উইমেন চ্যাপ্টার: খুব দ্রুতই তারা গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিল, ঘন্টায় ১০০ কিলোমিটার বেগে, তারপরও শেষরক্ষা হয়নি। স্ত্রীর প্রসবব্যথা এমনই জোরালো হলো যে, হাসপাতাল পর্যন্ত পৌঁছানোই গেল না। তখন স্বামীটির সামনে আর কোন পথই খোলা থাকলো না নিজে থেকেই সন্তান জন্মে সহায়তা করা ছাড়া। গত বৃহস্পতিবার মিসৌরির গ্রিনফিল্ডে ঘটে এ ঘটনা।
৩৬ বছর বয়সী লিন্ডা মরিসের ব্যথা শুরু হয়।
এর আগের দিন তিনি ফলস ব্যথায় পড়েছিলেন, তাই আজ আর তেমন গা করেননি বিষয়টিতে। কিন্তু রাতের বেলায় ব্যথাটা জটিল আকার নেয়। লিন্ডার স্বামী হেইথ মরিস বলছিলেন, তারা জল না ভাঙা পর্যন্ত অপেক্ষা করে দেখতে চাইছিলেন। রাতে দেড়টার দিকে লিন্ডার জল ভাঙে। তখন তারা হেইথের মাকে ডেকে নিয়ে আসেন অপর ১৫, ১২ আর ২ বছরের তিন সন্তানের দেখভালের জন্য, আর নিজেরা ব্যাগপত্তর গুছিয়ে নিয়ে রওনা হন স্প্রিংফিল্ডের কক্স সাউথ হাসপাতালের উদ্দেশ্যে। দ্রুত গাড়ি চালাচ্ছিলেন হেইথ, কিন্তু হাসপাতালের খুব কাছে এসেই বাচ্চাটি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে পৃথিবীর আলো-বাতাস দেখার। কী আর করা!
হেইথ জানান, লিন্ডা নিজেই তখন জোরে জোরে পুশ করা শুরু করেন, আমি শুধু তাকে সহায়তা করেছি। লিন্ডার ব্যথা এতোটাই ছিল যে, ভয়ের সময়ও পাইনি, আর ৯১১ এ কল করার সময় তো আরও পাইনি।
হেইথ বলে চলেন, বাচ্চাটির মাথা বের হওয়া শুরু হলে তিনি নিজের শার্ট খুলে হাত পেতে তৈরি হয়ে পড়েন শিশুটিকে ধরার জন্য। এভাবেই জন্ম হয় ছয় পাউন্ড আট আউন্স ওজনের একটি শিশুর, যার নাম রাখা হয় নানা-দাদার নামানুসারে-স্টিভেন মনরো মরিস সেকেন্ড।
হেইথ বলেন, ‘আমি তাকে আমার শার্ট দিয়ে জড়িয়ে নেই এবং স্ত্রীর হাতে দেই’। এরপর তিনি ৯১১ এ কল করেন, অপারেটর তখন তাকে উপদেশ দেন বাচ্চার নাড়িটা কিছু একটা দিয়ে বেঁধে দিতে। গাড়িতে ছিল অন্য বাচ্চাদের এমপি থ্রি প্লেয়ার, অগত্যা ইয়ারফোনটা ছিঁড়ে ফেলে ওটা দিয়েই নাড়ি বাঁধা হয়। তিনি বলেন, এটা ছাড়া আমার কাছে বিকল্প কিছু ছিলও না। কল করার পাঁচ মিনিটের মধ্যেই অ্যাম্বুলেন্স চলে আসে। ডাক্তারা এ অবস্থা দেখে বিস্মিত যেমন হন, তেমনি খুশিও হয়েছেন হেইথের প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব দেখে। এমনকি তাকে নাকি ডাক্তারা জিজ্ঞাসাও করেছেন, হাসপাতালে চাকরি করতে চান কিনা!
হেইথ তখন শার্ট ছাড়া শীতে কাঁপছিলেন, ব্যাগে তন্ন তন্ন করে খুঁজে শার্ট বের করলেন। তখন লিন্ডার চোখ পড়লো শার্টের ওপর, বললেন, দেখো, তোমার শার্ট কি বলছে? শার্টে লেখা, ‘ড্যাড রকস’। হেইথ বলেন, আমারও মনে হলো, এটাই যায় আমার সাথে’।