাকতে সম্ভবত আমার দেশটিকে খুব উদার বা মানবিক হতে দেখবো না, কিন্তু অপেক্ষা করবো এমন দিনের, যেদিন দেশটিকে নিয়ে গর্ব করতে পারি। অপেক্ষা করবো জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত।
লেখক: উপমহাদেশের অন্যতম আপোসহীন নারীবাদী লেখিকা।