উইমেন চ্যাপ্টার: বঙ্গোপসাগরের পূর্ব উপকূলে ভয়াবহ গতিতে ধেয়ে আসছে ঝড় পাইলিন। সন্ধ্যা নাগাদ আঘাত হানার কথা রয়েছে ভারতের উড়িষ্যা এবং অন্ধ্র প্রদেশে। ওইসব এলাকা থেকে চার লাখেরও বেশি মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা পাইলিনকে ‘ভয়াবহ’ হিসেবে চিহ্নিত করে বলেছেন, এটি ২২০ কিলোমিটার বেগে এগিয়ে আসছে। তবে বাতাসের গতিবেগ আরও বেড়ে যেতে পারে বলেও আশংকা করছেন তারা। অন্যদিকে লন্ডনের আবহাওয়া দপ্তরও এই ঝড়কে পাঁচ নম্বর ক্যাটাগরি হিসেবে চিহ্নিত করে এর ভয়াবহতার কথা জানান দিচ্ছে।
ভারতের উড়িষ্যা এবং অন্ধ্রপ্রদেশে পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে সেনাবাহিনীকে সতর্ক রাখা হয়েছে। ত্রাণশিবির খুলে খাবার, পানীয় এবং ওষুধপত্র জড়ো করা হয়েছে। ১৯৯৯ সালে ভয়াবহ ঝড়ে উড়িষ্যায় নিহত হয়েছিল ১০ হাজারেরও বেশি লোক। বিবিসির এক সংবাদদাতা কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে বলছেন, আগের তুলনায় অনেক ভাল প্রস্তুতি এবার ঝড়কে মোকাবিলায়।
উপকূলীয় পর্যটন শহর গোপালপুর এবং বেরহামপুরে প্রথম আঘাত হানার কথা পাইলিনের। সেখানে মুষলধারে বৃষ্টি আর শক্তিশালী ঝড়ো হাওয়া বইছে বলে জানাচ্ছে গণমাধ্যমগুলো। রাস্তাঘাটগুলো খালি হয়ে গেছে, সরকার অধিকাংশ লোকজনকেই সরিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে। তবে কিছু মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে যেতে আপত্তির কথাও জানিয়েছেন। দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং এমনকি পেট্রোল স্টেশনগুলোও বন্ধ।
এদিকে হাওয়াইতে মার্কিন নৌবাহিনীর জয়েন্ট টাইফুর ওয়ার্নিং সেন্টার বলছে, বাতাসের গতিবেগ আরও বেড়ে যেতে পারে। এমনকি ২৬৯ কিলোমিটার হতে পারে ঘন্টায়। উড়িষ্যার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী সূর্য নারায়ণ পাত্র বলেছেন, উপকূলীয় এলাকায় কাউকে মাটি বা খড়ের ঘরে থাকতে দেওয়া হবে না। আক্রান্ত এলাকায় দ্রুত ত্রাণ পৌঁছাতে হেলিকপ্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে, সেইসাথে খাবারের প্যাকেজও তৈরি করা হয়েছে।
পাইলিন যেখানে আঘাত করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, সেই গোপালপুর এবং পুরীতে মহাবিপদ সংকেত ১০ জারি করা হয়েছে। এছাড়া পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে নয় নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে।
কলকাতা থেকে বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতে শনিবার সকাল নাগাদ আবহাওয়া পরিস্থিতির বেশ অবনতি হয়েছে। ওইসব এলাকায় এখন ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। আকাশ প্রায় অন্ধকার হয়ে এসেছে। বিদ্যুৎ ব্যবস্থা একেবারেই ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশের আবহাওয়া বিভাগ বলছে, ঘূর্ণিঝড় পাইলিনের প্রভাব পড়তে পারে বাংলাদেশের উপকূলীয় ১৫টি জেলাতেও। এসব এলাকার মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্র বন্দরে দূরবর্তী সতর্ক সংকেত ২ জারি রেখেছে দেশটির আবহাওয়া বিভাগ।